সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণার স্থানীয় নাম মায়াবী ঝর্ণা। এটি সিলেটের জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে ভারতের সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত, এবং ঝর্ণাটিতে পৌঁছাতে মাত্র ১৫-২০ মিনিট সময় লাগে। বিএসএফের পাহারা উপেক্ষা করে বাংলাদেশের পর্যটকরা সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা (Songrampunji Waterfall) দেখতে যেতে পারেন। এখানে পাহাড়ের গা বেয়ে ঝরনার জল জমে পুকুরের মতো হয়ে সৃষ্টি হয়েছে। এই ঝর্ণায় মোট তিনটি ধাপ রয়েছে। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এটি আদর্শ অ্যাডভেঞ্চারের জায়গা। ঝর্ণার তৃতীয় ধাপে একটি সুড়ঙ্গ রয়েছে, এবং তার শেষ পথ এখনও অজানা। পিচ্ছিল পাথুরে পথ পার হয়ে ঝর্ণার সব ধাপ দেখতে সাহস এবং বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।
সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা যাওয়ার সময়
সাধারণত বর্ষাকালে বাংলাদেশের ঝর্ণাগুলোর মধ্যে বেশি পানি থাকে, তাই এই সময়েই সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা দেখা জন্য উপযুক্ত। জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে এই ঝর্ণায় প্রচুর পানি থাকে, কিন্তু শীত আসার সাথে সাথে পানি কমতে শুরু করে। অর্থাৎ, মায়াবী ঝর্ণা দেখতে সবচেয়ে ভালো সময় হলো বর্ষাকাল এবং এর পরবর্তী কয়েক মাস।
সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা কিভাবে যাবেন
সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা দেখতে আপনাকে সিলেটের জাফলংয়ে যেতে হবে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলেট যাওয়া যায়, এবং ঢাকা থেকে বাস, ট্রেন বা বিমান পথে সিলেট পৌঁছানো সম্ভব।
ঢাকা থেকে সিলেট
ঢাকার ফকিরাপুল, গাবতলী, সায়েদাবাদ, মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে সিলেটগামী গ্রীন লাইন, সৌদিয়া, শ্যামলি, হানিফ ও এনা পরিবহনের এসি এবং নন-এসি বাস চলাচল করে। এসি বাসের টিকিটের মূল্য ১৪০০-১৫০০ টাকা এবং নন-এসি বাসের ভাড়া ৬৮০-৭০০ টাকা। ট্রেনে ঢাকা থেকে সিলেট পৌঁছাতে সময় লাগে ৭-৮ ঘণ্টা। আকাশপথে ঢাকা থেকে সিলেট যেতে বিমানের টিকিটের মূল্য ৩,৫০০-১০,০০০ টাকা।
চট্টগ্রাম থেকে সিলেট
চট্টগ্রাম থেকে গ্রীন লাইন, এনা, সৌদিয়া এবং অন্যান্য বাস সিলেট যায়। এসি এবং নন-এসি বাসের ভাড়া ৯০০-১৬০০ টাকা। ট্রেনে সিলেট যেতে পাহাড়িকা এবং উদয়ন এক্সপ্রেস চলাচল করে।
সিলেট থেকে জাফলং
সিলেট থেকে জাফলং যাওয়ার জন্য বিভিন্ন যানবাহন রয়েছে। লোকাল বাসে ৮০ টাকা ভাড়া লাগে, সিএনজি বা অটোরিকশায় ১২০০-২০০০ টাকায় পৌঁছাতে পারেন। মাইক্রোবাসের রিজার্ভ ভাড়া ৩০০০-৫০০০ টাকা।
জাফলং থেকে সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা
জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে মায়াবী ঝর্ণায় পৌঁছাতে নদী পাড়ি দিয়ে নৌকায় ১০ মিনিট পায়ে হেঁটে যেতে হবে। বর্ষা মৌসুমে নৌকায় ঝর্ণার কাছে পৌঁছানো সম্ভব, এবং ভাড়া ৩০-৫০ টাকা।
কোথায় থাকবেন
যদি সিলেট শহরে থাকেন, তবে সেখানে থাকা সুবিধাজনক। বিভিন্ন আবাসিক হোটেল শাহ জালাল মাজারের কাছাকাছি অবস্থিত। কম খরচে থাকতে চাইলে দরগা গেট এলাকায় ৫০০-১০০০ টাকার হোটেল পাওয়া যায়।
জাফলংয়ে রাত্রিযাপনের জন্য জাফলং ইন হোটেল এবং হোটেল প্যারিস রয়েছে। এছাড়া, জৈন্তিয়া হিল রিসোর্টে যোগাযোগ করে থাকার ব্যবস্থা করা যায়।
কি খাবেন
জাফলংয়ে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট রয়েছে, যেমন জাফলং ভিউ রেস্টুরেন্ট, সীমান্ত ভিউ রেস্টুরেন্ট। সিলেট শহরে খেতে চাইলে জিন্দাবাজার এলাকায় প্যানসি, পাঁচ ভাই বা পালকি রেস্টুরেন্টে সুলভ মূল্যে খাবার খেতে পারবেন।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!