পোড়াবাড়ির চমচম

পোড়াবাড়ির চমচমের কথা টাঙ্গাইলের নামের সাথেই যেন জড়িয়ে আছে। প্রায় দুই শতাব্দীর প্রাচীন এই মিষ্টান্ন তার সুনাম ছড়িয়ে দিয়েছে বিশ্বব্যাপী। “মিষ্টির রাজা” নামে খ্যাত এই চমচম তৈরি হয় খাঁটি ছানার সাথে চিনির মিশ্রণে। এর অনন্য স্বাদের টানে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে টাঙ্গাইলে। এই মিষ্টির কারণে টাঙ্গাইল জেলার পরিচিতি দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌঁছেছে।

পোড়াবাড়ি গ্রামের ধলেশ্বরী নদীর পাড়েই জন্ম এই ঐতিহ্যের। অনেকের ধারণা, নদীর পরিবেশের প্রভাবেই চমচমের এই অসাধারণ স্বাদ তৈরি হয়। তাই মিষ্টি কারিগরদের বিশ্বাস, টাঙ্গাইলের বাইরে এই স্বাদ পাওয়া সম্ভব নয়। প্রাচীনকালে মিষ্টি প্রস্তুতকারীদের “হালই” বলা হতো। এই চমচম তৈরির প্রচলন করেছিলেন যশোরাথ নামে এক মিষ্টি কারিগর, যাকে এ মিষ্টির জনক বলা হয়। পরবর্তীতে পোড়াবাড়ি গ্রামের ঘোষ ও পাল সম্প্রদায় এই ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে।

বর্তমানে টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ি, চারাবাড়ি ও সন্তোষ মিলিয়ে রয়েছে ১৩টি চমচম তৈরির কারখানা। শহরের বিভিন্ন দোকানে চমচম ছাড়াও পাওয়া যায় রসগোল্লা, পানতোয়া, রাজভোগ, মোহনভোগ, জিলাপি এবং বিখ্যাত দই। তবে পোড়াবাড়ির চমচম সব উৎসব-অনুষ্ঠানের এক বিশেষ আকর্ষণ।

কিভাবে যাবেন?

পোড়াবাড়ির চমচমের স্বাদ নিতে আপনাকে টাঙ্গাইল জেলার পাঁচ আনি বাজারে যেতে হবে, যা শহর থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে। ঢাকা থেকে বাস, ট্রেন বা নিজস্ব গাড়িতে টাঙ্গাইলে পৌঁছে রিকশায় করে সহজেই পাঁচ আনি বাজারে পৌঁছাতে পারবেন।

থাকার ব্যবস্থা

চাইলে একদিনের ভ্রমণেই টাঙ্গাইল থেকে ফিরে আসতে পারবেন। তবে রাত্রি যাপনের প্রয়োজন হলে শহরে হোটেল আল ফয়সাল, ব্যুরো হোটেল, আনসারি প্যালেস, হোটেল প্রিন্স কিংবা হোটেল শান্তি-তে থাকতে পারেন। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু সেতু রিসোর্ট, এলেঙ্গা রিসোর্ট, সার্কিট হাউজ ও জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে থাকার সুযোগ রয়েছে।

খাবারের জন্য কোথায় যাবেন?

টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে বিভিন্ন মানের রেস্টুরেন্টে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। পাঁচ আনি বাজারে যাওয়ার পথে মুন হাউজ, বিনিময় বা ফুড পার্ক রেস্টুরেন্টে খেতে পারেন।

দর্শনীয় স্থান

পোড়াবাড়ির চমচমের পাশাপাশি টাঙ্গাইলের এসপি পার্ক, মহেরা জমিদার বাড়ি, আতিয়া মসজিদ, ২০১ গম্বুজ মসজিদ, ধনবাড়ি মসজিদ এবং মধুপুর জাতীয় উদ্যানও দর্শনার্থীদের বিশেষ আকর্ষণ।

টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম শুধু একটি মিষ্টান্ন নয়, এটি একটি ঐতিহ্যের নাম, যা আজও স্বাদে-গুণে বাংলার গর্ব।

পোড়াবাড়ির চমচম এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
39.03 কিমি
টাঙ্গাইল থেকে
34.24 কিমি
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
শ্রীফলতলী জমিদার বাড়ি
আনন্দ পার্ক রিসোর্ট
সোহাগ পল্লী
বলিয়াদী জমিদার বাড়ী
দ্যা বেস ক্যাম্প বাংলাদেশ
নুহাশ পল্লী
স্প্রিং ভ্যালি রিসোর্ট
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান
মহেরা জমিদার বাড়ি
সীগাল রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট
ড্রিম স্কয়ার রিসোর্ট
সাহেব বাড়ি রিসোর্ট
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি
জাতীয় স্মৃতিসৌধ
রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট
আরশিনগর হলিডে রিসোর্ট
ভাওয়াল রাজবাড়ী
ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী
নাহার গার্ডেন পিকনিক স্পট

মন্তব্য

এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন