টাঙ্গাইল জেলার মধুপুরে অবস্থিত পীরগাছা রাবার বাগান (Pirgachha Rubber Garden) গড়ে উঠেছে ১৯৮৬ সালে, প্রকৃতির অনন্য রূপের মেলবন্ধনে। ৩,০০০ একর এলাকা জুড়ে থাকা এই বাগানে রয়েছে প্রায় ১ লাখ ৫৪ হাজার রাবার গাছ। ঢাকার কাছাকাছি এই মনোমুগ্ধকর জায়গাটি স্বল্প সময়ে ঘুরে আসার জন্য আদর্শ।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর পরিবেশ
সূর্যের আলো যখন সুউচ্চ রাবার গাছের সবুজ পাতার ফাঁক দিয়ে সোনালি রঙ ছড়িয়ে দেয়, তখন মধুপুর রাবার বাগানের দৃশ্য হয়ে ওঠে মুগ্ধকর। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাগানটি ভিন্ন ভিন্ন সাজে সজ্জিত হয়। বাগানের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে অফিসের দিকে যাওয়ার প্রশস্ত রাস্তা। অফিসের পাশে রঙিন চাল আর ফুলগাছে ঘেরা একটি আধাপাকা গেস্ট হাউজ রয়েছে। বৃষ্টি কিংবা জ্যোৎস্নার রাতে এখান থেকে রাবার বাগানের সৌন্দর্য আরও বেশি মনোমুগ্ধকর লাগে।
কারখানা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা
বাগান থেকে কিছু দূরে রয়েছে সুবিশাল রাবার কারখানা। এখানে রাবার গাছ থেকে সংগৃহীত সাদা কাঁচা রাবার প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি হয় বড় বড় রাবার শিট। কারখানার প্রতিটি ধাপ নিজের চোখে দেখা এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
গারো আদিবাসী ও বন্যপ্রাণী
বাগানের মাঝামাঝি এবং শেষ প্রান্তে রয়েছে গারো আদিবাসীদের বাসস্থান। এখানকার মধুপুর গড়ে দেখা মেলে নানান বন্যপ্রাণীর, যা প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয়।
যেভাবে যাবেন
পীরগাছা রাবার বাগানে পৌঁছানোর জন্য প্রথমে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলায় যেতে হবে। ঢাকার মহাখালী থেকে মধুপুরের সরাসরি বাসে যেতে সময় লাগবে প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা, ভাড়া পড়বে ২০০-৩০০ টাকা। মধুপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি বা অটোরিকশায় প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত রাবার বাগানে পৌঁছানো যাবে। পুরো বাগান মোটরসাইকেলে ঘুরে দেখতে জনপ্রতি খরচ হবে ৩০০-৬০০ টাকা।
থাকার ব্যবস্থা
বাগানের গেস্ট হাউজে অনুমতি সাপেক্ষে রাত যাপন করা সম্ভব। এছাড়া মধুপুর উপজেলার বাস স্ট্যান্ডের কাছাকাছি ভালো মানের কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড় এলাকাতেও বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল ও গেস্ট হাউজ পাওয়া যাবে।
খাওয়ার ব্যবস্থা
মধুপুরে খাওয়ার জন্য রয়েছে নানান মানের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট। রাবার বাগানে যাওয়ার পথে কিছু ভালো রেঁস্তোরাও চোখে পড়বে। বিশেষভাবে মধুপুরের সুস্বাদু আনারস আর টাঙ্গাইলের বিখ্যাত পোড়াবাড়ির চমচমের স্বাদ নেওয়া অবশ্যই উচিত।
অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
পীরগাছা রাবার বাগান ভ্রমণের পাশাপাশি মধুপুর জাতীয় উদ্যান, ২০১ গম্বুজ মসজিদ, গুপ্ত বৃন্দাবন, এসপি পার্ক, ধনবাড়ি, পাকুটিয়া এবং মহেরা জমিদার বাড়ি ভ্রমণ করতে পারেন।
প্রকৃতি আর ইতিহাসের মেলবন্ধনে টাঙ্গাইলের এই জায়গাগুলো আপনার ভ্রমণকে স্মরণীয় করে তুলবে।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!