দারাসবাড়ি মসজিদ

দারাসবাড়ি মসজিদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার অমপুর এলাকায় অবস্থিত। স্থানীয়দের কাছে এটি "দারাসবাড়ি" নামেই বেশি পরিচিত। ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, ১৪৯৭ সালে বাংলার সুলতান শামসুদ্দিন ইউসুফ শাহ-এর শাসনামলে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। প্রাথমিকভাবে এর নাম ছিল "ফিরোজপুর মসজিদ", তবে ১৫০৪ সালে দারাসবাড়ি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর এটি "দারাসবাড়ি মসজিদ" নামে পরিচিত হয়ে ওঠে।

এই মসজিদটি টেরাকোটা ইট দিয়ে তৈরি, এবং এর স্থাপত্যে ভারতের চামচিকা মসজিদের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। মসজিদের অভ্যন্তর ভাগ দুটি অংশে বিভক্ত, এবং এর প্রধান গম্বুজটি বেশ আকর্ষণীয়। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৯৯ ফুট ৫ ইঞ্চি, প্রস্থ ৩৪ ফুট ৯ ইঞ্চি, এবং পূর্ব দিকে ১০ ফুট ৭ ইঞ্চি লম্বা একটি বারান্দা রয়েছে। এখানে মোট ৯টি কারুকার্যময় মেহরাব রয়েছে। মসজিদের উত্তর পাশে প্রায় ৬০ বিঘা আয়তনের একটি বিশাল দিঘী রয়েছে।

দারাসবাড়ি মসজিদ থেকে পাওয়া "তোগরা" অক্ষরে খোদাই করা ইউসুফি শাহী শিলালিপি বর্তমানে কলকাতা জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।

কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ

ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরাসরি বাসে যাওয়া যায় বা রাজশাহী হয়ে যাওয়া যায়।

  • বাস: গ্রীনলাইন, হানিফ, শ্যামলী, মডার্ন পরিবহনের বাসে সরাসরি চাঁপাইনবাবগঞ্জ বা রাজশাহী হয়ে যেতে পারবেন।
  • ট্রেন: ঢাকা থেকে রাজশাহী পর্যন্ত সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, পদ্মা এক্সপ্রেস, ধূমকেতু এক্সপ্রেস ও বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে।
  • বিমান: ঢাকা থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে রাজশাহী পৌঁছানো যায়।

রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ

রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ লোকাল বাসে মাত্র ৭০ টাকা ভাড়ায় পৌঁছানো যায়। এরপর কানসাট পর্যন্ত যেতে হবে, যেখানে লোকাল বাস বা সিএনজি সহজেই পাওয়া যায়। কানসাট থেকে মাত্র ১০-১৫ টাকা ভাড়ায় অটোরিকশায় দারাসবাড়ি মসজিদে পৌঁছানো সম্ভব।

কোথায় থাকবেন?

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে থাকার জন্য বেশ কিছু হোটেল রয়েছে। কিছু উল্লেখযোগ্য হোটেল হলো:

  • হোটেল রোজ: ☎ 01761-855471
  • লাল বোর্ডিং: ☎ 01718-279841
  • হোটেল আল নাহিদ: ☎ 01713-376902
  • হোটেল স্বপ্নপুরী: ☎ 01711-416041
  • নবাবগঞ্জ বোর্ডিং: ☎ 01715-167646
  • হোটেল রংধনু: ☎ 01712-339687

কোথায় খাবেন?

দারাসবাড়ি মসজিদের আশপাশে খাবারের ভালো ব্যবস্থা নেই। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বিভিন্ন মানের রেস্টুরেন্টে খাওয়ার সুযোগ রয়েছে। শিবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী "আদি চমচম" অবশ্যই চেখে দেখার মতো একটি খাবার।

শেষ কথা

দারাসবাড়ি মসজিদ বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহাসিক নিদর্শন, যা সুলতানি আমলের স্থাপত্যরীতির এক অনন্য উদাহরণ। ইতিহাস ও স্থাপত্যে আগ্রহী ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য এটি একটি অবশ্যই ঘুরে দেখার স্থান।

দারাসবাড়ি মসজিদ এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
257.06 কিমি
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে
27.66 কিমি
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
খনিয়াদিঘি মসজিদ
শাহ্‌ নেয়ামত উল্লাহর মাজার
তোহাখানা
ছোট সোনা মসজিদ
কানসাট আম বাজার
রহনপুর নওদা বুরুজ
বাবুডাইং
আলপনা গ্রাম টিকইল
সাফিনা পার্ক ও রিসোর্ট
বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের সমাধি

মন্তব্য

এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন