গোপালগঞ্জ জেলা সদর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে মুকসুদপুরে অবস্থিত উজানী রাজবাড়ী একটি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন। সময়ের সাথে সাথে রাজবাড়ীর অনেক প্রাচীন শিল্প নিদর্শন হারিয়ে গেছে। তবে জমিদারী প্রথার সাক্ষী হিসেবে এই রাজবাড়ী এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে, যদিও যথাযথ সংস্কারের অভাবে এর সৌন্দর্য বিলুপ্তির পথে। ব্রিটিশ শাসনামলে যশোর জেলা থেকে দুই জমিদার, গোবিন্দ ও সুর নারায়ণ, গোপালগঞ্জের উজানী গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। পরে তারা তেলিহাটি পরগনার প্রায় ৫০ হেক্টর এলাকা নিয়ে জমিদারী প্রথা চালু করেন এবং জমিদারী কাজের জন্য একাধিক দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার প্রাসাদ নির্মাণ করেন। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে উজানীতে এক সুন্দর ও কারুকার্যখচিত জমিদার বাড়ি নির্মিত হয়, যা বর্তমানে উজানী রাজবাড়ী নামে পরিচিত।
এছাড়া প্রাসাদটির পাশেই রয়েছে বৈঠকখানা, পুকুরের ঘাট, মঠ ও মন্দির। জমিদারী প্রথার বিলুপ্তির পর জমিদার ও তাদের উত্তরসূরিরা ভারতে চলে গেলেও সুর নারায়ণের বংশধররা এখনো এই উজানী জমিদার বাড়িতে বসবাস করছেন। তৎকালীন উজানী জমিদারের মোট ৭টি জমিদারী ছিল। বর্তমানে উজানী রাজবাড়ীর পুরনো পাঁচিল, মন্দির এবং টেরাকোটা দিয়ে ঘেরা মঠের ছাদ প্রায় ভেঙে গেছে, এবং জমিদার বাড়ির পাশের কষ্টিপাথরের কালীমন্দির ও বিশাল দীঘি সংস্কারের অভাবে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। উজানী জমিদার বাড়ি থেকে খুব বেশি দূরে মহাটালি গ্রামে আরেকটি প্রাচীন জমিদার বাড়ি অবস্থিত।
কিভাবে যাবেন
ঢাকার গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে পলাশ, ইমাদ, টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, গোল্ডেন লাইন, গ্রিনলাইন, কমফর্ট, রাজধানী কিংবা বিআরটিসির বাসে গোপালগঞ্জ যাওয়া যায়। এসব এসি/নন-এসি বাসে শ্রেণিভেদে ভাড়া ৫০০-৯০০ টাকা। মুকসুদপুর উপজেলা থেকে উজানী রাজবাড়ী প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। গোপালগঞ্জের পুলিশ লাইন বা ঘোনাপাড়া থেকে বাস থেকে নামার পর আরেকটি বাস, ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, ভ্যান বা নসিমনে করে উজানী বাজারের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত উজানী রাজবাড়ী পৌঁছাতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
গোপালগঞ্জ শহরে হোটেল মধুমতি, হোটেল রানা, পলাশ গেস্ট হাউজ, হোটেল শিমুল, হোটেল সোহাগ, হোটেল রিফাত এবং হোটেল জিমি সহ বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল এবং রেস্ট হাউস রয়েছে।
কোথায় খাবেন
গোপালগঞ্জ শহরে বাংলা খাবারের পাশাপাশি ফাস্টফুড ও চাইনিজ খাবারের রেস্টুরেন্টও রয়েছে। শহরের বঙ্গবন্ধু রোডের কাছে লেক ভিউ ক্যাফে, ভুতের বাড়ি, বারবিকিউ টুনাইট অথবা এফএনএফ রেস্টুরেন্টে আপনার পছন্দের খাবার খেতে পারবেন।
গোপালগঞ্জের দর্শনীয় স্থান
গোপালগঞ্জে কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে, যেমন বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ, বিট রুট ক্যানেল, আড়পাড়া মুন্সিবাড়ি, শেখ রাসেল শিশু পার্ক এবং লাল শাপলার বিল।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!