সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামে অবস্থিত যশোরেশ্বরী কালী মন্দির হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। ‘যশোরেশ্বরী’ শব্দের অর্থ—যশোরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। প্রাচীন কিংবদন্তি অনুসারে, সতী দেবীর দেহাংশ বিভিন্ন স্থানে পতিত হওয়ার পর যেসব স্থান গঠিত হয়, সেগুলোকে ‘শক্তিপীঠ’ বলা হয়। যশোরেশ্বরী কালী মন্দির সেই শক্তিপীঠগুলোর একটি, যেখানে বলা হয় সতীর পাম বা তালু পড়েছিল।
প্রচলিত ইতিহাস মতে, আনারি নামে এক ব্রাহ্মণ এই মন্দির নির্মাণ করেন এবং মন্দিরে ১০০টি দরজা সংযুক্ত করেছিলেন। যদিও মন্দিরের প্রকৃত নির্মাণকাল নির্ধারণ করা যায়নি, তবে ধারণা করা হয় এটি বহু প্রাচীন। পরবর্তীতে লক্ষ্মণ সেন এবং মহারাজা প্রতাপাদিত্য মন্দিরের সংস্কার এবং পুনর্নির্মাণে অবদান রাখেন। লক্ষ্মণ সেন ত্রয়োদশ শতকে মন্দিরের পাশে একটি নাটমন্দির নির্মাণ করেন এবং প্রতাপাদিত্য প্রধান মন্দিরের বর্তমান কাঠামোটি তৈরি করেন।
কিভাবে যাওয়া যাবে
ঢাকার গাবতলী, নবীনগর, শ্যামলী, কল্যাণপুর এবং সাভার থেকে পদ্মা সেতু হয়ে সাতক্ষীরা অভিমুখে নিয়মিত এসি ও নন-এসি বাস চলাচল করে। জনপ্রিয় পরিবহনগুলোর মধ্যে রয়েছে—এসপি গোল্ডেন লাইন, এ কে ট্রাভেলস, গ্রীন লাইন, মামুন এন্টারপ্রাইজ, ঈগল পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, সৌদিয়া পরিবহন, সাতক্ষীরা এক্সপ্রেস এবং শ্যামলী পরিবহন। ভাড়ার পরিমাণ সাধারণত ৬৫০ থেকে ১৩০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। সাতক্ষীরা পৌঁছে স্থানীয় যানবাহনে করে সহজেই শ্যামনগরের ঈশ্বরীপুর গ্রামে যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন
সাতক্ষীরায় পর্যটকদের থাকার জন্য বেশ কিছু মানসম্মত হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল—হোটেল সংগ্রাম, হোটেল সম্রাট, হোটেল সীমান্ত, মোজাফ্ফর গার্ডেন, হোটেল মোহনা ও হোটেল উত্তরা।
কোথায় খাবেন
সাতক্ষীরা তার বিশেষ কিছু খাবারের জন্য বেশ পরিচিত। এখানকার প্রসিদ্ধ ফল আম, কুল, ওল এবং নদী ও সুন্দরবনের মাছের স্বাদ অতুলনীয়। এছাড়াও সাতক্ষীরা ঘোষ ডেইরীর তৈরি সন্দেশ একবার হলেও চেখে দেখা উচিত। তাজা মধুর জন্যও সাতক্ষীরা বিখ্যাত, বিশেষ করে সুন্দরবনের খাঁটি মধু।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!