ঝিনাইদহ শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে হরিশংকরপুর গ্রামে নবগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত বিখ্যাত গণিতবিদ কালীপদ বসুর (কে.পি. বসু) ঐতিহাসিক বাসভবনটি। ১৯০৭ সালে তিনি নিজ উদ্যোগে নির্মাণ করেছিলেন ১৭টি কক্ষ সম্বলিত একটি বিশাল দ্বি-তল প্রাসাদ। যদিও বর্তমানে এই প্রাসাদটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে, একসময় এটি ছিল এক অত্যাশ্চর্য স্থাপত্য নিদর্শন, যা দেখতে অনেক দর্শনার্থী আসতেন। এই গুণী ব্যক্তিত্বের স্মরণে ঝিনাইদহ শহরে একটি রাস্তার নামকরণও করা হয়েছে।
কে.পি. বসুর জীবনী
প্রখ্যাত গণিতবিদ কালীপদ বসু জন্মগ্রহণ করেন ১৮৬৫ সালে, ঝিনাইদহ জেলার হরিশংকরপুর গ্রামে। তাঁর পিতা মহিমা চরণ বসু ছিলেন স্থানীয় রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারী। ছোটবেলা থেকেই গণিত বিষয়ে তাঁর অসাধারণ প্রতিভা প্রকাশ পায়। প্রাথমিক শিক্ষা শেষে তিনি ভর্তি হন লর্ড রিপন কলেজে এবং সেখান থেকেই গণিতে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৮৯২ সালে তিনি ঢাকা কলেজে গণিতের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। গণিতশাস্ত্রের উন্নয়নে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য তাঁকে আধুনিক বীজগণিতের পথিকৃৎ বলা হয়। তিনি বিভিন্ন গবেষণা পরিচালনা করেছেন আলজেব্রা ও জ্যামিতি নিয়ে এবং লিখেছেন অনেক গুরুত্বপূর্ণ বই। এছাড়াও, তিনি কলকাতায় 'কে.পি. বসু পাবলিশিং কোম্পানি' প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৪ সালে পার্নিসাস ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
যেভাবে যেতে পারবেন
ঢাকার গাবতলী থেকে ঝিনাইদহগামী বাস সার্ভিস যেমন রয়েল, সোনার তরী, এস.বি পরিবহন, জেআর পরিবহন, চুয়াডাঙ্গা এক্সপ্রেস, হানিফ, দর্শনা ও পূর্বাশা ডিলাক্সে যাতায়াত করা যায়। ঝিনাইদহ শহর থেকে স্থানীয় যানবাহন ব্যবহার করে হরিশংকরপুরে অবস্থিত কে.পি. বসুর বাড়িতে সহজেই পৌঁছানো যায়।
থাকার ব্যবস্থা
ঝিনাইদহ শহরে পর্যটকদের জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল ও গেস্ট হাউজ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো – হোটেল রাতুল, হোটেল রেডিয়েশন, হোটেল জামান, নয়ন হোটেল, হোটেল ড্রিম ইন এবং ক্ষণিকা।
খাবারের স্থান
খাবারের জন্য ঝিনাইদহ শহরে রয়েছে নানা ধরনের রেস্টুরেন্ট। বিশেষ করে পায়রা চত্বর এলাকায় জনপ্রিয় কিছু রেস্টুরেন্ট হলো – ক্যাফে কাশফুল, কস্তুরি হোটেল, অজয় কিচেন, লিজা ফাস্ট ফুড, ইং কিং চাইনিজ, রূপসী বাংলা রেস্তোরা, সুইট হোটেল ও আহার রেস্তোরাঁ।
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
ঝিনাইদহ ভ্রমণে গেলে শুধু কে.পি. বসুর বাড়িই নয়, আরো কিছু দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছে – ঐতিহাসিক বারোবাজার, নলডাঙ্গা রাজবাড়ী রিসোর্ট, মিয়ার দালান ও আধুনিক বিনোদনকেন্দ্র জোহান ড্রিম ভ্যালী পার্ক।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!