জিতু মিয়ার বাড়ী

সিলেট শহরের শেখঘাটে কাজীরবাজার সেতুর উত্তরে অবস্থিত ঐতিহাসিক জিতু মিয়ার বাড়ি। ১.৩৬৫ একর জায়গাজুড়ে নির্মিত এই স্থাপত্যটি মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর অনন্য উদাহরণ। এটি নির্মাণ করেছিলেন খান বাহাদুর আবু নছর মোহাম্মদ এহিয়া, যিনি জিতু মিয়া নামে পরিচিত। তিনি সাব রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও ১৮৯৭ থেকে ১৯০৩ সাল পর্যন্ত সিলেট পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান এবং অনারারী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তৎকালীন সময়ে জিতু মিয়ার পরিবার সিলেটে বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য পরিচিত ছিল। কথিত আছে, এই বাড়ির ড্রয়িংরুমে তুরস্কের পাশা, রুশ-তুরস্ক যুদ্ধ এবং ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আলোকচিত্র শোভা পেত। প্রতিদিন শত শত মানুষ এখানে আতিথেয়তা গ্রহণ করতেন।

জিতু মিয়ার বাড়িতে অনেক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব অতিথি হিসেবে এসেছেন, যেমন আসামের সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্যার সাদ উল্লাহ, ভারতের ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিন, কবি জসীমউদ্দিন, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, এবং মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী।

ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে ঘোষিত জিতু মিয়ার বাড়ি

১৯২৪ সালে জিতু মিয়া নিজেকে সন্তানহীন উল্লেখ করে সম্পত্তি ওয়াকফ করেন, যাতে তাঁর জমিদারির অস্তিত্ব অক্ষুণ্ণ থাকে। বর্তমানে সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার এই ওয়াকফ এস্টেটের মোতাওয়াল্লি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

জিতু মিয়ার বাড়ির আকর্ষণ

এই বাড়িতে এখনো রয়েছে জিতু মিয়ার ব্যবহৃত আসবাবপত্র, ক্যালিওগ্রাফি করা পবিত্র কুরআন ও হাদিসের বাণী, একটি কালো টেবিল এবং ২০টি চেয়ার। বর্তমানে বাড়ির ভেতরে ৮টি বসত ঘরে জমিদার বংশের উত্তরসূরীরা বসবাস করেন

যেভাবে যাবেন

  • বাসে: ঢাকার ফকিরাপুল, গাবতলি, মহাখালী বা সায়দাবাদ থেকে সিলেটগামী বাসে যাওয়া যায়। উল্লেখযোগ্য পরিবহনগুলো হলো এনা, গ্রিন লাইন, সৌদিয়া, এস আলম, শ্যামলী, হানিফ। এসি/নন-এসি বাসের ভাড়া ৬৭০ থেকে ১৫০০ টাকা।
  • ট্রেনে: কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে আন্তঃনগর পারাবত, জয়ন্তিকা বা উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনে সিলেট যেতে সময় লাগে ৭-৮ ঘণ্টা।
  • সিলেট শহরের ভেতরে: শহরের যেকোনো প্রান্ত থেকে রিকশা বা সিএনজিতে জিতু মিয়ার বাড়ি পৌঁছানো সম্ভব।

থাকার ব্যবস্থা

সিলেটের কদমতলী ও দরগা রোডে ৪০০ থেকে ১০০০ টাকায় মানসম্মত আবাসিক হোটেল পাওয়া যায়। উল্লেখযোগ্য হোটেলগুলো হলো হোটেল হিল টাউন, গুলশান, সুরমা এবং কায়কোবাদ।

খাওয়ার জায়গা

জিন্দাবাজার এলাকার পানসী, পাঁচ ভাই ও পালকি রেস্টুরেন্টে কম খরচে দেশীয় খাবার পাওয়া যায়। এছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে আরও অনেক রেস্টুরেন্ট রয়েছে।

সিলেটের অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

সিলেট ভ্রমণে গেলে জিতু মিয়ার বাড়ি ছাড়াও দেখতে পারেন:

সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো ভ্রমণপিপাসুদের মুগ্ধ করে।

জিতু মিয়ার বাড়ী এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
189.51 কিমি
সিলেট থেকে
1.7 কিমি
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
আলী আমজদের ঘড়ি
ক্বীন ব্রীজ
হযরত শাহজালাল (রঃ) মাজার
সিলেট শাহী ঈদগাহ
লাক্কাতুরা চা বাগান
মালনীছড়া চা বাগান
হযরত শাহ পরাণ (রাঃ) এর মাজার
নাজিমগড় গার্ডেন রিসোর্ট
ড্রিমল্যান্ড পার্ক
রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট
পাগলা বড় জামে মসজিদ
বিছনাকান্দি
যাদুকাটা নদী
হাকালুকি হাওর
হাকালুকি হাওর
ভোলাগঞ্জ
লক্ষনছড়া
পান্থুমাই ঝর্ণা
জাফলং
সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা

মন্তব্য

এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন