কান্তজীর মন্দির বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান, যা অনেক নামে পরিচিত। অনেকেই এটি কান্তজীউ মন্দির বা কান্তনগর মন্দির হিসেবে জানেন, আবার অনেকে এটিকে নবরত্ন মন্দির নামে চেনেন। ১৮ শতকে নির্মিত এই মন্দিরটি দিনাজপুর শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে, দিনাজপুর-তেতঁলিয়া সড়কের এক মাইল পশ্চিমে ঢেঁপা নদীর তীরে অবস্থিত কান্তনগর গ্রামে।
শিলালিপির মাধ্যমে জানা যায় যে, তৎকালীন মহারাজা প্রাণনাথ রায় মন্দিরটির নির্মাণ শুরু করেন। ১৭২২ সালে প্রাণনাথ রায়ের মৃত্যুর পর তাঁর পোষ্যপুত্র মহারাজা রামনাথ রায় ১৭৫২ সালে মন্দিরটির নির্মাণ শেষ করেন। তখন মন্দিরটির উচ্চতা ছিল ৭০ ফুট, তবে ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পের ফলে মন্দিরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বর্তমানে এর উচ্চতা ৫০ ফুট। মন্দিরের বাইরের দেয়ালগুলোতে প্রায় ১৫,০০০ পোড়ামাটির ফলক রয়েছে, যার মধ্যে মহাভারত, রামায়ণ ও অন্যান্য পৌরাণিক কাহিনী চিত্রিত হয়েছে। তিন ধাপবিশিষ্ট এই মন্দিরে প্রতিটি স্তরের প্রবেশপথে খাঁজযুক্ত খিলান রয়েছে, এবং স্তম্ভগুলোও অলংকৃত।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে দিনাজপুর যাওয়া সম্ভব। গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে বিভিন্ন বাস সার্ভিস যেমন নাবিল পরিবহন, এসআর ট্রাভেলস, এসএ পরিবহন ইত্যাদি দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে চলাচল করে। বাসের ভাড়া সাধারণত ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া ঢাকা থেকে কমলাপুর বা বিমানবন্দর স্টেশন থেকে আন্তঃনগর ট্রেন যেমন একতা এক্সপ্রেস, দ্রুতযান এক্সপ্রেস বা পঞ্চগড় এক্সপ্রেসও চলে, যার টিকিটের দাম ৫৭৫ থেকে ১৯৭৮ টাকার মধ্যে হতে পারে।
দিনাজপুর থেকে অটোরিক্সা বা সিএনজি ভাড়া করে কান্তজীর মন্দির সহজেই পৌঁছানো যায়।
কোথায় থাকবেন
দিনাজপুরে ভালো মানের হোটেল হিসেবে পর্যটন মোটেল (ফোন: 0531-64718) অথবা সাধারণ মানের হোটেল যেমন হোটেল ডায়মন্ড (ফোন: 0531-64629), হোটেল আল রশিদ (ফোন: 0531-64251) এ ২০০ থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে রাত্রি যাপন করতে পারবেন। এছাড়া, রামসাগরে বন বিভাগের বাংলোতে থাকতে পারেন, যেখানে কক্ষের ধরণের উপর ভিত্তি করে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
কোথায় খাবেন
দিনাজপুরে রুস্তম, ফাইভ স্টার এবং দিলশাদ হোটেলগুলোতে গরুর ভুনা মাংস, কাঠি কাবাব, পাটিসাপটা ইত্যাদি উপভোগ করা যায়। এছাড়া, পুলাহাট বিসিক এলাকায় আবুল হোটেলে ভাত, মাংস, ডাল এবং সবজি দিয়ে খাবারের আয়োজন করা হয়।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!