ফকির লালন শাহের মাজার কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলায় অবস্থিত, যেখানে তিনি তাঁর শিষ্যদের আধ্যাত্মিক শিক্ষা প্রদান করতেন। এই আখড়ায় শীতকালে এক বিশাল উৎসব আয়োজিত হতো, যেখানে হাজারো শিষ্য একত্রিত হতেন। লালন শাহের মৃত্যুর পর তাঁর সমাধি এখানে তৈরি করা হয়, এবং তাঁর শিষ্যদের কবরও এখানে রয়েছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক স্থান, যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাউলরা একত্রিত হয়ে লালনের দর্শন ও গান উপভোগ করে।
লালন মেলা / লালন উৎসব
প্রতিবছর দুইবার লালন মেলা অনুষ্ঠিত হয়, একবার দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে এবং আরেকবার বাংলা কার্তিক মাসের প্রথম তারিখে। এই মেলাটি অত্যন্ত জনপ্রিয়, যেখানে সারা দেশ থেকে লালনের শিষ্যরা সমবেত হন এবং রাত্রি জুড়ে বাউল গানের পরিবেশনা চলে। মেলা উপলক্ষে মাজারটি নানা রঙে সজ্জিত করা হয়, এবং গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়। এই সময়ে দেশ-বিদেশের অনেক দর্শনার্থী মাজার পরিদর্শনে আসেন।
যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া যেতে বাস বা ট্রেনে যাওয়া যায়। বাসে যেতে হলে কল্যানপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে শ্যামলী, হানিফ অথবা নিউ এসবি সুপার ডিলাক্স বাসে চড়ে পদ্মা সেতু হয়ে কুষ্টিয়ার মজমপুর গেটে নামতে হবে, তারপর রিক্সা বা অটোরিক্সা নিয়ে মাজারে যাওয়া যাবে। বাসের ভাড়া সাধারণত ৬০০-৭০০ টাকা, এসি বাসে ১০০০-১২০০ টাকা।
ট্রেনে যেতে চাইলে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিত্রা এক্সপ্রেস বা বেনাপোল এক্সপ্রেসে চড়ে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশনে নামতে হবে। ট্রেনের আসনভেদে টিকিটের মূল্য ৪১০ থেকে ৯৪৩ টাকা। কুষ্টিয়া থেকে মাজারে রিক্সা বা অটোরিক্সা নিয়ে সহজেই পৌঁছানো যায়। কুষ্টিয়া শহর থেকে রিক্সা বা ইজি বাইক ভাড়া ২০-৩৫ টাকা।
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
লালন শাহের আখড়ার পাশাপাশি, কাছাকাছি কিছু দর্শনীয় স্থানও রয়েছে, যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি, মীর মোশাররফ হোসেনের জন্মভিটা, গড়াই নদীর তীরে রেনউইক বাধ এবং টেগর লজ। এসব স্থান পরিদর্শন করতে রিক্সা বা ইজি বাইক ভাড়া নিতে পারেন।
কোথায় থাকবেন
কুষ্টিয়া শহরে বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে। কিছু ভালো মানের হোটেল যেমন হোটেল রিভার ভিউ এবং হোটেল নূর ইন্টারন্যাশনাল। এছাড়া মজমপুর ও এন এস রোডে আরও কয়েকটি মাঝারি মানের হোটেল রয়েছে।
কোথায় খাবেন
খাওয়া-দাওয়ার জন্য শহরের কিছু ভালো মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। কোর্ট স্টেশন এলাকায় হোটেল শফি, জাহাঙ্গীর হোটেল, শিল্পী হোটেল এবং খাওয়ার জন্য আরো কিছু বিকল্প রয়েছে। এছাড়া কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের খাজা এবং কুলফি মালাই অবশ্যই খেয়ে দেখতে ভুলবেন না।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!