ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকার

নড়াইল জেলার সদর উপজেলার কলোড়া ইউনিয়নের গোয়ালবাড়ি গ্রাম বাংলাদেশে ভোঁদড় দিয়ে মাছ ধরার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। দেশজুড়ে এই প্রাচীন পদ্ধতি প্রায় বিলুপ্ত হলেও, গোয়ালবাড়ি গ্রামের প্রায় ২৬২৭টি পরিবার এখনো এই ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।

ভোঁদড় হলো মাছের প্রতি অত্যন্ত আসক্ত একটি প্রাণী। এই স্বভাবকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় জেলেরা মাছ শিকার করেন। মাছ ধরার আগে, ভোঁদড়গুলোকে পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ খাওয়ানো হয়, তারপর তাদের নিয়ে নৌকায় যাত্রা শুরু হয়। নৌকার সাথে বাঁধা জাল নদীতে ফেলা হয় এবং তারপর ভোঁদড়গুলোকে ছেড়ে দেওয়া হয়। খাবারের লোভে ভোঁদড় পানিতে নেমে মাছ তাড়িয়ে নিয়ে আসে, ফলে মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ে। শিকারের পর, ধরা মাছের একটি অংশ ভোঁদড়দের জন্য রেখে দেওয়া হয়, যার ফলে জেলেদের সঙ্গে তাদের একধরনের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও বিশ্বাস গড়ে ওঠে। এই কারণে নড়াইল অঞ্চলের জেলেরা ভোঁদড়কে গৃহপালিত প্রাণীর মতো লালন-পালন করেন।

কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে করে পদ্মা সেতু হয়ে নড়াইল জেলায় যাওয়া যায়। গাবতলী, সায়েদাবাদ, নবিনগর ও মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে দেশ ট্র্যাভেলস, সেন্টমার্টিন পরিবহন, টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, সোহাগ পরিবহন, ঈগল পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ এবং এ কে ট্রাভেলস এর বাসে নড়াইল যেতে পারেন। ভাড়া জনপ্রতি ৫৫০-১২০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

নড়াইলের রুপগঞ্জ বাজার থেকে রিকশা বা অটোরিকশা নিয়ে গোয়ালবাড়ি পৌঁছাতে পারেন। সেখান থেকে চিত্রা ও আফরা নদীর ত্রিমোহনায় গিয়ে ঐতিহ্যবাহী ভোঁদড় দিয়ে মাছ ধরা সরাসরি দেখতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন?

নড়াইল শহর এবং যশোর-নড়াইল সড়কে বেশ কিছু আবাসিক হোটেল ও আধুনিক মানের রিসোর্ট রয়েছে। উল্লেখযোগ্য হোটেল ও রিসোর্টগুলোর মধ্যে রয়েছে:

• ডলফিন হোটেল
• সম্রাট হোটেল
• মর্ডান হোটেল
• অরুনিমা রিসোর্ট
• চিত্রা রিসোর্ট

কোথায় খাবেন?

নড়াইল শহরে বিভিন্ন মানের খাবার রেস্টুরেন্ট রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

• ফ্রেন্ডস ক্যাফে
• মধুর ক্যান্টিন
• সোনারগাঁও হোটেল
• ফরহাদ ফুড ভিলেজ

নড়াইল জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

নড়াইল ভ্রমণে গেলে নিচের দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখতে পারেন:
✅ সুলতান কমপ্লেক্স
✅ চিত্রা রিসোর্ট
✅ নিরিবিলি পিকনিক স্পট
✅ অরুনিমা ইকো পার্ক
✅ বাধাঘাট
✅ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ নূর মোহাম্মদ কমপ্লেক্স
✅ তপনভাগ দিঘী

নড়াইলের ঐতিহ্যবাহী ভোঁদড় দিয়ে মাছ ধরা দেখতে চাইলে গোয়ালবাড়ি গ্রাম অবশ্যই ঘুরে আসতে ভুলবেন না!