সাতৈর মসজিদ

ফরিদপুর জেলা সদর থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার দূরে বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর গ্রামে অবস্থিত সুলতানী আমলের নয় গম্বুজবিশিষ্ট সাতৈর মসজিদ। ধারণা করা হয়, ষোড়শ শতাব্দীতে শের শাহের আমলে আওলিয়া হযরত শাহ সুফি শায়েফ ছতুরি (রাঃ)-এর প্রতি সম্মান জানিয়ে আলা-উদ্দিন হুসাইন শাহ এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। নির্মাণের কয়েক বছরের মধ্যে মসজিদটি পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়ায় এর চারপাশ জঙ্গলে ঢাকা পড়ে। পরবর্তীতে বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে মসজিদটি সংস্কার ও পুনঃনির্মাণ করা হয়।

মসজিদের স্থাপত্যশৈলী

বর্গাকার মসজিদটির বাইরের দৈর্ঘ্য ১৭.৮ মিটার, ভেতরের দৈর্ঘ্য ১৩.৮ মিটার, এবং ভূমি থেকে উচ্চতা ০.৬ মিটার। পেন্ডেন্টিভ পদ্ধতিতে নির্মিত মসজিদটির ছাদে রয়েছে ৯টি কন্দাকৃতির গম্বুজ। মসজিদের ভেতরে রয়েছে পাথরের তৈরি ৪টি স্তম্ভ, দেয়াল সংলগ্ন ১২টি পিলার এবং পশ্চিম দেয়ালে ৩টি খিলানযুক্ত মেহরাব। পূর্বে মসজিদের তিন দিকে প্রবেশপথ থাকলেও বর্তমানে উত্তর ও দক্ষিণ দিকের প্রবেশপথগুলো জানালায় রূপান্তরিত হয়েছে।

আশপাশের দর্শনীয় স্থান

সাতৈর মসজিদের পাশে রয়েছে ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড ট্রাংক রোড, ১২ আউলিয়ার মাজার এবং একটি গভীর কূপ। এই মসজিদকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে বহু লোক-কথার প্রচলন রয়েছে, যা বহু দূর-দূরান্ত থেকে মানুষকে আকর্ষণ করে।

যেভাবে পৌঁছাবেন

ঢাকা থেকে ফরিদপুর যেতে বাস বা ট্রেন ব্যবহার করা যায়।

  • বাসে যাওয়া: গাবতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে কমফোর্ট লাইন, রয়েল পরিবহন, সূর্যমুখী পরিবহণসহ বেশ কয়েকটি বাস পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুর পর্যন্ত যায়। ভাড়া ৪০০-৫০০ টাকা।
  • ট্রেনে যাওয়া: ঢাকা কমলাপুর থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, মধুমতি এক্সপ্রেস বা বেনাপোল এক্সপ্রেসে ফরিদপুর পৌঁছানো যায়। ট্রেনে আসনভেদে ভাড়া ৩০৫-৬৯৬ টাকা।

ফরিদপুরের মাঝকান্দি লোকাল বাস স্ট্যান্ড থেকে ফরিদপুর-বোয়ালমারী মহাসড়ক হয়ে সাতৈর মসজিদে পৌঁছানো যায়।

কোথায় থাকবেন

ফরিদপুর শহরে থাকার জন্য হোটেল র‍্যাফেলস, হোটেল লাক্সারি, হোটেল পদ্মা, হোটেল পার্ক প্যালেস, হোটেল শ্যামলী ও হোটেল জোনাকিসহ বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে।

কোথায় খাবেন

মসজিদে যাওয়ার পথে মাঝকান্দি বাজারে ছোট ছোট চা-নাস্তার দোকান দেখতে পাবেন। বোয়ালমারী উপজেলায় এবং ফরিদপুর শহরে ভালো মানের খাবারের রেস্তোরাঁর খোঁজ পাবেন।

ফরিদপুরের অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

সাতৈর মসজিদ ছাড়াও ফরিদপুরের উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলো হলো মধুমতি নদী, মথুরাপুর দেউল, কানাইপুর জমিদার বাড়ি, পৌর শেখ রাসেল শিশু পার্ক, পাতরাইল মসজিদ এবং পল্লী কবি জসীম উদ্দিনের বাড়ি।

সাতৈর মসজিদ এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
86.58 কিমি
ফরিদপুর থেকে
25.6 কিমি
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
রাজা সীতারাম রাজপ্রাসাদ
মধুমতি নদী
মথুরাপুর দেউল
কানাইপুর জমিদার বাড়ি
ফরিদপুর পৌর শেখ রাসেল শিশুপার্ক
সিদ্ধেশ্বরী মঠ
পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের বাড়ি
মাগুরার ভাতের ভিটা
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ নূর মোহাম্মদ শেখ কমপ্লেক্স
গেরদা ফলক
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের মাজার
নিরিবিলি পিকনিক স্পট
স্বপ্নবীথি পিকনিক স্পট
মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতিকেন্দ্র
কবি কাজী কাদের নওয়াজের বাড়ি
নীহাররঞ্জন গুপ্তের বাড়ি
জামাই পাগলের মাজার
মধুমতি বাওড়
শ্রীপুর জমিদার বাড়ি
চিত্রা রিসোর্ট

মন্তব্য

এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন