মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক নিদর্শন হলো ভাটপাড়া নীলকুঠি। ১৮৫৯ সালে নির্মিত এই স্থাপনাটি ব্রিটিশ শাসনামলে নির্মিত হয় এবং নির্মাণে ব্যবহৃত হয় ইট, চুন-শুরকি, লোহার বিম ও ইটের টালি। কাজলা নদীর তীরে অবস্থিত এই কুঠিবাড়ির দৈর্ঘ্য ৮০ ফুট এবং প্রস্থ ৭০ ফুট, যা একসময় নীলচাষের মাধ্যমে নির্যাতনের কেন্দ্র ছিল।
মূল ভবনের পাশেই আজো টিকে আছে বেশ কিছু ঐতিহাসিক কাঠামো, যেমন- পুরনো জেলখানা, মৃত্যুকূপ এবং ঘোড়ার আস্তাবল—যা সেই সময়ের নৃশংসতার নিদর্শন বহন করে।
ডিসি ইকোপার্ক: ইতিহাসের ছায়ায় নির্মল বিনোদন
প্রায় ২৭ একর জমির উপর গড়ে উঠলেও সময়ের সাথে সাথে ভাটপাড়া নীলকুঠির আয়তন কমে এসেছে। ২০১৭ সালে মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই স্থানে গড়ে তোলা হয় ডিসি ইকোপার্ক। পার্কের ভেতরে রয়েছে একটি কৃত্রিম লেক, নানা প্রাণীর ভাস্কর্য, ঝরনা, খেলার জায়গা এবং সুন্দর ফুলের বাগান। ঐতিহাসিক পরিবেশে গড়ে ওঠা এই পার্কে ভ্রমণকারীরা একসাথে ইতিহাস ও প্রকৃতির ছোঁয়া পান।
কিভাবে যাবেন
ভাটপাড়া নীলকুঠি যেতে হলে প্রথমেই মেহেরপুর শহরে পৌঁছাতে হবে। ঢাকা থেকে মেহেরপুর যাওয়ার জন্য দুইটি পথ বেছে নেওয়া যায়—বঙ্গবন্ধু সেতু বা পদ্মা সেতু পার হয়ে।
ঢাকার কল্যাণপুর থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে মেহেরপুরে যাতায়াত করে এস বি, জে আর, শ্যামলী ও আর কে পরিবহনের বাস। গাবতলী থেকে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করে রয়েল, এস এম, মেহেরপুর ডিলাক্স ও চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের বাস সার্ভিস। বাস ভাড়ার পরিমাণ গন্তব্য ও সার্ভিসের উপর নির্ভর করে ৬০০ থেকে ১৩০০ টাকার মধ্যে হতে পারে।
মেহেরপুর জেলা সদর থেকে মাত্র ১৭ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত ভাটপাড়া নীলকুঠি, যেখানে যাওয়া যায় বাস, ইজিবাইক, নসিমন ইত্যাদির মাধ্যমে।
কোথায় থাকবেন
থাকার জন্য গাংনী উপজেলার পলাশীপাড়া সমাজকল্যাণ সমিতির রেস্ট হাউজ একটি ভালো বিকল্প। এছাড়াও জেলা পরিষদের ডাকবাংলো, সার্কিট হাউজ, পৌর হল কিংবা ফিন টাওয়ারের মত আবাসিক হোটেলেও রাতযাপন করতে পারেন।
কোথায় খাবেন
মেহেরপুরে ভোজনের জন্য বেশ কিছু ভালো মানের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। আমের মৌসুমে গেলে অবশ্যই স্থানীয় রসালো আম উপভোগ করতে ভুলবেন না। এছাড়াও, মেহেরপুর শহরে অবস্থিত জনপ্রিয় “সাবিত্রী” মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মিষ্টির স্বাদ আপনার ভ্রমণ অভিজ্ঞতাকে আরো স্মরণীয় করে তুলবে।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!