কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি প্রাচীন গম্বুজবিশিষ্ট শেখ মাহমুদ শাহ্ মসজিদ। ১৬৬৪ খ্রিষ্টাব্দে সুবেদার শায়েস্তা খাঁর শাসনামলে তৎকালীন বিখ্যাত ব্যবসায়ী শাহ মাহমুদ এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদের মূল নাম শাহ মাহমুদ মসজিদ হলেও ইউনেস্কো এটি মুসলিম স্থাপত্যের নিদর্শন হিসেবে "শাহ মোহাম্মদ মসজিদ" নামে পরিচিত করেছে।
মোঘল স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত বর্গাকৃতির এই মসজিদটি আড়াই ফুট প্রাচীর দিয়ে ঘেরা উঁচু প্ল্যাটফর্মে অবস্থিত। মসজিদের প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য ৩২ ফুট। এর অভ্যন্তরীণ এবং বাইরের অংশ সুলতানি আমলের চিত্রফলকে সজ্জিত। মসজিদের চার কোণে চারটি আট কোণাকৃতির বুরুজ রয়েছে, পূর্ব দিকের দেয়ালে ৩টি দরজা এবং পশ্চিম দেয়ালে তিনটি পোড়ামাটির চিত্রফলক দিয়ে নির্মিত তিনটি মেহরাব রয়েছে। মসজিদের প্রবেশপথে একটি দো-চালা ঘর নির্মিত, যা "বালাখানা" নামে পরিচিত।
পূর্বে মসজিদের চার কোণে মূল্যবান চারটি পাথরের ফলক ছিল, যা দুর্বৃত্তরা চুরি করে নিয়ে গেছে। এই মসজিদ থেকে এক কিলোমিটার দূরে শেখ সাদি জামে মসজিদ অবস্থিত। কথিত আছে যে, শাহ মাহমুদ এবং শেখ সাদি দুই ভাই ছিলেন এবং শাহ মাহমুদ মসজিদ নির্মাণের ২০ বছর আগে শেখ সাদি মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সড়ক ও রেলপথে কিশোরগঞ্জ যাওয়া যায়। গুলিস্তান/গোলাপবাগ থেকে অনন্যা, যাতায়াত নন-এসি বাসে পাকুন্দিয়া হয়ে কিশোরগঞ্জ যাওয়া যায়। এছাড়া, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস, এগারসিন্ধু গোধূলি এবং এগারসিন্ধু প্রভাতী এক্সপ্রেস ট্রেনে কিশোরগঞ্জ পৌঁছানো যায়। কিশোরগঞ্জ পৌঁছে স্থানীয় পরিবহণে পাকুন্দিয়া উপজেলা হয়ে শেখ মাহমুদ শাহ্ মসজিদে পৌঁছানো সম্ভব।
কোথায় থাকবেন
কিশোরগঞ্জে ষ্টেশন রোডে হোটেল রিভারভিউ, হোটেল উজানভাটি, হোটেল গাংচিল, ক্যাসেল সালাম আবাসিক এবং হোটেল মোবারকসহ একাধিক আবাসিক হোটেল রয়েছে।
কিশোরগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ
কিশোরগঞ্জ জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে: নিকলি হাওর, অষ্টগ্রাম হাওর, কবি চন্দ্রাবতী মন্দির, নরসুন্দা লেকসিটি, দিল্লির আখড়া, সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু, পাগলা মসজিদ, শোলাকিয়া জামে মসজিদ, ইটনা হাওর, ইটনা শাহী মসজিদ, সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি, জঙ্গলবাড়ি দুর্গ, এগারসিন্ধুর দুর্গ, গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়ি, কুতুব শাহ্ মসজিদ।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!