শেরে বাংলা স্মৃতি জাদুঘর

বরিশাল জেলা শহর থেকে মাত্র ২৪ কিলোমিটার দূরে, বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ইউনিয়নে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের স্মৃতিবিজড়িত ২৭ একর জমির ওপর নির্মিত হয়েছে শেরে বাংলা স্মৃতি জাদুঘর। স্থানীয়রা একে চাখার প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর নামেও চেনে।

অবিভক্ত বাংলার প্রধান মুখ্যমন্ত্রী ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ১৯০১ সালে পিতার মৃত্যুর পর কলকাতা হাইকোর্টে আইন ব্যবসার জন্য বরিশালে আসেন। পাশাপাশি, তিনি চাখারের জমিদারির দেখাশোনাও করতেন। শেরে বাংলার জীবন ও কীর্তি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ১৯৮৩ সালে সংস্কৃতি বিষয়ক অধিদপ্তরের অধীনে এই জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

জাদুঘরের বৈশিষ্ট্য

পাঁচ কক্ষ বিশিষ্ট এই জাদুঘরে রয়েছে:

  • তিনটি প্রদর্শনী কক্ষ, যেখানে শেরে বাংলার জীবন, কর্ম, ও ঐতিহাসিক চিত্র সংরক্ষিত রয়েছে।
  • একটি অফিস কক্ষ
  • একটি বিশ্রামাগার
  • একটি গ্রন্থাগার

জাদুঘরের বাম দিকে শেরে বাংলার একটি বিশাল প্রতিকৃতি রয়েছে। তার জীবন ও কর্মের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, রাজনৈতিক ও পারিবারিক ছবি, সংবাদপত্রে প্রকাশিত নানা প্রতিবেদন এখানে সংরক্ষিত। এছাড়া বিরল আলোকচিত্র, ব্যবহৃত আসবাব, ব্যক্তিগত চিঠিপত্র, সুন্দরবন থেকে শিকার করা কুমিরের মমি, অষ্টভুজাকৃতির মারীচী দেবীর মূর্তি, কালো পাথরের শিবলিঙ্গ, ব্রোঞ্জের বৌদ্ধ মূর্তি, স্বর্ণমুদ্রা, তাম্র মুদ্রা, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক সামগ্রী রয়েছে।

বর্তমানে প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের অধীনে থাকা এই জাদুঘরে প্রতিদিন বহু দর্শনার্থী আসেন।

জাদুঘরের সময়সূচি ও প্রবেশমূল্য

সময়সূচি:

  • গ্রীষ্মকাল: সকাল ১০টা – সন্ধ্যা ৬টা
  • শীতকাল: সকাল ৯টা – বিকাল ৫টা
  • প্রতিদিন দুপুর ১টা – ১:৩০ পর্যন্ত বন্ধ থাকে।
  • সাপ্তাহিক ছুটি রবিবার
  • শুক্র ও সোমবার জাদুঘর অর্ধদিবস খোলা থাকে।
  • সরকার নির্ধারিত ছুটির দিনগুলোতে জাদুঘর বন্ধ থাকে।

💰 প্রবেশমূল্য:

  • সাধারণ দর্শনার্থী: ১০ টাকা
  • শিশু (৫ বছরের বেশি): ৫ টাকা
  • ৫ বছরের কম শিশু: বিনামূল্যে
  • সার্কভুক্ত দেশের দর্শনার্থী: ২৫ টাকা
  • অন্যান্য বিদেশি দর্শনার্থী: ১০০ টাকা

কীভাবে যাবেন?

সড়কপথ:

  • ঢাকার গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে হানিফ, লাবিবা, ইম্পেরিয়াল, এনা, দিগন্ত, সোহাগ, ঈগল, শাকুরা, বিআরটিসি পরিবহনের বাসে বরিশাল পৌঁছানো যায়।
  • পদ্মা সেতু হয়ে বরিশালে পৌঁছানোর সুবিধা রয়েছে।

নৌপথ:

  • সদরঘাট থেকে মানামি, এডভেঞ্চার, সুন্দরবন, সুরভী, পারাবত, কীর্তনখোলা, গ্রীন লাইন লঞ্চে বরিশাল যাওয়া যায়।

আকাশপথ:

  • হযরত শাহ্‌ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ডোমেস্টিক এয়ারলাইন্সে বরিশাল যেতে পারেন।

বরিশাল শহর থেকে লোকাল বাস বা সিএনজি রিজার্ভ নিয়ে চাখারে শেরে বাংলা স্মৃতি জাদুঘরে পৌঁছানো যাবে।

কোথায় থাকবেন?

বরিশালের কিছু জনপ্রিয় হোটেল:
🏨 গ্র্যান্ড প্লাজা, রিচমার্ট গেস্ট হাউজ, এরিনা, সেডোনা, এথেনা, রোদেলা
কম বাজেটে থাকতে চাইলে পোর্ট রোড ও সদর রোডের আশপাশে ভালো মানের হোটেল পাবেন।

কোথায় খাবেন?

🍽 চাখারে সাধারণ মানের হোটেলে দেশীয় খাবার পাবেন।
🍛 বরিশাল শহরে চাইনিজ, বাঙালি ও ফাস্টফুড রেস্টুরেন্ট রয়েছে।
🍮 বিশেষ খাবার:

  • মলিদা ও গৌরনদীর দধি বরিশালের বিখ্যাত খাবার।
  • হোটেল সকাল সন্ধ্যার লুচি-সবজি ও রসমালাই বেশ জনপ্রিয়।

বরিশালের অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

📍 শাপলা গ্রাম সাতলা
📍 দুর্গা সাগর দীঘি
📍 গুটিয়া মসজিদ
📍 শঙ্কর মঠ
📍 বিবির পুকুর
📍 মিয়াবারি জামে মসজিদ
📍 অক্সফোর্ড মিশন
📍 লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি
📍 ভাসমান পেয়ারা বাগান

শেরে বাংলা স্মৃতি জাদুঘর ভ্রমণের পাশাপাশি বরিশালের অন্যান্য দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখার সুযোগ মিস করবেন না! 

শেরে বাংলা স্মৃতি জাদুঘর এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
113.78 কিমি
বরিশাল থেকে
18.94 কিমি
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
গুটিয়া মসজিদ
ভাসমান পেয়ারা বাজার
দুর্গাসাগর দিঘী
কীর্তিপাশা জমিদার বাড়ি
লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি
পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি
নয় গম্বুজ মসজিদ
শাপলা গ্রাম, সাতলা
গাবখান সেতু
সুজাবাদ কেল্লা
সাতুরিয়া জমিদার বাড়ি
অক্সফোর্ড মিশন
বিবির পুকুর
বঙ্গবন্ধু উদ্যান বেলস পার্ক
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের পৈত্রিক বাড়ী
রায়েরকাঠী জমিদার বাড়ি
বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ
ডিসি পার্ক, পিরোজপুর
ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক
শেখ রাসেল শিশু পার্ক

মন্তব্য

এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন