কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বঙ্গ সোনাহাট ইউনিয়নে দুধকুমার নদীর ওপর অবস্থিত ঐতিহাসিক একটি সেতু হলো বঙ্গ সোনাহাট ব্রিজ (Bongo Sonahat Bridge)। ১৮৮৭ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে, লালমনিরহাট থেকে ভারতের মনিপুর পর্যন্ত সৈন্য ও রসদ পরিবহনের সুবিধার্থে, প্রায় ১২০০ ফুট লম্বা এই রেল সেতু নির্মাণ করা হয়।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়, পাকবাহিনীর যোগাযোগ ব্যাহত করতে মুক্তিযোদ্ধারা সেতুটির একটি অংশ ধ্বংস করেন। যুদ্ধশেষে ব্রিজটি মেরামত করে সাধারণ যান চলাচলের উপযোগী করে তোলা হয়।
কেন যাবেন?
শীতকালে প্রচুর ভ্রমণপ্রেমী মানুষ পিকনিক ও অবকাশ যাপনের জন্য এখানে আসেন। ব্রিজের আশেপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নদীর স্নিগ্ধ বাতাস, আর ইতিহাসের ছোঁয়া মিলিয়ে জায়গাটি সত্যিই মনোমুগ্ধকর।
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
ব্রিজ থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার পশ্চিমে পাটেশ্বরী বাজার অবস্থিত, যা এককালে অত্যন্ত জমজমাট ছিল। বাজারের কাছেই রয়েছে মীর জুমলার নির্মিত প্রাচীন মসজিদ, যা ১৬৬০ সালে নির্মিত হয়।
কিভাবে যাবেন?
- বাসে: ঢাকা থেকে নাবিল, হক স্পেশাল, হানিফ, তানজিলা বা এনার পরিবহনে সরাসরি কুড়িগ্রাম যেতে পারবেন। বাসভেদে ভাড়া ৯৫০ থেকে ১৪০০ টাকা।
- ট্রেনে: কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে রংপুর এক্সপ্রেস বা কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে কুড়িগ্রাম পৌঁছানো যায়। টিকিটের দাম ৬৪০-২১৯৭ টাকা (শ্রেণি অনুযায়ী)।
- স্থানীয় যাতায়াত: কুড়িগ্রাম শহর থেকে বাসে ভূরুঙ্গামারী পৌঁছে, সেখান থেকে অটোরিকশা বা মাদারগঞ্জগামী বাসে সরাসরি ব্রিজে পৌঁছানো যাবে।
থাকার ব্যবস্থা
ভূরুঙ্গামারীতে মানসম্মত আবাসনের ব্যবস্থা সীমিত। তবে পাশের নাগেশ্বরী উপজেলায় কয়েকটি আবাসিক হোটেল পাওয়া যাবে। আরও ভালো বিকল্প হিসেবে, কুড়িগ্রাম জেলা শহরের বিভিন্ন মানের হোটেলে থাকতে পারেন।
খাবার কোথায় পাবেন?
কুড়িগ্রামের শাপলা মোড়ের নান্না বিরিয়ানি এবং এশিয়া হোটেলের খাবার বেশ জনপ্রিয়। এখানকার সিদল ভর্তা আর তিস্তা নদীর বৈরাতী মাছ অবশ্যই চেখে দেখার মতো।
আরও যা দেখতে পারেন
- চিলমারি বন্দর
- উলিপুরের মুন্সীবাড়ী
- চান্দামারি মসজিদ
এই স্থানগুলো একদিনের ট্রিপেই দেখে নেওয়া সম্ভব, তাই ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এটি হতে পারে একটি আদর্শ গন্তব্য।
তাহলে, কবে রওনা দিচ্ছেন ঐতিহাসিক বঙ্গ সোনাহাট ব্রিজ দেখতে?
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!