রাজশাহীর বাঘা উপজেলা থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরত্বে গ্রামীণ পরিবেশের মাঝে গড়ে উঠেছে উৎসব পার্ক (Utshab Park)। ২০১৪ সালে প্রায় ৮০ বিঘা জায়গাজুড়ে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে নির্মিত এই পার্কটি বিনোদনের এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। শহরের কোলাহল থেকে দূরে, প্রকৃতির সান্নিধ্যে পার্কটি পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য আদর্শ স্থান।
উৎসব পার্কের আকর্ষণ
সবুজের সমারোহে ঘেরা পার্কটিতে রয়েছে বিভিন্ন বিনোদনমূলক রাইড ও সুবিধা, যেমন:
✔️ ট্রেন, নাগরদোলা, দোলনা ও ঘূর্ণিসহ মোট ৮টি আকর্ষণীয় রাইড।
✔️ বিভিন্ন পশু-পাখির মনোরম ভাস্কর্য।
✔️ বসার বেঞ্চ ও পিকনিক স্পট।
✔️ লেকের স্বচ্ছ জলে প্যাডেল বোট ভ্রমণের সুযোগ।
✔️ শিশু-কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উপযুক্ত বিনোদন ব্যবস্থা।
ছুটির দিন ছাড়াও প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পার্কটি দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত থাকে।
প্রবেশ মূল্য ও সময়সূচি
✅ সময়: প্রতিদিন সকাল ৮:০০ টা থেকে সন্ধ্যা ৭:০০ টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
✅ প্রবেশ মূল্য: জনপ্রতি ২০ টাকা।
✅ রাইড টিকেট: প্রতিটি রাইডের জন্য ২০ টাকা।
✅ বোট রাইড: ৪ জনের জন্য ৫০ টাকা।
✅ পিকনিক স্পট ভাড়া: ৫০০ টাকা।
✅ পার্কিং চার্জ: প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসের জন্য ১৫০-৩৫০ টাকা।
উৎসব পার্কে যেভাবে যাবেন
উৎসব পার্কে যেতে হলে প্রথমে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলা পৌঁছাতে হবে।
বাস
ঢাকার গাবতলী, কল্যাণপুর ও আব্দুল্লাপুর থেকে শ্যামলী, হানিফ, গ্রিনলাইন, দেশ ট্রাভেলস সহ বিভিন্ন পরিবহনের বাসে রাজশাহী যাওয়া যায়। ভাড়া ৭১০-১৪০০ টাকা (বাসের ধরণ অনুযায়ী)।
ট্রেন
ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সিল্কসিটি, ধূমকেতু, বনলতা, পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে রাজশাহী যাওয়া যায়। টিকিটের মূল্য ৪৫০-১,৫৪৭ টাকা (শ্রেণী অনুযায়ী)।
বিমান
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা, নভোএয়ার ফ্লাইটে সরাসরি রাজশাহী যাওয়া যায়।
রাজশাহী থেকে বাঘা
রাজশাহী শহর থেকে বাঘার দূরত্ব প্রায় ৪৭ কিলোমিটার। লোকাল বাস, অটো বা প্রাইভেট গাড়িতে করে বাঘায় পৌঁছানো যায়। এরপর রিকশা বা পায়ে হেঁটে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে উৎসব পার্কে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন?
উৎসব পার্কের নিজস্ব রেস্ট হাউসে থাকা যায়। এখানে সিঙ্গেল, ডাবল ও ট্রিপল বেড রুম রয়েছে।
✔️ রুম ভাড়া: ১০০০ টাকা (প্রতি রাত)।
পাশাপাশি রাজশাহীতে ফিরে থাকতে চাইলে নিচের ভালো মানের হোটেলগুলোর যে কোনো একটিতে থাকতে পারেন:
✅ হোটেল গ্রিন সিটি ইন্টারন্যাশনাল
✅ হোটেল স্টার ইন্টারন্যাশনাল
✅ হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনাল
✅ মুক্তা ইন্টারন্যাশনাল
✅ বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল
খাবারের ব্যবস্থা
উৎসব পার্কের ভেতরে আইসক্রিম, ফুচকা, চটপটি ইত্যাদি বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের স্টল রয়েছে। এছাড়া পার্কের কাছাকাছি অবস্থিত রেস্তোরাঁগুলোতেও পছন্দসই খাবার পাওয়া যাবে।
রাজশাহী শহরের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় বাংলা, চাইনিজ, ফাস্টফুড ইত্যাদি বিভিন্ন খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে।
রাজশাহীর অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
উৎসব পার্কের পাশাপাশি রাজশাহীতে ঘুরে দেখতে পারেন:
🏛️ বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর
🎡 শিশু পার্ক
🕌 বাঘা মসজিদ
🏰 পুঠিয়া রাজবাড়ী
🐅 রাজশাহী চিড়িয়াখানা
উৎসব পার্ক প্রকৃতি ও আধুনিক বিনোদনের এক অসাধারণ সংমিশ্রণ। পরিবার, বন্ধু-বান্ধব বা প্রিয়জনদের নিয়ে দারুণ সময় কাটাতে চাইলে এটি হতে পারে আপনার পরবর্তী গন্তব্য
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!