রাজবাড়ী জেলার নবাবপুর ইউনিয়নের রাজধরপুর গ্রামের কাছে কল্যাণ দীঘি (Kalyan Dhigi) অবস্থিত। বর্তমানে বিশাল আকারের এই দীঘিটি সমতল বিলে পরিণত হলেও এর আকার স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। ১৬ খাদা জমি নিয়ে এমন বৃহৎ দীঘি এই অঞ্চলে বিরল। অনেকের মতে, অষ্টাদশ শতকে রাজা সীতারাম কল্যাণ দীঘিটি খনন করেন। রাজা সীতারাম রাম সাগর, সুখ সাগর এবং কৃষ্ণ সাগর দীঘিগুলোও খনন করেছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। লোকমুখে শোনা যায়, রাজা সীতারামের ২০০ জন সৈন্যের একটি বাহিনী ছিল যারা যুদ্ধের সময়ে বাদে মানুষের পানির কষ্ট দূর করার জন্য জলাশয় খনন করতেন। এছাড়া, রাজা সীতারাম প্রতিদিন নতুন খননকৃত জলাশয়ে স্নান করতেন বলেও শোনা যায়।
আরও অনেকে মনে করেন কল্যাণ দীঘিটি খান জাহান আলী খনন করেছেন। ১৪৫৯ খ্রিস্টাব্দে খান জাহান আলী যশোর এবং খুলনা অঞ্চল জয় করে খলিফাতাবাদ রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি অসংখ্য দীঘি খনন করেছিলেন জনহিতকর কাজ হিসেবে। খান জাহান আলী ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে একটি দল ধর্ম প্রচারককে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রেরণ করেন, এবং তাদের দ্বারা কল্যাণ দীঘি খনন করা হয়েছে বলে মনে করা হয়।
কিভাবে যাবেন
ঢাকার গাবতলি থেকে রাবেয়া, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, রাজবাড়ী পরিবহণ, সপ্তবর্ণা, সাউদিয়া বাসে চড়ে পাদ্মা সেতু পার হয়ে রাজবাড়ী যেতে জনপ্রতি ৫০০ টাকা ভাড়া লাগে। এছাড়া ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, মধুমতি এক্সপ্রেস ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে রাজবাড়ী আসতে পারবেন। ট্রেনে আসনভেদে ভাড়া ৩৪০ থেকে ৭৮২ টাকা হতে পারে। রাজবাড়ী থেকে ইজিবাইক বা স্থানীয় যেকোন পরিবহনে কল্যাণ দীঘি দেখতে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
রাজবাড়ী জেলায় বেশ কিছু সরকারি ডাকবাংলো এবং আবাসিক হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে – হোটেল পার্ক, কেনটন চাইনিজ হোটেল ও রেস্তোরা, গুলশান বোডিং, প্রাইম হোটেল, পাংশা ডাকবাংলো, বালিয়াকান্দি ডাকবাংলো, গোয়ালন্দ ডাকবাংলো।
কোথায় খাবেন
রাজবাড়ীতে বিভিন্নমানের খাবারের হোটেলে আপনার পছন্দমতো খাবার খেতে পারবেন। এছাড়া, পান বাজারে অবস্থিত ভাদু শাহার দোকানের চমচম, রেলগেইটের হৈরা শাহের চপ এবং ঝালাই পট্টির কুলফি মালাই খেয়ে দেখতে পারেন।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!