২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ফৌজদার হাট বক্ষব্যাধি হাসপাতালের কাছে থাকা একটি সরকারি জমি দখলমুক্ত করে সেখানে একটি বিশেষ বাগান তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুবাইয়ের মিরাকেল গার্ডেনের আদলে তৈরি করা হয় “ফুলের সাম্রাজ্য,” যা বর্তমানে চট্টগ্রাম ডিসি পার্ক নামে পরিচিত।
জেলা প্রশাসনের সূত্র মতে, আকার, প্রকার এবং ফুলের সংখ্যার দিক থেকে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ফুলের বাগান। এখানে ১৩৬ প্রজাতির ২ লাখেরও বেশি ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে।
ফুল উৎসব ও ডিসি পার্কের আয়োজন
শীতকাল এলেই এখানে শত প্রজাতির লক্ষাধিক ফুলের মেলা বসে। ফুল উৎসব উপলক্ষে প্রতি বছর লক্ষাধিক দর্শনার্থী পার্কে ভিড় করেন। ২০২৫ সালের ফুল উৎসব শুরু হয়েছে ৪ জানুয়ারি থেকে এবং চলবে পুরো মাসজুড়ে।
এই মাসব্যাপী উৎসবে থাকছে:
- ১৩৬ প্রজাতির ২ লাখের বেশি বাহারি ফুল।
- ঘুড়ি উৎসব।
- পিঠা উৎসব।
- নৌকা প্রদর্শনী।
- চিত্র প্রদর্শনী।
- মিউজিক ফেস্ট।
পার্কে ফুলের প্রজাতি
ডিসি পার্কে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির ফুল রয়েছে। উল্লেখযোগ্য ফুলগুলো হলো:
- ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, ম্যাগনোলিয়া, শিউলি, হাসনাহেনা, অপরাজিতা।
- চেরি, জারবেরা, উইলো, উইস্টেরিয়া।
- কনকাম্বরী, হাইব্রিড জবা, চিলিজবা।
- কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, শিমুল, করবী।
- গন্ধরাজ, মাধবীলতা, রেইনলিলি, নীলকণ্ঠ।
- লিলিয়াম, জিনিয়া, ইনকা মেরি গোল্ড, টিউলিপ।
বিশেষ করে টিউলিপ, যা মূলত শীতপ্রধান দেশের ফুল, এই পার্কে আলাদা আকর্ষণ তৈরি করেছে।
অন্যান্য আকর্ষণ
ডিসি পার্কে ফুলের বাগান ছাড়াও আরও বেশ কিছু আয়োজন রয়েছে:
- রেস্টুরেন্ট।
- নৌকা ভ্রমণ ও কায়াকিং।
- সানসেট ভিউ পয়েন্ট।
- সেলফি কর্নার।
- কিডস জোন ও ফিশিং সুবিধা।
ডিসি পার্কের ঠিকানা ও যোগাযোগ
ঠিকানা:
বন্দর সংযোগ রোড, ফৌজদারহাট, সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম।
যোগাযোগ: +৮৮০ ১৭৪৫ ৯৬৩৮৪০।
সময়সূচি ও প্রবেশমূল্য
ডিসি পার্ক প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
প্রবেশ ফি: ৫০ টাকা।
অনলাইনে টিকিট কিনতে ভিজিট করুন: https://dcparkchattogram.com
কিভাবে যাবেন?
ডিসি পার্ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদার হাট বক্ষব্যাধি হাসপাতালের কাছে বন্দর টোল রোডে অবস্থিত। চট্টগ্রামের যেকোনো স্থান থেকে বাস বা সিএনজি-তে সরাসরি ডিসি পার্কে যাওয়া সম্ভব।
খাবার ব্যবস্থা
ডিসি পার্কে একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে, তবে খাবারের দাম তুলনামূলক বেশি হতে পারে। চাইলে বাইরে থেকে খাবার কিনে নিয়ে যেতে পারেন।
টিপস
- ডিসি পার্ক ভ্রমণের জন্য শীতকালই সবচেয়ে ভালো সময়।
- ছুটির দিনগুলোতে পার্কে বেশি ভিড় হয়, তাই সময় বিবেচনা করে পরিকল্পনা করুন।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!