পরীর দালান

টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার হেমনগর গ্রামে অবস্থিত ঐতিহাসিক পরীর দালান, যা হেমনগর জমিদার বাড়ি নামেও পরিচিত। প্রায় ৬০ একর জমির উপর অবস্থিত এই স্থাপনা দিল্লি ও কলকাতার দক্ষ কারিগরদের তৈরি। যদিও এখানে পরীদের আবাসস্থল বা তাদের নির্মিত ভবন নেই, তবুও দালানের দেয়াল, পিলার এবং দরজায় রঙিন কাচের ফুল, লতা, তারা, ও গাছের নকশা এবং দুইটি বিশেষভাবে তৈরি পরীর ভাস্কর্য দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। এই রাজবাড়ির উপরে নির্মিত রাজসিক পরীর ভাস্কর্যের জন্যই দালানটির নামকরণ করা হয় "এঞ্জেল হাউজ" বা "পরীর দালান।"

হেমনগর রাজবাড়ির চত্বর ঘেরা সীমানা প্রাচীরের ভেতরে রয়েছে তিনটি আলাদা ভবন, ২৫টি কক্ষ, শান বাঁধানো পুকুর ঘাট, খেলার মাঠ এবং পাসা কুয়া। দালানের কাছেই জমিদার হেমচন্দ্র চৌধুরীর আত্মীয়দের জন্য নির্মিত সাতটি সুরম্য ভবন রয়েছে। এছাড়া, পরীর দালানের কাছাকাছি প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে আরো অনেক প্রাচীন স্থাপনা রয়েছে। বর্তমানে এই দালানটি হেমনগর ডিগ্রি কলেজ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ইতিহাস

জমিদার হেমচন্দ্র চৌধুরীর পিতা কালিবাবু চৌধুরী শিমুলিয়া পরগণার জমিদারি কিনে নেন সূর্যাস্ত আইনের আওতায়। হেমচন্দ্র চৌধুরী ১৮৮০ সালে মধুপুরের আমবাড়িয়া রাজবাড়ি পরিত্যাগ করে গোপালপুর উপজেলার সুবর্ণখালি গ্রামে নতুন রাজবাড়ি নির্মাণ করেন। হেমচন্দ্রের নামানুসারে এই এলাকার নাম হয় "হেমনগর।" পরবর্তীতে, ১৮৯০ সালে সুবর্ণখালি গ্রাম যমুনার ভাঙ্গনের কবলে পড়লে তিনি শিমলা পাড়া গ্রামে পরীর দালান নির্মাণ করেন।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের দূরত্ব প্রায় ৮৩ কিলোমিটার। বাস বা ট্রেনে টাঙ্গাইল পৌঁছানো যায়। বাসে যেতে সময় লাগে প্রায় ৩ ঘণ্টা, ভাড়া ৪০০ থেকে ১০০০ টাকা। ট্রেনে কমলাপুর বা বিমানবন্দর স্টেশন থেকে বিভিন্ন ট্রেনে টাঙ্গাইল যাওয়া যায়, ভাড়া ৯৫ থেকে ৩৯৭ টাকা।

টাঙ্গাইল থেকে হেমনগর রাজবাড়ি প্রায় ৪৭ কিলোমিটার দূরে। গোপালপুর হয়ে সিএনজি বা অটোরিকশায় চড়ে হেমনগর রেলস্টেশনের পাশে রাজবাড়ি পৌঁছানো যায়।

কোথায় থাকবেন

এক দিনে ঢাকা থেকে যাতায়াত করা সম্ভব হলেও রাত্রিযাপনের প্রয়োজন হলে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন হোটেলে থাকা যায়। উল্লেখযোগ্য হোটেলগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • আফরিন হোটেল
  • হোটেল সাগর রেসিডেন্সিয়াল
  • নিরালা হোটেল
  • যমুনা রিসোর্ট।

কোথায় খাবেন

টাঙ্গাইলে খাওয়ার জন্য নিরালা মোড় এলাকায় কিছু জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট আছে। নিরালা মোড়ের কাছেই বিখ্যাত পোড়াবাড়ির চমচম পাওয়া যায়, যা অবশ্যই চেখে দেখতে হবে।

টাঙ্গাইলের অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পরীর দালান ঘুরে আপনি টাঙ্গাইলের অন্যান্য আকর্ষণীয় স্থানেও যেতে পারেন, যেমন:

  • মহেরা জমিদার বাড়ি
  • পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি
  • নাগরপুর জমিদার বাড়ি
  • এসপি পার্ক।

ভ্রমণের সময় টাঙ্গাইলের বিখ্যাত শাড়ির পাইকারি বাজার পাথরাইল থেকেও শপিং করা যেতে পারে।

পরীর দালান এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
101.3 কিমি
টাঙ্গাইল থেকে
35.41 কিমি
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
২০১ গম্বুজ মসজিদ
ধনবাড়ি মসজিদ
ধনবাড়ি নবাব মঞ্জিল
চায়না বাঁধ
বঙ্গবন্ধু সেতু রিসোর্ট
যমুনা সেতু
বঙ্গবন্ধু যমুনা ইকোপার্ক
পীরগাছা রাবার বাগান
জলছত্র আনারস হাট
এলেঙ্গা রিসোর্ট
মধুপুর জাতীয় উদ্যান
সন্তোষপুর রাবার বাগান
নবরত্ন মন্দির
পাকুল্লা মসজিদ
লুইস ভিলেজ রিসোর্ট এন্ড পার্ক
করটিয়া জমিদার বাড়ি
দয়াময়ী মন্দির
মিয়াবাড়ি জামে মসজিদ
আদম কাশ্মীর মাজার
শাহ জামালের মাজার

মন্তব্য

এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন