মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার শেখের নগর গ্রামে অবস্থিত প্রায় দুইশত বছরের পুরনো রায় বাহাদুর শ্রীনাথ রায়ের বাড়ি (Rai Bahadur Srinath Palace)। ইছামতি নদীর পাড়ে শেখেরনগর রায়বাহাদুর ইনস্টিটিউশনের কাছে ছায়া ঘেরা এই গ্রামটি যেন ইতিহাসের নীরব সাক্ষী। বাড়িটির স্থাপত্যশৈলী বর্গাকৃতির এবং দ্বিতল এই দালানের দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট ও প্রস্থ ২০ ফুট। দ্বিতল ভবনের তিন দিকে আরও তিনটি একতলা ভবন রয়েছে, যার প্রত্যেকটির দৈর্ঘ্য ২০ ফুট ও প্রস্থ ১৫ ফুট। বাড়ির পূর্ব ও দক্ষিণ পাশে দুটি শান বাঁধানো ঘাটসহ পুকুরও রয়েছে।
রায় বাহাদুর শ্রীনাথ রায়: ইতিহাস ও অবদান
রায় বাহাদুর শ্রীনাথ রায় ছিলেন মুন্সীগঞ্জের অন্যতম ধনী ও দানশীল ব্যক্তি। ব্রিটিশ শাসকেরা তাঁকে ‘রাজা’ এবং ‘রায় বাহাদুর’ উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। ১৩২২ বঙ্গাব্দের ২১ শ্রাবণ বাংলার প্রথম গভর্নর লর্ড কারমাইকেল একটি দাতব্য চিকিৎসালয় উদ্বোধনের জন্য এই বাড়িতে এসেছিলেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাজনের সময় শ্রীনাথ রায়ের পরিবার কলকাতা পাড়ি জমান।
যেভাবে পৌঁছাবেন
ঢাকা থেকে সড়কপথে মুন্সীগঞ্জের দূরত্ব মাত্র ২৩ কিলোমিটার। গুলিস্থান, আবদুল্লাপুর বা মিরপুর থেকে মাওয়াগামী বাসে মুন্সীগঞ্জ যাওয়া যায়। এছাড়া সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে মুন্সীগঞ্জগামী লঞ্চেও যাত্রা করা সম্ভব। মুন্সীগঞ্জ জেলা সদর থেকে বাসে সিরাজদিখান উপজেলায় এসে সেখান থেকে রিকশায় রায় বাহাদুর শ্রীনাথ রায়ের বাড়ি যেতে পারবেন।
থাকার ব্যবস্থা
ঢাকা থেকে একদিনে মুন্সীগঞ্জ ঘুরে আসা যায়। তবে প্রয়োজনে মুন্সীগঞ্জ সদর এলাকার হোটেল থ্রি স্টার বা হোটেল কমফোর্টে রাতযাপন করতে পারেন। এছাড়া পদ্মা রিসোর্ট, মাওয়া রিসোর্ট এবং মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্টের মতো আকর্ষণীয় রিসোর্টেও থাকতে পারবেন।
খাওয়ার ব্যবস্থা
মুন্সীগঞ্জে চিত্তর দই, আনন্দর মিষ্টি, খুদের খিচুড়ি (খুদের বৌউয়া) এবং ভাগ্যকুলের মিষ্টি বেশ জনপ্রিয়। এখানে ভালমানের খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে।
দর্শনীয় স্থানসমূহ
মুন্সীগঞ্জে রায় বাহাদুর শ্রীনাথ রায়ের বাড়ি ছাড়াও জগদীশ চন্দ্র স্মৃতি জাদুঘর, ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ি এবং মাওয়া ফেরি ঘাট অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!