চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলায় মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশে উঁচু-নিচু পাহাড়, স্বচ্ছ লেকের পানি এবং ঘন বনাঞ্চল ঘিরে গড়ে উঠেছে বাঁশখালী ইকোপার্ক। জীববৈচিত্র্য রক্ষা, বন্যপ্রাণীর আবাস উন্নয়ন, ইকো ট্যুরিজম এবং বিনোদনের উদ্দেশ্যে ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দূরে সরকারি উদ্যোগে প্রায় ১,০০০ হেক্টর বনভূমি নিয়ে এই ইকোপার্ক নির্মাণ করা হয়।
প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের আধার
বাঁশখালী ইকোপার্কের প্রকৃতি ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নতুন রূপে দেখা দেয়। পার্কের ৬৭৪ হেক্টর বনভূমিতে ঝাউ বাগান, ভেষজ উদ্ভিদ এবং অর্নামেন্টাল গাছ সহ প্রায় ৩১০ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে, যা একে অনন্য করে তুলেছে।
আকর্ষণীয় স্থাপনা ও বিনোদন সুবিধা
পার্কের আকর্ষণীয় স্থাপনার মধ্যে রয়েছে পিকনিক স্পট, দ্বিতল রেস্ট হাউজ, হিলটপ কটেজ, রিফ্রেশমেন্ট কর্নার, বাংলাদেশের দীর্ঘতম ঝুলন্ত ব্রিজ, ওয়াচ টাওয়ার এবং একটি মিনি চিড়িয়াখানা। এছাড়া পার্কের দুটি বড় লেকে মাছ ধরার সুযোগও রয়েছে।
বন্যপ্রাণী এবং অতিথি পাখি
বাঁশখালী ইকোপার্কে মায়া হরিণ, চিত্রা হরিণ, বাঘ, চিত্রা বিড়াল, মেছো বাঘ এবং পাখির প্রজনন কেন্দ্র রয়েছে। শীতকালে অতিথি পাখির কলরবে ইকোপার্কের পরিবেশ আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
সুন্দর দৃশ্য এবং সূর্যাস্ত
ইকোপার্কের উঁচু পাহাড়ে দাঁড়িয়ে বঙ্গোপসাগরের অনন্ত জলরাশি, ঝর্ণার স্রোতধারা এবং বিকেলের নয়নাভিরাম সূর্যাস্তের দৃশ্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
যাওয়ার উপায়
চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে বাঁশখালী ইকোপার্ক। বাস বা সিএনজিতে চট্টগ্রাম থেকে বাঁশখালী যেতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে।
থাকার ব্যবস্থা
চট্টগ্রামের ষ্টেশন রোড, জিইসি মোড় এবং আগ্রাবাদ এলাকায় বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে। উল্লেখযোগ্য হোটেলগুলো হলো হোটেল স্টার পার্ক, হোটেল ডায়মন্ড পার্ক, হোটেল মিসখা, হোটেল হিল টন সিটি, এশিয়ান এসআর হোটেল, হোটেল প্যারামাউন্ট, হোটেল সাফিনা এবং হোটেল সিলমন।
খাবারের ব্যবস্থা
বাঁশখালীতে সাধারণ মানের হোটেল ও মনছুরিয়া বাজারে ছোট ছোট খাবারের দোকান রয়েছে। চট্টগ্রাম শহরে বাংলালি, চাইনিজ এবং ফাস্ট ফুডের রেস্টুরেন্টও রয়েছে। মেজবানি খাবার এবং কালা ভুনা অবশ্যই চেখে দেখার মতো।
চট্টগ্রামের অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
বাঁশখালী উপজেলায় বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত এবং চাঁদপুর বেলগাঁও চা বাগান রয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে ফয়েজ লেক, পতেঙ্গা সৈকত, মহামায়া লেক, ওয়ার সিমেট্রি, জাম্বুরি পার্ক, চন্দ্রনাথ পাহাড় এবং হাজারিখিল অভয়ারণ্য অন্যতম।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!