কুষ্টিয়া শহরের মিলপাড়ায় অবস্থিত লাল রঙের দোতলা কারুকার্য খচিত ভবনটি ‘টেগর লজ’ বা ‘ঠাকুর লজ’ নামে পরিচিত। এই ভবনটি ১৮৯৫ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ব্যবসায়িক কাজের জন্য কুষ্টিয়ায় এসে নির্মাণ করেছিলেন।
এই ভবনটি নয় কাঠা জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এবং এর প্রবেশ পথের পাশে কবিগুরুর একটি আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। নিচতলায় একটি বড় হলঘর এবং উপরের তলায় তিনটি কক্ষ রয়েছে, যেখানে কবিগুরুর লেখা গ্রন্থমালা এবং তার আঁকা ১২টি ছবির অনুকৃতি রাখা হয়েছে। একতলা থেকে দোতলায় উঠতে পশ্চিম পাশের কুঠুরির কোণে একটি সুন্দর প্যাঁচানো লোহার সিঁড়ি রয়েছে।
ভবনের ভেতর সবুজ ঘাসে ঢাকা একটি আঙিনা এবং একটি ছোট মুক্তমঞ্চ রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেমন রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপন করা হয়। এখানেই কবিগুরু অসংখ্য কবিতা রচনা করেছিলেন, যা পরে ‘ক্ষণিকা’ এবং ‘কথা ও কাহিনী’ গ্রন্থে প্রকাশিত হয়।
কীভাবে যাবেন
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মিলপাড়া এলাকার মোহিনী মিল ও বড় বাজারের কাছে কবি আজিজুর রহমান সড়কে অবস্থিত টেগর লজ। কুষ্টিয়া শহর থেকে টেগর লজের দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে কুষ্টিয়া এসে রিক্সা বা অটোরিক্সা দিয়ে টেগর লজে পৌঁছানো যাবে।
ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া
ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে যাওয়া যায়। বাসে গেলে কল্যানপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে নিউ এসবি সুপার ডিলাক্স, শ্যামলী, হানিফ বাসে কুষ্টিয়া যাওয়া যায়, এবং তারপর রিক্সা বা অটোরিক্সায় টেগর লজে পৌঁছানো যায়। বাসের ভাড়া নন-এসি ৬০০-৭০০ টাকা, এসি ১০০০-১২০০ টাকা।
ট্রেনে যেতে চাইলে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, মধুমতি এক্সপ্রেস বা বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে কুষ্টিয়া যাওয়া যায়। ট্রেনের টিকেটের মূল্য ৪১০ থেকে ৯৪৩ টাকা। কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশনে নেমে অটোরিক্সা বা সিএনজিতে টেগর লজে পৌঁছানো যাবে।
কোথায় থাকবেন
কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর গেট, শাপলা চত্বর, এন এস রোড এবং বড় বাজারে বেশ কিছু মাঝারি মানের হোটেল রয়েছে। হোটেল আজমীরি, প্রীতম হোটেল, এবং জুবলি হোটেল থেকে আপনার পছন্দমতো একটি নির্বাচন করতে পারেন। একটু ভালো মানের হোটেল হিসেবে হোটেল রিভার ভিউ, হোটেল নূর ইন্টারন্যাশনাল এবং হোটেল লিবার্টি রয়েছে।
কোথায় খাবেন
কুষ্টিয়া শহরে খাওয়ার জন্য অনেক ভালো মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। কোর্ট স্টেশন এলাকার হোটেল শফি, জাহাঙ্গীর হোটেল, শিল্পী হোটেল এবং খাওয়া-দাওয়া হোটেলে খাবার খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের খাজা ও কুলফি মালাই খাওয়া অবশ্যই মিস করবেন না।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!