ঝরঝরি ঝর্ণা, সীতাকুণ্ড

অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় ট্রাভেলারদের জন্য সীতাকুণ্ড অঞ্চলে অবস্থিত ঝরঝরি ঝর্ণা ট্রেইল একটি অসাধারণ গন্তব্য। এই ট্রেইল ধরে প্রায় এক ঘণ্টা হাঁটলেই প্রথমে যে ঝর্ণা দেখা যায়, তার নাম ঝরঝরি ঝর্ণা (Jhorjhori Waterfall)। বাম দিক দিয়ে আরো উপরে উঠলে দেখা মেলে আরও বেশ কিছু সুন্দর খুম ও ক্যাসকেডের। ঝরঝরি ঝর্ণার উপরের দিকে পৌঁছানো বেশ কষ্টকর, তাই বর্ষার শেষে যাওয়াই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।

ঝরঝরি ঝর্ণায় যাওয়ার উপায়

ঢাকা থেকে বাসে করে মিরসরাই পেরিয়ে পন্থিছিলা (Ponthichila) বাজারে নামতে হবে। বাজার থেকে পূর্ব দিকে পায়ে হেঁটে রেললাইনের দিকে যেতে হবে। রেললাইন ধরে ৪-৫ মিনিট চলার পর ডানদিকে একটি মাটির রাস্তা পাবেন। সেই রাস্তায় চলতে থাকলে আপনি দ্রুত কানি ঝিরির কাছে পৌঁছাতে পারবেন। প্রায় ৩০ মিনিট হাঁটলে, বাম দিকে একটি সরু ঝিরিপথ দেখতে পাবেন। ৫-৭ মিনিট হাঁটার পর একটি পাহাড় পেরিয়ে ডানদিকে এগোলে উপরে চন্দ্রনাথ মন্দির দেখতে পাবেন। আরও ২০ মিনিট হাঁটলেই ঝরঝরি ঝিরি দেখা যাবে, এবং ২০ মিনিট পর সেই ঝিরি ধরে সামনে গেলে পৌঁছে যাবেন ঝরঝরি ঝর্ণায়। পন্থিছিলা থেকে ঝরঝরি ট্রেইল পর্যন্ত পৌঁছাতে প্রায় ১ ঘণ্টা সময় লাগে।

পুরো ট্রেইল দেখে ফিরে আসতে প্রায় ৫ ঘণ্টা সময় লাগবে। যদি পথ চিনতে সমস্যা হয়, তবে স্থানীয় কারো সাহায্য নিতে পারেন; তারা রাস্তাটি দেখিয়ে দিবে। পুরো ট্রেইল সম্পন্ন করতে গাইডের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

থাকা ও খাওয়া

সীতাকুণ্ডে কিছু সাধারণ মানের হোটেল পাওয়া যায়। সীতাকুণ্ড বাজারে "হোটেল সাইমুন" নামক হোটেলে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে রুম পাওয়া যায়। সম্প্রতি সীতাকুণ্ড পৌরসভার ডি টি রোডে "হোটেল সৌদিয়া" নামে একটি আবাসিক হোটেল চালু হয়েছে, যেখানে ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকায় বিভিন্ন ধরনের রুম পাওয়া যায়। বুকিংয়ের জন্য 01991-787979, 01816-518119 নাম্বারে ফোন করতে পারেন। আরো ভালো থাকার জন্য চট্টগ্রামে আসতে হবে। এছাড়া নয়দুয়ারি বাজারে কিছু মধ্যম মানের হোটেল পাওয়া যায়। সীতাকুণ্ডে খাবারের জন্য বেশ কিছু হোটেল রয়েছে, এর মধ্যে "আল আমীন হোটেল" বেশ ভালো মানের খাবার দেয়। চট্টগ্রামে গেলে সব ধরণের খাবারের রেস্টুরেন্ট পাবেন।

ভ্রমণ টিপস

যেহেতু এটি একটি ট্রেকিং ট্রেইল, উঁচু নিচু পাহাড় ও পাথুরে ঝিরিপথে হাঁটতে হবে, তাই কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সঙ্গে নেওয়া উচিত।

নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যাকপ্যাক, অপ্রয়োজনীয় কিছু না নেওয়া – পানির বোতল – গামছা বা রুমাল – মাথার ক্যাপ – আরামদায়ক পোশাক – ভালো গ্রিপ সহ জুতা – ফার্স্ট এইড কিট ও প্রয়োজনীয় ঔষধ

এছাড়া পুরো ট্রেইল কভার করতে চাইলে সময় নিয়ে রওনা হওয়া উচিত। নতুন ট্রেকার হলে স্থানীয় কাউকে গাইড হিসেবে নেওয়া উচিত।

– ঝর্ণার পুরো রূপ দেখতে চাইলে বর্ষাকালে ভ্রমণ করুন। – বর্ষাকালে হঠাৎ বৃষ্টিতে ফ্ল্যাশ ফ্লাড হতে পারে, সতর্ক থাকুন। – পথ পিচ্ছিল হতে পারে, হাঁটার সময় সতর্ক থাকুন। – খুমগুলোর গভীরতা অনেক, সাঁতার না জানলে সাবধানে থাকুন। – বর্ষাকালে দড়ি সঙ্গে রাখা ভাল, প্রয়োজন হতে পারে। – ভালো গ্রিপের জুতা ব্যবহার করুন। – স্থানীয়দের সাথে সদ্ভাবপূর্ণ আচরণ করুন। – পরিবেশ নোংরা করবেন না, অপচনশীল আবর্জনা সঙ্গে নিয়ে আসুন।

সীতাকুণ্ডের আশেপাশে দর্শনীয় স্থানসমূহ

ঝরঝরি ঝর্ণা ছাড়াও সীতাকুণ্ডে দেখতে উপযুক্ত কিছু স্থান রয়েছে: – কমলদহ ঝর্ণা – সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক – চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মন্দির – কুমিরা ঘাট – গুলিয়াখালী বীচবাঁশবাড়িয়া বীচ

ঝরঝরি ঝর্ণা, সীতাকুণ্ড এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
181.53 কিমি
চট্টগ্রাম থেকে
35.45 কিমি
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
শংকর মঠ
ছাগলকান্দা ঝর্ণা
কমলদহ ঝর্ণা
সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক
সুপ্তধারা ঝর্ণা
হাজারিখিল অভয়ারণ্য
চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মন্দির
বাওয়াছড়া লেক
গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত
সোনাইছড়ি ট্রেইল
নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা ও ট্রেইল
বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত
খৈয়াছড়া ঝর্ণা
কুমিরা ঘাট, সীতাকুণ্ড
কুমারীকুন্ড
মহামায়া লেক
চালন্দা গিরিপথ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ভাটিয়ারী লেক
মানিকছড়ি মং রাজবাড়ী

মন্তব্য

এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন