চালন্দা গিরিপথ

পার্বত্য চট্টগ্রামের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য ও চমৎকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সবসময় অ্যাডভেঞ্চার পছন্দকারী পর্যটকদের আকর্ষণ করে। প্রকৃতির নিপুণ হাতে সাজানো পাহাড়-অরণ্য এবং বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক দৃশ্যের মাঝে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ১৭৫৩ একর আয়তনের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে নানা রোমাঞ্চকর স্থান। চালন্দা গিরিপথ (Chalanda Giripath) তেমন একটি অসাধারণ অ্যাডভেঞ্চারের স্থান।

চালন্দা গিরিপথে প্রতি পদক্ষেপে এক অদ্ভুত রোমাঞ্চ অনুভূত হয়। চারপাশের সবুজ প্রকৃতির মাঝে সজল পানির প্রবাহ মনকে প্রশান্তি দেয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ঝুপড়ির পাশের পাহাড় থেকে নামা ঝর্ণার উৎস অথবা ছড়া থেকে পশ্চিম দিকে হাঁটলে প্রাকৃতিক বিস্ময় চালন্দা গিরিপথ দেখা যায়। গিরিপথে প্রবেশের পর হিমশীতল অনুভূতি শরীরে ছুঁয়ে যায়। দুই পাহাড়ের মাঝ দিয়ে প্রাকৃতিক পথ ধরে এগিয়ে যেতে হলে হাত-পা ব্যবহার করতে হয়। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে প্রকৃতির রঙিন দৃশ্য যেন এক অজানা রহস্যের মত।

কিভাবে যাবেন

চট্টগ্রাম শহরের যেকোনো স্থান থেকে বাস বা সিএনজিতে চড়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া যায়। অথবা চট্টগ্রামের বটতলী রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনে চড়ে ক্যাম্পাসে পৌঁছানো সম্ভব। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে টমটমে করে কলা অনুষদের ঝুপড়ি পৌঁছান। ঝুপড়ি থেকে ৭-৮ মিনিট হাঁটার পর পানির ছড়া পাওয়া যাবে। ছড়াটি ধরে এক ঘণ্টা হাঁটলেই চালন্দা গিরিপথে পৌঁছে যাবেন।

কোথায় থাকবেন

চট্টগ্রাম শহরের স্টেশন রোড, জিইসি মোড় এবং আগ্রাবাদ এলাকায় বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে হোটেল স্টার পার্ক, হোটেল ডায়মন্ড পার্ক, হোটেল মিসখা, হোটেল হিল টন সিটি, এশিয়ান এসআর হোটেল, হোটেল প্যারামাউন্ট, হোটেল সাফিনা এবং হোটেল সিলমন উল্লেখযোগ্য।

খাওয়া-দাওয়া

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ভাতঘর, ঢাকা হোটেল, মওয়ের দোকানসহ সুলভ মূল্যে অনেক খাবারের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। চাইলে চট্টগ্রাম শহরে ফিরে এসেও প্রয়োজনীয় খাবার খাওয়া যাবে।

প্রয়োজনীয় ভ্রমণ পরামর্শ

ছড়ার পানি ধরে যাওয়ার সময় দুটি পথ দেখা যাবে। একটি চালন্দায় যাওয়ার পথ এবং অন্যটি সীতাকুণ্ড যাওয়ার পথ। তাই সঠিক পথে যাচ্ছেন কিনা, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। দলগতভাবে ভ্রমণ করুন এবং চলাচলের সময় প্রত্যেকেই লাঠি ব্যবহার করুন, এটি অনেক উপকারী হবে। নিজেদের সাথে শুকনো খাবার এবং প্রয়োজনীয় পানি নিয়ে চলুন। গিরিপথে কোনো ময়লা ফেলবেন না, এবং পরিবেশ নোংরা করবেন না।