বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একসময় প্রচুর পদ্মফুল দেখা গেলেও বর্তমানে তা ধীরে ধীরে কমে আসছে। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম ঘাগুটিয়ার পদ্মবিল এখনো ধরে রেখেছে সেই প্রাকৃতিক ঐতিহ্য। প্রায় ১২০ একর জুড়ে বিস্তৃত এই বিলটি শত বছর ধরে হাজার হাজার পদ্মফুলের সমারোহে প্রকৃতিপ্রেমীদের মুগ্ধ করে আসছে। বর্ষার শেষে যখন পুরো বিলে পদ্ম ফুটে ওঠে, তখন দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
কখন যাবেন
ঘাগুটিয়ার পদ্মবিলে ঘুরতে সবচেয়ে ভালো সময় আগস্ট থেকে নভেম্বর মাস। এই সময়েই বিলজুড়ে পদ্মফুল ফোটে, যা নভেম্বর পর্যন্ত থাকে। শুষ্ক মৌসুমে বিল শুকিয়ে গেলে পদ্মগাছ মরে যায়, তখন এলাকাবাসী সেখানে ধান চাষ করে। তাই বর্ষার পরে শরৎকালে এই বিলে গেলে প্রকৃতির আসল রূপ দেখা যাবে।
কিভাবে যাবেন
ঘাগুটিয়ার পদ্মবিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে, আখাউড়া উপজেলার ত্রিপুরা সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত। ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে সহজেই যেতে পারেন।
- বাসে গেলে: ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর পৌঁছানোর পর সিএনজি নিয়ে সরাসরি ঘাগুটিয়া যেতে পারেন।
- ট্রেনে গেলে: ঢাকা থেকে আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ট্রেনে যেতে পারেন। ট্রেনের ভাড়া ১৪০ থেকে ৫৭৫ টাকা (শ্রেণিভেদে)। চট্টগ্রামগামী যে কোনো ট্রেন আখাউড়া স্টেশনে থামে। আখাউড়া স্টেশন থেকে ২৬০-৩০০ টাকা রিজার্ভ সিএনজি নিয়ে সরাসরি ঘাগুটিয়া পৌঁছানো যায়। ঘাগুটিয়া বিডিআর ক্যাম্প বললেই চালক আপনাকে ঠিক জায়গায় নামিয়ে দেবে। রিজার্ভ সিএনজি নিলে ফিরে আসার সময় ঝামেলা কম হবে।
বিলে ঢোকার পর আশেপাশের সৌন্দর্য ঘুরে দেখতে হলে নৌকা ভাড়া নিতে হবে, যা জনপ্রতি ৫০-৬০ টাকা।
কোথায় খাবেন
বিলে ঘোরার সময় হালকা শুকনো খাবার সাথে নিয়ে গেলে ভালো হয়। তবে ভালোভাবে খেতে চাইলে আখাউড়ার বাজারে চলে যেতে পারেন। বিশেষ করে নাইন স্টার রেস্টুরেন্টের গরুর মাংসের খিচুড়ি বেশ জনপ্রিয়। ঘোরাঘুরির পর এই খিচুড়ি খেয়ে নিতে পারেন।
কোথায় থাকবেন
ঘাগুটিয়ার পদ্মবিল একদিনেই ঘুরে দেখা যায়, তাই সাধারণত দিনের মধ্যেই ফেরা যায়। তবে যদি থাকতে চান, আখাউড়ায় কিছু মোটামুটি মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে, যেখানে রাত কাটানো সম্ভব।
শেষ কথা
ঘাগুটিয়ার পদ্মবিল প্রকৃতির এক অপার আশীর্বাদ। সঠিক সময়ে গেলে এখানে পদ্মের সমুদ্রের মতো দৃশ্য আপনার হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। প্রকৃতির এই অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করতে বন্ধু-বান্ধব বা পরিবার নিয়ে সহজেই একদিনের একটি ছোট্ট ভ্রমণ পরিকল্পনা করতে পারেন।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!