রামসাগর দীঘি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মানুষের খনন করা দিঘী, যা দিনাজপুর জেলার তেজপুর গ্রামে অবস্থিত। এর আয়তন প্রায় ৪,৩৭,৪৯২ বর্গমিটার এবং গড় গভীরতা প্রায় ১০ মিটার। দীঘির পশ্চিম পাড়ে একটি ঘাট রয়েছে। দিনাজপুর শহর থেকে এটি প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। রামসাগর দীঘি ঘিরে গড়ে উঠেছে রামসাগর জাতীয় উদ্যান, যা প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য একটি আদর্শ পর্যটন স্পট। পূর্ণ চাঁদ রাতে রামসাগরের পাড়ে ক্যাম্পিং করার অভিজ্ঞতা অত্যন্ত মনোরম।
ইতিহাস অনুযায়ী, রামসাগর দীঘিটি রাজা রামনাথের নির্দেশে খনন করা হয়েছিল, যাতে আশপাশের গ্রামের মানুষ পানি সরবরাহ পায়। রাজা রামনাথের নামেই এই দীঘির নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে এটি পর্যটন বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে এবং এর সৌন্দর্য আরও বাড়ানোর জন্য একটি আধুনিক রেস্ট হাউজ নির্মাণ করা হয়েছে।
রামসাগর জাতীয় উদ্যানে আরো কিছু আকর্ষণ
রামসাগর জাতীয় উদ্যানে একটি ছোট চিড়িয়াখানা রয়েছে, যেখানে অজগর, বানর এবং কিছু হরিণ সহ বিভিন্ন প্রাণী রয়েছে। শিশুদের জন্য একটি শিশুপার্কও গড়ে তোলা হয়েছে। পিকনিকের জন্য এখানে ৭টি পিকনিক কর্নার রয়েছে। এছাড়া ২০১০ সালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে রামসাগর গ্রন্থাগার স্থাপন করা হয়।
রামসাগর দীঘি ভ্রমণ: কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাস ও ট্রেনের মাধ্যমে দিনাজপুর যাওয়া সম্ভব। গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে দিনাজপুরগামী বাস সার্ভিস রয়েছে, যেমন নাবিল পরিবহন, এস আর ট্রাভেলস, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, ইত্যাদি। বাসের ভাড়া ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়া কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর ট্রেনের মাধ্যমেও দিনাজপুর যাওয়া যায়। পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন রাতে এবং একতা এক্সপ্রেস সকালে ছেড়ে যায়। ট্রেনের টিকেটের মূল্য ৫৭৫ টাকা থেকে ১,৯৭৮ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
দিনাজপুর থেকে রামসাগর দীঘি পৌঁছাতে অটোরিকশায় প্রায় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট সময় লাগে।
থাকার ব্যবস্থা
রামসাগর দীঘির কাছাকাছি বন বিভাগের বাংলোতে অনুমতি নিয়ে থাকতে পারেন। সাধারণ কক্ষের ভাড়া ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা হতে পারে। এছাড়া দিনাজপুর শহরে পর্যটন মোটেলে থাকা সম্ভব, যেখানে ১৫০০ থেকে ২২০০ টাকায় রাত্রি যাপন করা যায়। সাধারণ হোটেলগুলিতে ২০০ থেকে ১০০০ টাকায় থাকার ব্যবস্থা পাওয়া যাবে।
খাবারের স্থান
দিনাজপুরে কিছু জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ রয়েছে, যেমন রুস্তম, ফাইভ স্টার এবং দিলশাদ হোটেল, যেখানে আপনি গরুর ভুনা মাংস, কাঠি কাবাব এবং পাটিসাপটা উপভোগ করতে পারেন। এছাড়া পুলাহাট বিসিক এলাকায় আবুল হোটেলে ভাত, গরু অথবা মুরগির মাংস, ডাল ও সবজি সহ সুস্বাদু খাবার পাওয়া যাবে।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!