গজনী অবকাশ কেন্দ্র

গজনী অবকাশ কেন্দ্র শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলায় গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। প্রকৃতির স্নিগ্ধতা আর শান্তির জন্য এটি প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে জনপ্রিয়। এখানে সারি সারি গজারী, শাল, এবং সেগুন গাছের মায়াময় পরিবেশ দর্শনার্থীদের মন ছুঁয়ে যায়। শীতকালে গারো পাহাড়ের অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করতে ভ্রমণপিপাসুরা এখানে ভিড় করেন। পাহাড়ি ঝর্ণা, লেক, টিলা এবং সবুজ বন এখানকার পরিবেশকে করেছে আরও আকর্ষণীয়।

আকর্ষণীয় স্থানসমূহ

গজনীতে পাহাড়ি ঝর্ণার জল প্রবাহ আটকে কৃত্রিম লেক তৈরি করা হয়েছে। লেকের মাঝখানে কৃত্রিম পাহাড় ও লেক ভিউ পেন্টাগন স্থাপন করা হয়েছে, যা দোদুল্যমান সেতু দিয়ে সংযুক্ত। গারো পাহাড়ের চূড়ায় ৬ কক্ষ বিশিষ্ট আধুনিক রেস্ট হাউজ রয়েছে। পাহাড় থেকে নিচে নামার জন্য রয়েছে আঁকাবাঁকা পদ্মাসিঁড়ি। এছাড়াও এখানে রয়েছে পর্যাপ্ত পার্কিং সুবিধা, খেলার মাঠ, এবং পিকনিকের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

দর্শনীয় স্থান

গজনী অবকাশ কেন্দ্রে রয়েছে একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে পাহাড়ি প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। এছাড়াও আছে মিনি চিড়িয়াখানা, ক্যাকটাস বাগান, শিশু পার্ক, রংধনু ব্রীজ, ক্রিন্সেন্ট লেক, কৃত্রিম ঝর্ণা, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ, কাজী নজরুল ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মারক, এবং আরও অনেক কিছু। আদিবাসী গারোদের জীবনযাত্রা এখানকার আরেকটি আকর্ষণ।

প্রবেশ ফি

গজনী অবকাশ কেন্দ্রে প্রবেশ ফি জনপ্রতি ২০ টাকা। ওয়াচ টাওয়ারের জন্য টিকেটের মূল্য ১০ টাকা। গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করতে হলে উপজেলা পরিষদ চেকপোস্ট থেকে গেটপাস নিতে হয়। বাস ও ট্রাকের জন্য ৩০০ টাকা, মাইক্রোবাস ১৫০ টাকা, এবং প্রাইভেট কারের জন্য ১০০ টাকা।

যেভাবে পৌঁছাবেন

ঢাকা থেকে গজনী যেতে ময়মনসিংহ হয়ে যাতায়াত সবচেয়ে সুবিধাজনক। মহাখালী থেকে ড্রিমল্যান্ড স্পেশাল বাসে শেরপুর যেতে জনপ্রতি ভাড়া ৫০০ টাকা। শেরপুর থেকে ঝিনাইগাতী হয়ে অটো বা সিএনজিতে গজনী পৌঁছানো যায়।

থাকার ব্যবস্থা

ঝিনাইগাতীতে উপজেলা ডাকবাংলো এবং বনবিভাগের রেস্ট হাউজে পূর্ব অনুমতি নিয়ে থাকা যায়। শেরপুরে ১৫০ থেকে ৫০০ টাকায় সাধারণ মানের গেস্ট হাউজ এবং মাঝারি মানের হোটেল পাওয়া যায়।

খাবারের ব্যবস্থা

ঝিনাইগাতী কিংবা শেরপুর শহরে খাবারের জন্য বেশ কিছু ভালো হোটেল আছে। ঝিনাইগাতীতে হোটেল সাইদ ও জোসনা, আর শেরপুরে হোটেল শাহজাহান ও হোটেল আহারে যেতে পারেন।

গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

গজনী অবকাশ কেন্দ্র ভারতীয় সীমান্তের কাছে অবস্থিত, তাই সীমান্তের দিকে না যাওয়াই ভালো। জরুরি প্রয়োজনে শেরপুর জেলা প্রশাসকের অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন (ফোন: ০১৭৩৭২৯৪৮৪৯, ০১৭৪০৬০২৪১১)।

গজনী অবকাশ কেন্দ্র একটি সেরা প্রাকৃতিক গন্তব্য যা আপনাকে প্রকৃতির সান্নিধ্যে এনে দিবে শান্তি ও আনন্দের অভিজ্ঞতা।

গজনী অবকাশ কেন্দ্র এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
164.05 কিমি
শেরপুর থেকে
25.19 কিমি
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান

মন্তব্য

এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন