বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রাচীন জনপদ বাগেরহাট জেলার সুন্দরঘোনা গ্রামে, খুলনা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ঐতিহাসিক সিঙ্গাইর মসজিদ। ধারণা করা হয়, মুঘল আমলে ১৫শ শতাব্দীতে মহান স্থপতি খান জাহান আলী (রহঃ) এই এক গম্বুজ বিশিষ্ট স্থাপনাটি নির্মাণ করেন। বাগেরহাটের বিখ্যাত ষাট গম্বুজ মসজিদ থেকে মাত্র ২৫ মিটার দূরত্বে অবস্থান এই মসজিদের।
বর্গাকৃতির এই মসজিদের পরিমাপ প্রায় ১২.০৪ x ১২.০৪ মিটার এবং দেয়ালগুলো ২.১০ মিটার পুরু। এর চার কোণায় চারটি বৃত্তাকার মিনার রয়েছে, যা মসজিদের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তুলেছে। কার্নিশগুলো বাঁকানোভাবে নির্মিত, যা তৎকালীন স্থাপত্যের পরিচয় বহন করে।
মসজিদের প্রবেশদ্বারগুলোও বেশ নান্দনিক। পূর্ব দিকে তিনটি খিলানযুক্ত দরজা রয়েছে, যেগুলোর মাঝে মধ্যেরটি অপেক্ষাকৃত বড়। এছাড়া উত্তর ও দক্ষিণ পাশে একটি করে দরজা আছে। পশ্চিম দিকের দেয়ালে একটি সুন্দরভাবে অলঙ্কৃত মেহরাব রয়েছে, যার শিল্পকর্ম ও দরজার অলঙ্করণের মাঝে সাদৃশ্য দেখা যায়।
কীভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে সরাসরি বাগেরহাট যাওয়ার জন্য বেশ কিছু পরিবহন সার্ভিস চালু রয়েছে।
সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ১০টা ও সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলাচল করে মেঘনা, বনফুল, ফাল্গুনী, আরা, পর্যটক, বলেশ্বর, হামিম এবং দোলা পরিবহন।
গাবতলী টার্মিনাল থেকেও পাওয়া যায় সোহাগ, শাকুরা, হানিফ ও ঈগল পরিবহন।
সবগুলো বাসই পদ্মা সেতু হয়ে বাগেরহাট যায় এবং জনপ্রতি ভাড়া প্রায় ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা।
বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশা বা স্থানীয় যেকোনো বাহনে করে সহজেই সিঙ্গাইর মসজিদে পৌঁছানো যায়।
ট্রেনে যেতে চাইলে ঢাকা থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস বা চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনে খুলনা পৌঁছে সেখান থেকে বাস বা সিএনজিতে করে মসজিদে যেতে পারবেন। খুলনা থেকে সিঙ্গাইর মসজিদ পৌঁছাতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে।
থাকার ব্যবস্থা
বাগেরহাটে থাকার মতো মানসম্মত হোটেলের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। তবে শহরের রেল রোড এলাকায় মমতাজ হোটেল সহ আরও কয়েকটি আবাসিক হোটেল আছে, যেগুলো যাচাই করে থাকতে পারেন। চাইলে আরও ভালো থাকার সুবিধার জন্য খুলনা শহরেও রাতযাপন করতে পারেন।
খাওয়ার স্থান
খাবারের জন্য বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ড ও দরগার আশপাশে বেশ কিছু হোটেল-রেস্তোরাঁ আছে। তবে খাওয়ার আগে খাবারের মান ও দামের বিষয়টি জেনে নেওয়া ভালো।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!