জাম্বুরি পার্ক

বাংলাদেশের বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকায় এস এম মোরশেদ সড়কে নির্মিত হয়েছে আধুনিক জাম্বুরি পার্ক (Jamburi Park)। ২০১৮ সালের আগে প্রায় সাড়ে ৮ একর জায়গা পরিত্যক্ত ছিল, যা এখন পার্কে পরিণত হয়েছে। সোনালু, নাগেশ্বর, চাঁপা, রাধাচূড়া, বকুল, শিউলি, সাইকাস, টগর, জারুলসহ প্রায় ৬৫ প্রজাতির ১০ হাজার গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। পার্কে প্রায় ৮ হাজার ফুট দীর্ঘ রাস্তা রয়েছে, যেখানে দর্শনার্থীরা হাঁটতে পারেন।

দৃষ্টিনন্দন লেক ও রঙিন জলফোয়ারা তৈরি হওয়ার ফলে সন্ধ্যায় আলো-অন্ধকারের সম্মিলনে পার্কটি অসাধারণ দৃশ্য সৃষ্টি করে। তখন এটি সবচেয়ে বেশি সুন্দর লাগে। পার্কে প্রবেশের জন্য উত্তর ও দক্ষিণ দিকে দুটি করে মোট ৪টি, এবং পূর্ব ও পশ্চিম দিকে একটি করে দুইটি গেট রয়েছে। উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে দুটি শৌচাগারও রয়েছে।

জাম্বুরি পার্ক মূলত শরীরচর্চা ও প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটানোর উদ্দেশ্যে নির্মিত হলেও, ছুটির দিনগুলোতে এখানে প্রচুর দর্শনার্থী সমবেত হন। সুন্দর পরিবেশ, লেক, নানা প্রজাতির গাছ ও আলোকসজ্জার কারণে জাম্বুরি পার্ক এখন ছোট-বড় সবার জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠেছে।

প্রবেশমূল্য ও সময়সীমা

জাম্বুরি পার্ক প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে বেশি ভিড় থাকে। পার্কে প্রবেশের জন্য কোন টিকেটের প্রয়োজন হয় না।

জাম্বুরি পার্ক কিভাবে যাবেন

জাম্বুরি পার্ক যাওয়ার জন্য প্রথমে চট্টগ্রাম আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাস, ট্রেন বা গাড়িতে চট্টগ্রাম যাওয়া সম্ভব। ঢাকা সায়দাবাদ, গাবতলি বা মহাখালি থেকে বিভিন্ন বাস সার্ভিস যেমন: দেশ ট্র্যাভেলস, তুবা লাইন, সোহাগ পরিবহন, গ্রিন লাইন, এনা, ইউনিক, শ্যামলী, ঈগল, রয়েল কোচ, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করে।

এছাড়া কমলাপুর বা বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে আন্তঃনগর ট্রেন যেমন: পর্যটক এক্সপ্রেস, কক্সবাজার এক্সপ্রেস, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতি বা সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে চট্টগ্রাম যেতে পারবেন। কম সময়ে যাওয়ার জন্য বিমানে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার বা ইউ এস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিভিন্ন ফ্লাইটে ৪৫ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছানো সম্ভব।

চট্টগ্রামে পৌঁছানোর পর সিএনজিতে জাম্বুরি পার্কে সহজে পৌঁছানো যেতে পারে। বাসে যেতে চাইলে আগ্রাবাদগামী বাসে বাদামতল মোড়ে নেমে পায়ে হেঁটে বা রিকশায় পার্কে যাওয়া যায়।

কোথায় থাকবেন

চট্টগ্রাম শহরে বিভিন্ন ধরণের এবং মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। বাজেট ও পছন্দ অনুসারে শহরের যেকোনো স্থানে হোটেল পাওয়া যাবে। স্টেশন রোড, জিইসি মোড় বা আগ্রাবাদ এলাকায় ১০০০-৫০০০ টাকা ভাড়ার মধ্যে বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে। এছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য সার্কিট হাউজ, জেলা পরিষদের রেস্ট হাউজ ও বন বিভাগের রেস্ট হাউজও রয়েছে।

পার্কের কিছু নিয়ম কানুন

  • পার্কের গাছগুলোর কোন ক্ষতি করা যাবে না (যেমন: ডাল ভাঙা, ফুল ছেঁড়া ইত্যাদি)।
  • পার্কের লেকের পানিতে ময়লা ফেলা বা গোসল করা যাবে না।
জাম্বুরি পার্ক এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
218.47 কিমি
চট্টগ্রাম থেকে
6.57 কিমি
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর
বাটালি হিল
চেরাগি পাহাড়
নজরুল স্কয়ার
আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ
চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রি
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা
ফয়েজ লেক
স্বাধীনতা কমপ্লেক্স
খেজুরতলা বীচ
বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার
ডিসি পার্ক চট্টগ্রাম
প্রজাপতি পার্ক
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত
ভাটিয়ারী লেক
পারকি সমুদ্র সৈকত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চালন্দা গিরিপথ
কুমিরা ঘাট, সীতাকুণ্ড
বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত

মন্তব্য

এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন