খৈয়াছড়া ঝর্ণা (Khoiyachora Waterfall) চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম ঝর্ণা। খৈয়াছড়া ঝর্ণায় রয়েছে নয়টি ধাপ এবং এর অসাধারণ সৌন্দর্য্য দেখতে দেশী-বিদেশী পর্যটকরা প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন। গ্রামের সবুজ শ্যামল পথ, পাহাড়ি দৃশ্য এবং মেঠো পথের অনন্য মিশ্রণে খৈয়াছড়া ঝর্ণা প্রকৃতি প্রেমিকদের কাছে অমূল্য রত্ন। তাই, প্রকৃতিপ্রেমীরা খৈয়াছড়া ঝর্ণাকে বাংলাদেশের "ঝর্ণা রানী" হিসেবে অভিহিত করেছেন।
খৈয়াছড়া ঝর্ণাটি বড়তাকিয়া বাজার থেকে ৪.২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বাঁশের সাকো, আঁকাবাঁকা ক্ষেতের আইল, পাহাড়ী পথ, ছড়া, ঝিরিপথ পেরিয়ে খৈয়াছড়া ঝর্ণায় পৌঁছালে পথের সকল ক্লান্তি মুছে যায়। ঝর্ণার শীতল জল ছোঁয়ার পর অপার্থিব প্রশান্তি অনুভব হয়।
খৈয়াছড়া ঝর্ণা যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে খৈয়াছড়া ঝর্ণা
বাসে: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যে কোনো বাসে করে খৈয়াছড়া ঝর্ণায় যাওয়া সম্ভব। এস আলম, শ্যামলি, সৌদিয়া, ইউনিক, হানিফ, ঈগল, এনা প্রভৃতি পরিবহনের নন-এসি বাসের ভাড়া ৪২০-৪৮০ টাকা, এবং এসি বাসের মধ্যে গ্রিনলাইন, সৌদিয়া, সোহাগ, টি আর ইত্যাদির ভাড়া ৮০০-১১০০ টাকা।
ট্রেনে: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যে কোনো আন্তঃনগর ট্রেনে চড়ে ফেনী স্টেশন আসতে হবে। শ্রেণী অনুযায়ী ট্রেন ভাড়া ২৬৫-৯০৯ টাকা। ফেনী স্টেশন থেকে রিক্সা বা অটোরিক্সায় ফেনী মহিপাল বাস স্ট্যান্ড যেতে হবে এবং সেখান থেকে লোকাল বাসে মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজারের কাছে পৌঁছাতে হবে।
চট্টগ্রাম থেকে খৈয়াছড়া ঝর্ণা
চট্টগ্রাম নগরের অলংকার সিটি গেইট থেকে কিছু লোকাল বাসে করে মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজারের কাছে খৈয়াছড়া আইডিয়াল স্কুলের সামনে পৌঁছানো যায়।
সিলেট থেকে খৈয়াছড়া ঝর্ণা
সিলেট থেকে বাস বা ট্রেনে চট্টগ্রামগামী যে কোনো বাসে চড়ে মিরসরাইয়ের ঠাকুরদিঘী বাজারে নামতে হবে। ট্রেনেও আসা সম্ভব, যেমন পাহাড়িকা এক্সপ্রেস বা উদয়ন এক্সপ্রেসে চট্টগ্রাম আসতে হবে এবং সেখান থেকে বাসে মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজারে আসতে হবে।
বড়তাকিয়া বাজার থেকে খৈয়াছড়া ঝর্ণা
খৈয়াছড়া আইডিয়াল স্কুলের কাছ থেকে ১০০ টাকা সিএনজি ভাড়া করে খৈয়াছড়া ঝর্ণার ঝিরির কাছে যাওয়া যাবে। এছাড়া, ট্র্যাকিং করেও যেতে পারবেন। স্থানীয়দের থেকে পথ জানতে পারবেন, এবং হাইওয়ে থেকে ১০ মিনিট হাঁটার পর রেললাইন পাওয়া যাবে। রেললাইন পেরিয়ে ১০-১৫ মিনিট হাঁটলেই ঝিরি পৌঁছানো যাবে।
কোথায় থাকবেন
খৈয়াছড়া ঝর্ণার কাছাকাছি থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই, তবে বিশেষ প্রয়োজনে সীতাকুণ্ডে কিছু হোটেল পাওয়া যায়, যেমন সৌদিয়া ও সাইমুন হোটেল। এদের ভাড়া ৩০০ থেকে ১৬০০ টাকা।
কোথায় খাবেন
খৈয়াছড়া ঝর্ণার পথে কিছু স্থানীয় খাবার হোটেল রয়েছে। সেখানে স্বল্পমূল্যে খাবার পাওয়া যায়, তবে বিকাল ৫ টার পর সেগুলো বন্ধ হয়ে যায়। সীতাকুণ্ডে সৌদিয়া রেস্তোরা, আপন রেস্তোরা বা আল আমিন রেস্টুরেন্টে খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!