মহামায়া লেক বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর কৃত্রিম জলাশয়, যা চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠাকুরদিঘী বাজার থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রায় ১১ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই লেকটি পাহাড়ের কোল ঘেঁষে স্থাপন করা হয়েছে। লেকের স্বচ্ছ জলরাশি, পাহাড়ি গুহা, রাবার ড্যাম এবং মনোমুগ্ধকর ঝর্ণার মিতালী এখানে ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করে। লেকের টলমলে জলে বোটে ঘুরতে বা পাহাড়ি ঝর্ণার ঠাণ্ডা পানিতে ভিজে প্রশান্তি লাভ করা যায়।
এছাড়াও এখানে কায়াকিং করার সুযোগ রয়েছে এবং চাইলে লেকের ধারে তাবুতে রাত কাটানো যায়। মহামায়া লেকটি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে এবং এর কিছু অংশ সেচের কাজে ব্যবহৃত হয়।
মহামায়া লেকে যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে বাসে
ঢাকার যেকোনো জায়গা থেকে চট্টগ্রামগামী এস আলম, শ্যামলী, সৌদিয়া, ইউনিক, হানিফ, ঈগল, এনা ইত্যাদি বাসে উঠতে পারেন। নন-এসি বাসের ভাড়া ৪৫০-৫০০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ১০০০-১২০০ টাকা। বাস থেকে মিরসরাইয়ের ঠাকুরদিঘী বাজারে নেমে জনপ্রতি ২০ টাকায় সিএনজি ভাড়ায় মহামায়া ইকোপার্কের মেইন গেট পর্যন্ত পৌঁছানো যায়। সিএনজি রিজার্ভ করতে চাইলে ভাড়া পড়বে ৮০-১৫০ টাকা।
ঢাকা থেকে ট্রেনে
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেনে ফেনী স্টেশনে নামতে হবে। ট্রেন ভাড়া শ্রেণীভেদে ২৫০-১০৩৫ টাকা। ফেনী স্টেশন থেকে অটো/রিকশায় ১০-১৫ টাকা ভাড়ায় ফেনী মহিপাল বাস স্ট্যান্ড পৌঁছে লোকাল বাসে ৩০-৫০ টাকা ভাড়ায় ঠাকুরদিঘী বাজারে যাওয়া যায়।
চট্টগ্রাম থেকে
চট্টগ্রামের মাদারবাড়ি ও কদমতলী বাস স্টপ থেকে সরাসরি ঠাকুরদিঘী বাজারগামী বাস, সিএনজি বা অটোরিকশা পাওয়া যায়। মাদারবাড়ি থেকে "চয়েস" বাসে ৮০ টাকা ভাড়ায় ঠাকুরদিঘী পৌঁছানো যায়।
সিলেট থেকে
সিলেট থেকে বাস বা ট্রেনে মিরসরাইয়ের ঠাকুরদিঘী বাজার পর্যন্ত যাওয়া সম্ভব। বাসে আসলে চট্টগ্রামগামী বাসে উঠতে হবে। ট্রেনে ফেনী স্টেশনে নেমে লোকাল বাসে ঠাকুরদিঘী বাজার পৌঁছানো যায়।
লেকে কায়াকিং ও নৌ ভ্রমণের খরচ
কায়াকিং করতে দুইজন বসার উপযোগী একটি কায়াকের জন্য ৩০ মিনিটের ভাড়া ২০০ টাকা এবং এক ঘণ্টার জন্য ৩০০ টাকা। শিক্ষার্থীরা ১৫০-২০০ টাকার ডিসকাউন্ট পেয়ে থাকেন। ইঞ্জিন নৌকার ভাড়া ৮০০-১৫০০ টাকার মধ্যে, যেটি ৮-২০ জন নিয়ে লেকের ঝর্ণা এবং আশপাশের স্থান ঘুরিয়ে দেখায়।
খাওয়া-দাওয়া
লেকে খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই নিজে খাবার নিয়ে যেতে হবে। ঠাকুরদিঘী বাজারে ছোট হোটেলে দেশি খাবার পাওয়া যায়। মিরসরাই বা সীতাকুণ্ড বাজারেও কিছু হোটেল রয়েছে।
থাকার ব্যবস্থা
মিরসরাইয়ে ভালো মানের আবাসিক হোটেল না থাকায় সীতাকুণ্ড বা চট্টগ্রামে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। সীতাকুণ্ডের সাধারণ মানের হোটেলের ভাড়া ৩০০-১৬০০ টাকার মধ্যে। চট্টগ্রাম শহরের নিউমার্কেট বা স্টেশন রোড এলাকায় উন্নত মানের হোটেলে থাকতে পারেন।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!