ময়নামতি জাদুঘর

কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে সালমানপুরে অবস্থিত ময়নামতি জাদুঘর বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক সংগ্রহশালা। এখানে কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে খননকালে আবিষ্কৃত সপ্তম ও অষ্টম শতাব্দীর ৪২টি সংরক্ষণাগারে রাখা দুর্লভ নিদর্শন সংরক্ষিত আছে। এসব নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে ব্রোঞ্জ ও পাথরের মূর্তি, বিশাল ব্রোঞ্জের ঘন্টা, স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা, পোড়ামাটির ফলক, ব্রোঞ্জ, তামা ও লোহার সামগ্রী, মাটির খেলনা, কাঠের নিদর্শন, মৃৎশিল্প, এবং প্রাচীন হস্তলিপির পাণ্ডুলিপি। এছাড়াও, জাদুঘরের চারপাশে বিশ্রামাগার ও মনোরম ফুলের বাগান গড়ে তোলা হয়েছে।

ময়নামতির ইতিহাস

কুমিল্লার শ্রীভবদের মহাবিহার, কোটিলা মুড়া, চারপত্র মুড়া, রূপবান মুড়া, ইটাখোলা, আনন্দ বিহার, রানীর বাংলা ও ভোজ রাজার বাড়ি থেকে পাওয়া মূল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংরক্ষণের জন্য ১৯৬৫ সালে কোটবাড়ির শালবন বিহারের দক্ষিণ পাশে ময়নামতি জাদুঘর স্থাপন করা হয়। পরে, ১৯৭১ সালে জাদুঘরের স্থান সংকুলানের কারণে মূল ভবনের দক্ষিণ অংশ সম্প্রসারণ করা হয়।

প্রবেশমূল্য

  • প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য: ২০ টাকা
  • ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য: ফ্রি
  • সার্কভুক্ত দেশের বিদেশি দর্শনার্থীদের জন্য: ১০০ টাকা
  • অন্যান্য দেশের বিদেশি পর্যটকদের জন্য: ২০০ টাকা

জাদুঘরের সময়সূচি

  • রবিবার ও সরকারি ছুটির দিন: বন্ধ
  • সোমবার: অর্ধদিবস (দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা)

শীতকালীন সময়সূচি (অক্টোবর – মার্চ)

  • মঙ্গলবার-শনিবার: সকাল ৯টা – বিকেল ৫টা (বিরতি ১টা – ১:৩০)
  • শুক্রবার: সকাল ৯টা – ১২:৩০, বিকেল ২টা – ৫টা

গ্রীষ্মকালীন সময়সূচি (এপ্রিল – সেপ্টেম্বর)

  • মঙ্গলবার-শনিবার: সকাল ১০টা – বিকেল ৬টা (বিরতি ১টা – ১:৩০)
  • শুক্রবার: সকাল ১০টা – ১২:৩০, বিকেল ২:৩০ – ৬টা

কিভাবে যাবেন

ঢাকার সায়েদাবাদ বা কমলাপুর থেকে উপকূল, তিশা, স্টার লাইন, বিআরটিসি, রয়েল, এশিয়া লাইন পরিবহনে কুমিল্লা যাওয়া যায়। ভাড়া ২৫০ – ৪০০ টাকা। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে নেমে সিএনজি/অটোতে ময়নামতি জাদুঘরে সহজেই পৌঁছানো যায়।

কোথায় থাকবেন

কুমিল্লার কান্দিরপাড়, শাসনগাছা ও স্টেশন রোডে বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে। যেমন:

  • হোটেল ভিক্টোরিয়া
  • আমানিয়া রেস্ট হাউজ
  • হোটেল ড্রিম ল্যান্ড
  • মাসুম রেস্ট হাউজ
  • হোটেল মেলোডি
  • হোটেল নূর
  • হোটেল সোনালি

কোথায় খাবেন

কুমিল্লায় বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি স্থানীয় সুস্বাদু খাবারের জন্য বিখ্যাত মাতৃভাণ্ডারের রসমালাই, রসগোল্লা, ভগবতীর পেড়া, মিঠাই-এর মালাই চপ এবং মাতৃভূমির মালাইকারি অবশ্যই চেখে দেখতে পারেন।

কুমিল্লার অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

  • ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি
  • শালবন বিহার
  • ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক
  • বার্ড
  • ডাইনো পার্ক
  • রাজেশপুর ইকো পার্ক
  • ধর্মসাগর দীঘি

এই সুন্দর জাদুঘর এবং এর আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলো একদিনে ঘুরে দেখতে চাইলে কুমিল্লা হতে পারে আপনার পরবর্তী গন্তব্য!

ময়নামতি জাদুঘর এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
85.47 কিমি
কুমিল্লা থেকে
5.85 কিমি
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
শালবন বৌদ্ধ বিহার
নব শালবন বিহার
ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক
ডাইনো পার্ক
রূপবান মুড়া
ইটাখোলা মুড়া
আনন্দ বিহার
ফান টাউন পার্ক
ধর্মসাগর দীঘি
ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি
রানী ময়নামতির প্রাসাদ
নীলাচল
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী
কমলা রাণী দিঘী
হযরত শাহরাস্তির মাজার
কুল্লাপাথর শহীদ স্মৃতিসৌধ
জাহাপুর জমিদার বাড়ি
রাবার বাগান, পরশুরাম
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ
বর্ডার হাট, কসবা

মন্তব্য

এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন