পাতরাইল মসজিদ (Patrail Masjid) ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। এই মনোমুগ্ধকর ও কারুকার্যময় মসজিদটি মজলিশ আউলিয়া মসজিদ নামেও পরিচিত। আয়তাকার এবং ১০ গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদের স্থাপত্যশৈলীতে রাজশাহীর বাঘা মসজিদের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। মসজিদের পূর্ব দিকে পাঁচটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ রয়েছে এবং উত্তর ও দক্ষিণ পাশে আরও দুটি দরজা রয়েছে। প্রায় দুই মিটার পুরু দেয়ালের এই মসজিদের ভেতরের দৈর্ঘ্য ২১.৭৯ মিটার ও প্রস্থ ৮.৬০ মিটার। মসজিদের নিকটেই পাতরাইল দীঘির পাড়ে রয়েছে বিখ্যাত সুফি সাধক মজলিশ আবদুল্লাহ খান আউলিয়ার মাজার, একটি মাদ্রাসা এবং দুটি বড় দীঘি।
নির্মাণকাল
পাতরাইল মসজিদের সঠিক নির্মাণকাল সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হয়, ১৪০০ খ্রিষ্টাব্দে সুলতান গিয়াসউদ্দীন আজম শাহের শাসনামলে বিখ্যাত সুফি দরবেশ মজলিশ আবদুল্লাহ খান আউলিয়া ইসলাম প্রচারের জন্য এ অঞ্চলে এসে এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। তাঁর নাম অনুসারেই এটি মজলিশ আউলিয়া মসজিদ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে এই মসজিদটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে
ঢাকার গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে গোল্ডেন লাইন বা সাউথ লাইনের বাসে সরাসরি ফরিদপুর পৌঁছানো যায়। ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা গোলচত্বরে নেমে ভাঙ্গা-মাওয়া বিশ্বরোডের পুলিয়া থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরেই পাতরাইল মসজিদ।
মাওয়া হয়ে
ঢাকার গুলিস্তান, পোস্তাগোলা বা বাবুবাজার ব্রিজ থেকে মাওয়া গামী বাসে মাওয়া গিয়ে লঞ্চ বা স্পিডবোটে কাওরাকান্দি আসুন। সেখান থেকে ভাঙ্গাগামী বাসে পুলিয়া বাজার নেমে অটোতে করে পাতরাইল মসজিদে পৌঁছানো যাবে।
বি: দ্র:
পাতরাইল মসজিদ দর্শনে যাওয়ার সময় যাতায়াতের জন্য রিজার্ভ পরিবহন নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়। না হলে ফেরার পথে পরিবহন সংকটে পড়তে পারেন।
কোথায় থাকবেন
পাতরাইল মসজিদের নিকটে থাকার কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। তবে ভাঙ্গা উপজেলায় সীমিত পরিসরে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। সর্বোত্তম হবে ফরিদপুর শহরে ফিরে থাকার ব্যবস্থা করা।
আর কী দেখবেন
ফরিদপুর জেলায় পাতরাইল মসজিদ ছাড়াও আরও কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে। যেমন:
- পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের বাড়ি
- নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট
- হযরত শাহ ফরিদ মসজিদ
- জগদ্বন্ধু সুন্দর আশ্রম
- আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিল
- বাইশ রশি জমিদার বাড়ি
- সদরপুর সাতৈর মসজিদ
- মথুরাপুরের দেউল ইত্যাদি।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!