চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে ইসলাম ধর্ম প্রচারক হযরত শাহরাস্তির মাজার (Hazrat Shahrasti Mazar) অবস্থিত। তিনি ১২৩৮ খ্রিস্টাব্দে ইরাকের বাগদাদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। হযরত শাহরাস্তি (রঃ) ছিলেন বিখ্যাত সুফি সাধক হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রঃ)-এর বংশধর। দিল্লির সুলতান ফিরোজ শাহ্-এর শাসনামলে, হযরত শাহ্ জালালের সঙ্গে ইসলাম প্রচারের জন্য উপমহাদেশে আগত ১২ জন আউলিয়ার মধ্যে তিনি অন্যতম ছিলেন।
ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে তিনি ৭৩৮ বঙ্গাব্দে ইয়েমেন এবং ১৩৫১ সালে বাংলাদেশে আগমন করেন। তাঁর স্মরণে পরবর্তীকালে শাহরাস্তি উপজেলার নামকরণ করা হয়। তিনি অসংখ্য অলৌকিক ঘটনার জন্য পরিচিত। কথিত আছে, তাঁর মাজারের উত্তর পাশে অবস্থিত বিশাল দীঘিটি তিনি এক রাতেই জ্বীনদের সহায়তায় খনন করেছিলেন।
মাজার ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব
ইসলাম প্রচারে নিবেদিতপ্রাণ এই মহৎ ব্যক্তি ১৩৮৮ সালে চাঁদপুরের শ্রীপুর গ্রামে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর প্রায় সাড়ে তিনশ বছর পর, সুবেদার শায়েস্তা খানের কন্যা পরী বিবির আদেশে কাজী গোলাম রসূল তাঁর সমাধিকে কেন্দ্র করে একটি মাজার নির্মাণ করেন। সে সময় মাজার পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকার থেকে ৬৪ একর জমি এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পক্ষ থেকে বার্ষিক ভাতা প্রদান করা হয়েছিল। মাজারের পাশে ৩ গম্বুজ বিশিষ্ট একটি সুন্দর মসজিদও নির্মাণ করা হয়।
প্রতি বছর মাঘ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার শাহরাস্তির মাজারে বার্ষিক সম্মেলন বা ওরশ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অসংখ্য ভক্ত ও দর্শনার্থী অংশ নেন।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সড়ক, নৌ ও রেলপথে চাঁদপুর যাওয়া যায়। তবে নৌপথে লঞ্চে করে যাওয়া সবচেয়ে সুবিধাজনক ও উপভোগ্য। ঢাকার সদরঘাটের লালকুঠি ঘাট থেকে এমভি সিরিজের সোনার তরী, মেঘলা রাণী, বোগদাদীয়া, আল বোরাক, ঈগল, তাকওয়া, মিতালি ও ইমাম হাসান লঞ্চ চাঁদপুর নৌরুটে চলাচল করে। চাঁদপুরে পৌঁছানোর পর রিকশা বা সিএনজিতে করে শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদ হয়ে হযরত শাহরাস্তির মাজার শরীফে পৌঁছানো যায়।
কোথায় থাকবেন
চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন রোড ও কুমিল্লা রোডে বেশ কয়েকটি হোটেল রয়েছে। বিলাসবহুল আবাসনের মধ্যে মেঘনা রিসোর্ট, হোটেল গ্র্যান্ড হিলিসা, হোটেল শেরাটন, হোটেল আল রাজিব, হোটেল গাজী, হোটেল তাজমহল, হোটেল শ্যামলী এবং হোটেল জোনাকী উল্লেখযোগ্য।
কোথায় খাবেন
ফরিদগঞ্জের কিছু জনপ্রিয় খাবারের রেস্তোরাঁর মধ্যে শাহী রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে রাজধানী, হাজি রেস্টুরেন্ট, ঘরোয়া হোটেল ও ফরিদগঞ্জ ওয়ান স্টার রেস্টুরেন্ট অন্যতম। চাঁদপুর গেলে অবশ্যই পদ্মার বিখ্যাত ইলিশ মাছের স্বাদ নেওয়া উচিত!
Roky khan
ভ্রমণকারীমাশাল্লাহ, আমাদের চাঁদপুর এর খুব সুন্দর এবং পবিত্র জায়গা ❤️❤️