উয়ারী বটেশ্বর

যারা প্রত্নতত্ত্বের নিদর্শন দেখতে ভালোবাসেন, তারা নরসিংদী জেলার বেলাবো উপজেলার উয়ারী ও বটেশ্বর গ্রাম ঘুরে আসতে পারেন। এই জায়গাটি একটি বিশাল দুর্গের চিহ্ন বহন করে বলে ধারণা করা হয়। উয়ারী বটেশ্বর এক সময় পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ নদীবন্দর ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল।

উয়ারী-বটেশ্বরের ইতিহাস

১৯৩৩ সালে প্রথমবারের মতো স্থানীয় শ্রমিকরা মাটি খনন করতে গিয়ে একটি কলসী আবিষ্কার করেন, যার ভেতরে বঙ্গভারতের প্রাচীনতম রৌপ্যমুদ্রা পাওয়া যায়। এরপর ১৯৫৫ সালে আরও কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন যেমন ত্রিকোণাকৃতি লৌহপিণ্ড আবিষ্কৃত হয়। পরে এখানে বিষ্ণুপট, পাথরের গুটিকা, লৌহ কুঠার, বল্লম, ব্রোঞ্জের পাত্রসহ নানা নিদর্শন পাওয়া গেছে। তবে অনেক নিদর্শন মানুষের অজ্ঞানতা ও লোভের কারণে হারিয়ে গেছে।

বর্তমানে উদ্ধার হওয়া বেশকিছু নিদর্শন নরসিংদির প্রত্নতাত্ত্বিক জনাব হাবিবুল্লাহর ব্যক্তিগত সংগ্রহশালা এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।

উয়ারী-বটেশ্বর থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরনো দুর্গ, নগর, রাস্তা ও মুদ্রাভাণ্ডার আবিষ্কৃত হয়েছে। ধারণা করা হয়, গ্রীক ভূগোলবিদ টলেমীর 'জিওগ্রাফিয়া' গ্রন্থে উল্লেখিত প্রাচীন ধনী শহর 'সোনাগড়া' আসলে উয়ারী ও বটেশ্বর। এই শহরের সাথে প্রায় ৪,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সিল্করুটের সংযোগ ছিল, যা একে বাংলাদেশের প্রাচীনতম মহাজনপদ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

ভ্রমণ নির্দেশিকা

কিভাবে যাবেন

ঢাকার গুলিস্তান ও সায়েদাবাদ থেকে সরাসরি নরসিংদী রুটে বাস পাওয়া যায়। এছাড়া কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনে নরসিংদী যাওয়া যায়।

মহাখালী থেকে ভৈরবগামী বিআরটিসি বাসে জনপ্রতি মাত্র ১০০ টাকায় মরজাল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত পৌঁছানো যায়। সেখান থেকে লোকাল বাসে ৩০ টাকায় বা সিএনজি রিজার্ভ করে ১২০-১৫০ টাকায় সরাসরি উয়ারী বটেশ্বর যাওয়া সম্ভব।

কোথায় থাকবেন

উয়ারী-বটেশ্বরে একটি সরকারি ডাকবাংলো রয়েছে, যা থাকার জন্য সেরা জায়গা। নন-এসি রুমের ভাড়া ৫০০ টাকা এবং এসি রুমের ভাড়া ১,২০০ টাকা। খাবারের ব্যবস্থা কেয়ারটেকার লিটনের (ফোন: ০১৯৩৩-২৫১২৪২) সাথে কথা বলে করা যায়।

নরসিংদী জেলা শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলেও স্বল্প মূল্যে থাকার সুযোগ পাওয়া যায়।

উয়ারী বটেশ্বর এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
52.49 কিমি
নরসিংদী থেকে
20.45 কিমি
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
সোনাইমুড়ি টেক
শাহ ইরানী (রঃ) মাজার শরীফ
বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান জাদুঘর
জমিদার গিরীশ চন্দ্র সেনের বাড়ি
লটকন বাগান
সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু
লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ি
লাল শাপলার বিল
একডালা দুর্গ
কুড়িখাই মেলা
শেখ মাহমুদ শাহ মসজিদ
এগারসিন্দুর দুর্গ
মনু মিয়া জমিদার বাড়ি
গিরিশ চন্দ্র সেনের বাড়ি
তিন গম্বুজ মসজিদ
ড্রিম হলিডে পার্ক
নিকলী হাওর
মোকাররম আলী শাহ (র:) দরগাহ
হেরিটেজ রিসোর্ট
অঙ্গনা রিসোর্ট

মন্তব্য

এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন