বড় স্টেশন

রুপালী ইলিশ চাঁদপুরকে দিয়েছে ‘ইলিশের বাড়ি’ নামে খ্যাতি। ঢাকা থেকে দিনে যাতায়াত করা সম্ভব হওয়ায়, তাজা ইলিশের স্বাদ নিতে এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন অনেক পর্যটক চাঁদপুরের দর্শনীয় স্থানগুলোতে যান। এবং চাঁদপুর ঘুরতে এসে বড় স্টেশন (Boro Station) না গেছেন, এমন কেউ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থল মোলহেড হিসেবে পরিচিত। এখানে তিন নদীর মোহনায় সূর্যাস্তের দৃশ্য, ছোট ছোট নৌকাগুলি ভেসে চলা, নদীর কূলে পানি আঁচড়ে পড়ার শব্দ, সব কিছুই যেন সারাজীবন মনে রাখার মতো।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়, এই বড় ষ্টেশন এলাকায় পাকিস্তানি সেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের টর্চার সেলে নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এখানে ‘রক্তধারা’ নামক একটি ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে।

এছাড়া, ট্রলার, স্পিডবোট বা ডিঙি নৌকা ভাড়া করে তিন নদীর মোহনায় ঘুরে বেড়ানো যায়। বড় ষ্টেশন এলাকায়, হাঁটা পথেই ইলিশের পাইকারী বাজার ‘মাছ ঘাট’ রয়েছে, যেখানে জেলেরা ধরানো ইলিশ প্রক্রিয়াজাত করেন।

কিভাবে যাবেন

ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে প্রতি ঘণ্টায় লঞ্চ চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ঢাকা-চাঁদপুর রুটে চলাচলকারী লঞ্চগুলোর মধ্যে এমভি সোনারতরী, এমভি তাকওয়া, এমভি বোগদাদীয়া, এমভি মেঘনা রাণী, এমভি আল বোরাক, এমভি ঈগল, এমভি রফরফ, এমভি তুতুল প্রভৃতি রয়েছে। লঞ্চে ভাড়া শ্রেণীভেদে ১০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। লঞ্চে ঢাকা থেকে চাঁদপুর পৌঁছাতে ৩ থেকে ৩.৫ ঘণ্টা সময় লাগে।

ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে পদ্মা এক্সক্লুসিভ বাস প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে চলে। এছাড়া, ট্রেনেও চাঁদপুর যাওয়া সম্ভব; ঢাকা থেকে লাকসাম হয়ে চাঁদপুর যেতে হবে।

চাঁদপুর লঞ্চ ঘাট থেকে রিকশা বা অটোরিকশা ভাড়া করে সহজেই বড় স্টেশন এবং তিন নদীর মোহনায় পৌঁছানো যাবে।

কোথায় থাকবেন

চাঁদপুরে থাকার জন্য কিছু ভালো হোটেল রয়েছে, যেমন সদর হাসপাতালের সামনে হোটেল গ্র্যান্ড হিলশা। এছাড়া, চাঁদপুরের কোর্ট স্টেশন এলাকায় আরও কিছু মাঝারি মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। চৌধুরী ঘাট বা নতুন ব্রিজের কাছে নদীর পাড়ে আরও কিছু হোটেল পাওয়া যাবে।

কোথায় খাবেন

চাঁদপুরে খাবারের জন্য বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে। আপনি আপনার পছন্দমতো যে কোনো হোটেলে খাবার খেতে পারেন। সাশ্রয়ী দামে খাবার খেতে চাইলে চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালের ডান পাশে বিআইডব্লিউটিএ ক্যান্টিনে যেতে পারেন। এছাড়া, ফরিদগঞ্জের আউয়াল ভাইয়ের মিষ্টি এবং ওয়ান মিনিট আইসক্রিমের স্বাদও নিতে ভুলবেন না। আর চাঁদপুরে এসে ইলিশ না খাওয়া কি হবে! তাজা ইলিশ খেতে চাইলে বড় স্টেশনের ঝুপড়ির হোটেল অথবা লঞ্চ ঘাটের হোটেলগুলোতে যেতে পারেন।

বড় স্টেশন এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
68.47 কিমি
চাঁদপুর থেকে
0.99 কিমি
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
অঙ্গীকার ভাস্কর্য
লোহাগড়া মঠ
সুরেশ্বর দরবার শরীফ
রূপসা জমিদার বাড়ি
মহিষারের দিগম্বরী দীঘি
জ্বীনের মসজিদ
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ
মর্ডান ফ্যান্টাসি কিংডম
রায়পুর মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
বুড়ির হাট জামে মসজিদ
খোয়াসাগর দীঘি
ধানুকা মনসা বাড়ি
রুদ্রকর মঠ
ষোলআনী সৈকত
হযরত শাহরাস্তির মাজার
দালাল বাজার জমিদার বাড়ি
মানা বে ওয়াটার পার্ক
ইদ্রাকপুর কেল্লা
সোনারং জোড়া মঠ
তিতা খাঁ মসজিদ

মন্তব্য

এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন