দুর্গাসাগর দিঘী বরিশাল শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে স্বরূপকাঠি-বরিশাল সড়কের মাধবপাশায় অবস্থিত। ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন রাজা শিব নারায়ণ এলাকাবাসীর পানির সংকট দূর করতে মাধবপাশায় একটি বিশাল দিঘি খনন করেন এবং তাঁর মা দুর্গা দেবীর নামানুসারে এর নামকরণ করেন দুর্গাসাগর। এই ঐতিহাসিক দিঘির জলাভূমির আয়তন ২৭ একর এবং পাড় ও জমি মিলে মোট আয়তন ৪৫.৪২ একর। বর্তমানে দিঘিটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে জেলা প্রশাসন। দুর্গাসাগর দিঘীর তিন দিকে ৩টি ঘাটলা রয়েছে এবং দিঘির মাঝখানে একটি টিলা বা ছোট দ্বীপ আছে। স্থানীয়দের কাছে এটি মাধবপাশা দিঘি নামেও পরিচিত।
দিঘির চারপাশ নারিকেল, সুপারি, শিশু ও মেহগনি গাছে ঘেরা। উত্তর পাশে একটি বড় বাঁধানো ঘাট রয়েছে। বছরের যেকোনো সময় দুর্গাসাগর দিঘি দেখতে যাওয়া যায়, তবে শীতকালে এখানে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির আগমন ঘটে। সরাইল ও বালিহাঁসসহ প্রায় ৬ প্রজাতির হাজার হাজার পাখির কলরবে দিঘির চারপাশ মুখরিত থাকে। প্রায় আড়াইশ বছর পুরনো এই ঐতিহ্যবাহী দিঘির সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ভিড় জমান।
দুর্গাসাগর দিঘি যাওয়ার উপায়
দুর্গাসাগর দিঘি দেখতে প্রথমে আপনাকে বরিশাল শহরে আসতে হবে। বরিশাল থেকে চাখার বাসে চড়লে দুর্গাসাগর দিঘির সামনে নামতে পারবেন। এছাড়া লঞ্চঘাট থেকে ব্যাটারিচালিত লেগুনা দুর্গাসাগরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। চাইলে সিএনজি বা অটোরিকশা রিজার্ভ করেও যেতে পারেন।
ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার উপায়
লঞ্চে
ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার জন্য বেশ কিছু লঞ্চ চলাচল করে। উল্লেখযোগ্য লঞ্চগুলোর মধ্যে রয়েছে এমভি মানামী, কুয়াকাটা ২, কীর্তনখোলা ২ ও ১০, এডভেঞ্চার ১ ও ৯, সুন্দরবন ৯ ও ১০, সুরভী ৭ ও ৮, পারাবত ৯ ও ১১ এবং গ্রিন লাইন। ঢাকার সদরঘাট থেকে বেশিরভাগ লঞ্চ রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সকালে যেতে চাইলে গ্রিনলাইন লঞ্চে যেতে পারেন। লঞ্চের ডেকের ভাড়া ২০০-২৫০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ১২০০-১৪০০ টাকা, ডাবল কেবিন ২২০০-২৫০০ টাকা এবং ভিআইপি কেবিন ৪৫০০-৮০০০ টাকা।
বাসে
ঢাকা থেকে বরিশাল যেতে সড়কপথে প্রায় ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা সময় লাগে। গাবতলি বাস টার্মিনাল থেকে ভোর ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নিয়মিত বাস বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। হানিফ পরিবহন, ঈগল পরিবহন ও শাকুরা পরিবহন এই রুটে চলাচল করে। এসি ও নন-এসি বাসের ভাড়া ৫০০ থেকে ১২০০ টাকা।
কোথায় থাকবেন
বরিশালে থাকার জন্য বেশ কিছু ভালো মানের হোটেল রয়েছে। যেমন:
হোটেল গ্র্যান্ড পার্ক
হোটেল রিচমার্ট গেস্ট হাউজ
হোটেল এরিনা
হোটেল সেডোনা
হোটেল রোডেলা
হোটেল এথেনা
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
দুর্গাসাগর দিঘি দেখার পাশাপাশি আশেপাশের কিছু দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে পারেন। যেমন:
বাইতুল আমান জামে মসজিদ (গুটিয়া মসজিদ)
লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি
মাধবপাশা জমিদার বাড়ি
শেরে বাংলা স্মৃতি জাদুঘর
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!