বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের প্রতীক ও আমাদের গৌরবের স্মৃতি হিসেবে পরিচিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। এটি শুধু একটি স্থাপত্য নয়; এটি আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতি গভীর শ্রদ্ধার প্রকাশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কেন্দ্রে অবস্থিত এই শহীদ মিনার প্রতিবছর লাখো মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার স্থান হয়ে ওঠে, বিশেষত ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে।
ইতিহাস
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি, বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর গুলি চালায় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। সালাম, রফিক, জব্বারসহ আরও অনেকে জীবন দেন সেই আন্দোলনে। শহীদদের স্মরণে প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ শুরু হয় ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি।
তবে প্রথম শহীদ মিনারটি ভেঙে দেওয়া হলেও ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে স্থায়ীভাবে বর্তমান কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। এর নকশা করেছিলেন শিল্পী হামিদুর রহমান। মিনারটি প্রতীকীভাবে মায়ের মমতাময় কোলে সন্তানের আত্মত্যাগের চিত্র তুলে ধরে।
ঢাকা থেকে যাওয়ার ব্যবস্থা
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যাওয়ার জন্য ঢাকা শহরের যেকোনো প্রান্ত থেকে সহজেই পৌঁছানো যায়।
- বাস: ঢাকার যে কোনো প্রান্ত থেকে শাহবাগ বা নিউমার্কেটগামী বাসে উঠুন। শাহবাগ মোড়ে নেমে হেঁটে ১০ মিনিটের পথ।
- রিকশা বা সিএনজি: শাহবাগ, নীলক্ষেত বা আজিমপুর থেকে রিকশা বা সিএনজিতে সহজেই যাওয়া যায়।
- রেল: ঢাকা রেল স্টেশনে নামলে সেখান থেকে অটো বা রিকশায় করে শহীদ মিনারে পৌঁছানো যায়।
- গুগল ম্যাপ: গুগল ম্যাপ ব্যবহার করলে নিকটবর্তী পথ নির্দেশনা পাওয়া যায়।
কোথায় খাবেন?
শহীদ মিনারের কাছাকাছি রয়েছে কিছু জনপ্রিয় খাবারের স্থান:
- শাহবাগের চা ও ফুচকা: শহীদ মিনার থেকে সামান্য দূরেই শাহবাগে রয়েছে ফুচকা এবং চায়ের দোকানের বিশাল সমাহার।
- নিউমার্কেটের খাবার দোকান: এখানে বিভিন্ন রকমের হালকা খাবার ও ভর্তা-ভাত পাওয়া যায়।
- আজিজ সুপার মার্কেট: নীলক্ষেতের পাশে আজিজ মার্কেটে ক্যাফে এবং রেস্তোরাঁগুলোর খাবার অত্যন্ত জনপ্রিয়।
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া: এখানে সাশ্রয়ী মূল্যে ভাত, বিরিয়ানি ও স্ন্যাকস খাওয়া যায়
জুরুরি কিছু কথা
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার শুধু একটি স্থাপনা নয়, এটি আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং জাতীয় চেতনার প্রতীক। এটি দেখতে শুধু স্থানীয় নয়, বিদেশি পর্যটকরাও প্রতিদিন ভিড় জমায়। ঢাকায় আসলে একবার হলেও শহীদ মিনার পরিদর্শন করা উচিত। ইতিহাসের প্রতিটি গল্প এখানে অনুভব করা যায়, যা আমাদের জাতি হিসেবে গর্বিত করে।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!