হরিপুর জমিদার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিণবেড় গ্রামে অবস্থিত একটি দৃষ্টিনন্দন ঐতিহাসিক স্থাপনা। প্রায় ৫ একর জমির ওপর লাল ইট ও সুরকির গাঁথুনিতে নির্মিত তিন তলা বিশিষ্ট এই জমিদার বাড়িতে রয়েছে ৬০টি কক্ষ, দরবার হল, রংমহল, ধানের গোলা, গোয়ালঘর, নাচঘর, মলপুকুর, রান্নাঘর, খেলার মাঠ ও একটি মন্দির। বাড়িটির পশ্চিম দিকে তিতাস নদীর পাড়ে রয়েছে শান বাঁধানো ঘাট, আর ঘাটের ঠিক উত্তরে আছে জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা কৃষ্ণ প্রসাদ রায় চৌধুরী ও গৌরী প্রসাদ রায় চৌধুরীর সমাধি মঠ।
ইতিহাসের পাতায় হরিপুর জমিদার বাড়ি
প্রায় ১৭৫ বছর আগে জমিদার গৌরী প্রসাদ রায় চৌধুরী ও কৃষ্ণ প্রসাদ রায় চৌধুরী যৌথভাবে এই জমিদার বাড়ি নির্মাণ করেন। কৃষ্ণ প্রসাদ রায় চৌধুরীর মৃত্যুর পর হরিপদ রায় চৌধুরী ও শান্তি রায় চৌধুরী, এবং পরবর্তীতে উপেন্দ্র রায় চৌধুরী ও হরেন্দ্র রায় চৌধুরী উত্তরাধিকারসূত্রে জমিদারির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে, উপেন্দ্র ও হরেন্দ্র রায় চৌধুরী কলকাতায় চলে যান, তবে বাড়িটিতে রেখে যান পুরোহিতদের দেখাশোনার জন্য।
নান্দনিক স্থাপত্য ও সাংস্কৃতিক সংযোগ
শিল্পসমৃদ্ধ স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত এই জমিদার বাড়িতে একাধিক নাটক ও সিনেমার শুটিং হয়েছে। জনপ্রিয় লেখক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘ঘেটুপুত্র কমলা’-র অনেক দৃশ্য ধারণ করা হয় এই ঐতিহাসিক স্থাপনায়। বর্তমানে হরিপুর জমিদার বাড়ি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে সংরক্ষিত রয়েছে।
কিভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে হরিপুর জমিদার বাড়ি যেতে সবচেয়ে সহজ পথ হলো ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ধরে মাধবপুর বাজারে পৌঁছানো। সিলেট বা হবিগঞ্জগামী বাসে মাধবপুর নামার পর, সিএনজি নিয়ে সরাসরি জমিদার বাড়িতে যাওয়া যাবে।
কোথায় থাকবেন?
একদিনের মধ্যে ঢাকায় ফিরে আসা সম্ভব হলেও, রাত্রিযাপনের প্রয়োজন হলে মাধবপুর বাজারের জেলা পরিষদ রেস্ট হাউস, লাকি হোটেল, মাধবপুর হাইওয়ে রেস্ট হাউস বা ভিশন হোটেলে থাকতে পারেন।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!