ফরিদপুর জেলার জমিদারদের এক সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। এই জেলার অন্যতম বিখ্যাত জমিদার পরিবার হলো কানাইপুরের শিকদার বংশ। প্রায় ৪০০ বছর আগে শিকদার বংশের জমিদার কুমার নদীর তীরে বসবাসের জন্য একটি জমিদার বাড়ি নির্মাণ করেন, যা বর্তমানে কানাইপুর জমিদার বাড়ি (Kanaipur Zamindar Bari) নামে পরিচিত। তবে স্থানীয়রা একে শিকদার বাড়ি (Shikdar Bari) বলেই চেনেন।
শিকদার বংশের জমিদার ভবতারিনী ছিলেন একজন সুনামধন্য ও সম্পদশালী শাসক। কিন্তু তাঁর একমাত্র পুত্র সতীশ চন্দ্র শিকদার তাঁর মতো দক্ষ শাসক ছিলেন না। পরবর্তীতে সতীশ চন্দ্রের দুই পুত্র সুরেন্দ্র নাথ শিকদার ও নিরদবরন শিকদারের মধ্যে জমিদারি ভাগ হয়ে যায়। বড় ছেলে সুরেন্দ্র নাথ জমিদারির সিংহভাগ পান। সুরেন্দ্র নাথের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্রদের কলকাতায় স্থানান্তর এবং অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সরকার তাদের জমিদারি বাজেয়াপ্ত করে।
উল্লেখযোগ্য যে, ১৮১৮ সালে এই জমিদারদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে হাজী শরীয়তুল্লাহর নেতৃত্বে ফরায়েজি আন্দোলনের সূচনা হয়। পরে তাঁর পুত্র দুদু মিয়া এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে ফরিদপুর যেতে বাস এবং ট্রেনের ব্যবস্থা রয়েছে। গাবতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে কমফোর্ট লাইন, রয়েল পরিবহন, সূর্যমুখী পরিবহণ, গোল্ডেন লাইন, আনন্দ পরিবহণ, সাউথ লাইন ও আজমেরি এন্টারপ্রাইজ বাসগুলো পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুর যায়। বাসে ভাড়া মানভেদে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।
ঢাকা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, মধুমতি এক্সপ্রেস এবং বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন ফরিদপুর পর্যন্ত যায়। ট্রেনে আসনভেদে ভাড়া ৩০৫ থেকে ৬৯৬ টাকা। ফরিদপুর থেকে বাস বা ইজিবাইকে কানাইপুর বাজার পৌঁছে ৭-৮ মিনিট হাঁটলে বা ভ্যানে চড়ে শিকদার বাড়ি যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
ফরিদপুর শহরে বেশ কয়েকটি মানসম্মত আবাসিক হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে হোটেল র্যাফেলস (Hotel Raffles), জে কে ইন্টারন্যাশনাল (JK International), পদ্মা হোটেল (Padma Hotel) এবং হোটেল ঝিলভিউ (Hotel Jhil View) উল্লেখযোগ্য।
ফরিদপুরের আরও যা দেখবেন
ফরিদপুর জেলার অন্যান্য দর্শনীয় এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের বাড়ি
- নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট
- হযরত শাহ ফরিদ মসজিদ
- জগদ্বন্ধু সুন্দর আশ্রম
- আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিল
- বাইশ রশি জমিদার বাড়ি
- মথুরাপুর দেউল
- পাতরাইল মসজিদ।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!