টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলায় ঊনবিংশ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত হয় ঐতিহাসিক নাগরপুর জমিদার বাড়ি। জমিদার যদুনাথ চৌধুরীর নির্মিত এই স্থাপনা নান্দনিক কারুকার্যে সমৃদ্ধ এবং প্রায় ৫৪ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। এখান থেকেই যদুনাথ চৌধুরী এবং তাঁর উত্তরসূরি উপেন্দ্র মোহন চৌধুরী, জগদীন্দ্র মোহন চৌধুরী এবং শশাঙ্ক মোহন চৌধুরী জমিদারি পরিচালনা করতেন। বাড়িটির পূর্ব পাশে ধলেশ্বরী নদী এবং পশ্চিম পাশে যমুনা নদী প্রবাহিত হওয়ায় পরিবেশটি আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
জানা যায়, যদুনাথ চৌধুরী নাগরপুরকে কলকাতার আদলে সাজানোর স্বপ্ন দেখতেন এবং নদীপথকে কেন্দ্র করেই এই জমিদার বাড়ি গড়ে তোলেন। পরে জমিদার উপেন্দ্র মোহন চৌধুরীর বড় ছেলে সতীশ চন্দ্র চৌধুরী নাগরপুরে স্কুল, কলেজ, মন্দির, দাতব্য চিকিৎসালয়, খেলার মাঠ এবং বাজার প্রতিষ্ঠা করেন। জনহিতকর এই কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ সরকার তাঁকে “রায় বাহাদুর” উপাধি প্রদান করে।
স্থাপত্যশৈলী ও বৈচিত্র্য
পাশ্চাত্য ও মোঘল স্থাপত্যশৈলীর মিশ্রণে নির্মিত চারতলা বিশিষ্ট এই জমিদার বাড়িতে অসংখ্য ছোট-বড় ঘর রয়েছে, যার অভ্যন্তরে সাদা পাথরের কারুকাজ বিশেষভাবে লক্ষণীয়। অন্যান্য স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে নহবতখানা, অতিথি মহল, ঝুলন দালান, ঘোড়ার দালান এবং রঙমহল। রঙমহলের পাশেই একসময় ছিল বিভিন্ন প্রাণীসমৃদ্ধ একটি চিড়িয়াখানা। এছাড়া দক্ষিণ দিকে ১১ একর জায়গা নিয়ে আছে “উপেন্দ্র সরোবর” নামের দীঘি। বর্তমানে জমিদার বাড়ির মূল ভবনে স্থাপন করা হয়েছে নাগরপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে নাগরপুর জমিদার বাড়ি যেতে প্রথমে টাঙ্গাইল জেলা শহরে পৌঁছাতে হবে। মহাখালী বা কল্যাণপুর থেকে টাঙ্গাইল বা ধনবাড়ীগামী বাসে চড়ে যেতে পারবেন, ভাড়া পড়বে ১৮০-২৫০ টাকা। টাঙ্গাইল শহর থেকে সিএনজি বা অটো রিকশায় ৭ কিলোমিটার দূরত্বে নাগরপুর জমিদার বাড়ি।
কোথায় থাকবেন
দিনের মধ্যেই ঢাকা থেকে এসে নাগরপুর জমিদার বাড়ি দেখে ফিরে যাওয়া সম্ভব। তবে রাত্রিযাপন করতে চাইলে টাঙ্গাইল শহরের হোটেল প্রিন্স, হোটেল প্যারাডাইস ইন, হোটেল সাগর বা হোটেল শান্তিতে থাকতে পারেন।
কোথায় খাবেন
খাবারের জন্য টাঙ্গাইলের নিরালা মোড়ের নিরালা ঘর, কবিরস বা নিউ তৃপ্তি ভালো অপশন। নাগরপুর বাজারেও চা-নাস্তার ব্যবস্থা আছে।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!