হামহাম জলপ্রপাত

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে ২০১০ সালের শেষের দিকে পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মার সাথে একদল পর্যটক হাম হাম ঝর্ণাটি আবিষ্কার করেন। স্থানীয়রা এই ঝর্ণাকে চিতা ঝর্ণা বলে ডাকেন, কারণ তাদের মতে এই জঙ্গলে একসময় চিতা দেখা যেত। প্রায় ১৪০ ফুট উঁচু এই ঝর্ণার বন্য সৌন্দর্য দেখতে অনেক মানুষ সমগ্র বাংলাদেশ থেকে এখানে আসে, তবে শীতকালে পানি কম থাকায় বর্ষাকালে হাম হাম ঝর্ণার প্রকৃত সৌন্দর্য দেখা যায়।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে হাম হাম যেতে শ্রীমঙ্গল হয়ে যাওয়া সবচেয়ে সহজ। কমলাপুর বা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পারাবত, জয়ন্তিকা বা উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনে করে শ্রীমঙ্গলে আসা যায়। ভাড়া শ্রেণীভেদে ২৪০-৮২৮ টাকা। ট্রেনে শ্রীমঙ্গল যেতে সময় লাগে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা।

বাসে ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল যেতে ফকিরাপুল অথবা সায়দাবাদ থেকে ৫৭০ থেকে ৮০০ টাকা ভাড়ায় হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, সিলেট এক্সপ্রেস, এনা ইত্যাদি বাসে যাওয়া যায়। বাসে সময় লাগে ৪-৫ ঘণ্টা।

শ্রীমঙ্গল থেকে হাম হাম

শ্রীমঙ্গল থেকে সকাল সকাল হাম হাম যাওয়ার জন্য রওনা দেওয়া ভালো। প্রথমে কলাবন পাড়ায় যেতে হবে, যেখানে সিএনজি ভাড়া ১০০০-১২০০ টাকা, এক গাড়িতে ৩-৫ জন যেতে পারেন। এছাড়া জীপ গাড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে। কলাবন পাড়ায় গিয়ে ২০০/৩০০ টাকার মধ্যে একটি গাইড নেওয়া ভালো। হাঁটার জন্য বাঁশের লাঠি নিয়ে যাওয়া উচিত এবং জোঁকের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে। কলাবন পাড়া থেকে হাম হাম যেতে ২-৩ ঘণ্টা সময় লাগবে, তবে পাহাড়ি পথে হাঁটতে অভ্যস্ত না হলে সময় বেশি লাগতে পারে।

কোথায় থাকবেন

হাম হাম ঝর্ণার আশেপাশে থাকার ব্যবস্থা নেই, তাই সকালেই রওনা দিয়ে সন্ধ্যার মধ্যে ফিরে আসা ভালো। তবে আদিবাসীদের সঙ্গে কথা বলে তৈলংবাড়ী বা কলাবন পাড়ায় থাকতে পারেন। শ্রীমঙ্গলে থাকার জন্য বেশ কিছু হোটেল রয়েছে, যেমন হোটেল গ্র্যান্ড সুলতান, নভেম রিসোর্ট, নিসর্গ ইকো কটেজ, টি মিউজিয়াম রিসোর্ট ইত্যাদি।

কি খাবেন

কলাবন পাড়ায় কিছু খাবার পাওয়া যায় যেমন চা, ছোলাবুট, যা সাময়িক খিদে মেটাতে সহায়ক। শুকনো খাবারও সাথে নিতে পারেন। কলাবন পাড়ায় স্থানীয়দের দেওয়া একটি ছোট হোটেলে খাবার অর্ডার করা যেতে পারে। শ্রীমঙ্গলে ফিরে গিয়ে শহরের রেস্টুরেন্টে খাওয়া যেতে পারে।

আশেপাশের দর্শনীয় স্থান

  • মাধবপুর লেক
  • লাউয়াছড়া উদ্যান
  • চা বাগান
  • সাত রঙের চা – নীলকন্ঠ কেবিন
  • বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট

ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা

  • ট্রেকিংয়ের জন্য ভালো গ্রিপের জুতো পরুন, বিশেষ করে বর্ষাকালে।
  • ব্যাকপ্যাক হালকা রাখুন।
  • পর্যাপ্ত পানি ও স্যালাইন সঙ্গে রাখুন।
  • পাহাড়ি পথে সাবধানে চলুন।
  • ফার্স্ট এইড সরঞ্জাম সঙ্গে রাখুন।
  • ঝর্ণা ও ট্রেইলে ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না।
  • স্থানীয়দের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করুন।
  • সময়ের দিকে খেয়াল রাখুন যেন হাম হাম থেকে ফিরে আসার পথে সন্ধ্যা না হয়।
হামহাম জলপ্রপাত এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
157.48 কিমি
মৌলভীবাজার থেকে
37.98 কিমি
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ
মাধবপুর লেক
গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট এন্ড গলফ
চা জাদুঘর
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান
মণিপুরী পল্লী
বাইক্কা বিল
রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য
দুসাই রিসোর্ট এন্ড স্পা
হাইল হাওর
গ্রীনল্যান্ড পার্ক
পাথারিয়া পাহাড়
দ্যা প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান

মন্তব্য

এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন