জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার নান্দাইল গ্রামে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক জলাশয় হলো নান্দাইল দিঘী (Nandail Dighi)। এটি জেলার বৃহত্তম দিঘীগুলোর মধ্যে একটি এবং জয়পুরহাট শহর থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। প্রায় ৫৯.৪ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই দিঘীর দৈর্ঘ্য প্রায় ১ কিলোমিটার।
নান্দাইল দিঘীর ইতিহাস
জনশ্রুতি অনুযায়ী, ১৬১০ সালে মৌর্য বংশের সম্রাট নন্দলাল পানির সংকট দূর করার উদ্দেশ্যে এবং কৃষিকাজের সুবিধার্থে এই দিঘী খনন করেছিলেন। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এটি মাত্র এক রাতের মধ্যেই খনন করা হয়েছিল। এক সময় দিঘীর চারপাশ ছিল ঘন বন এবং উঁচু-নিচু টিলা দিয়ে ঘেরা, তবে বর্তমানে সেখানে বসতি গড়ে উঠেছে।
নান্দাইল দিঘীর আকর্ষণ
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর নান্দাইল দিঘী এখন জনপ্রিয় পিকনিক স্পট হিসেবে পরিচিত। শীতকালে এখানে প্রচুর অতিথি পাখির সমাগম হয়, যা পর্যটকদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ সৃষ্টি করে। দিঘীর পাড়েই নান্দাইল কলেজ অবস্থিত, যা এই এলাকার অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
কিভাবে যাবেন?
জয়পুরহাট থেকে নান্দাইল দিঘী
জয়পুরহাট শহর থেকে স্থানীয় যানবাহনে চড়ে ১৯ কিলোমিটার পূর্বে কালাই উপজেলার নান্দাইল গ্রামে সহজেই পৌঁছানো যায়।
ঢাকা থেকে জয়পুরহাট
ঢাকার গাবতলি, মহাখালী, শ্যামলী, কল্যাণপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে শাহ্ ফতেহ আলী পরিবহণ, সেইন্টমার্টিন ট্রাভেলস, শ্যামলী পরিবহন, এন আর ট্রাভেলস, এস আর ট্রাভেলস, হানিফ ইত্যাদি বাস জয়পুরহাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এসি ও নন-এসি বাসের ভাড়া ৫৫০ থেকে ১,৪০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
যদি ট্রেনে যেতে চান, তাহলে কমলাপুর বা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে একতা, চিলাহাটি, দ্রুতযান, কুড়িগ্রাম ও পঞ্চগড় এক্সপ্রেসে জয়পুরহাট পৌঁছানো যায়। ট্রেনের আসনভেদে ভাড়া ৫১০ থেকে ১,৮১০ টাকা হতে পারে।
কোথায় থাকবেন?
জয়পুরহাট শহরে বেশ কয়েকটি ভালো মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে, যেমন:
- হোটেল সৌরভ ইন্টারন্যাশনাল
- হোটেল জাহান আরা ইন্টারন্যাশনাল
- জসিম রেসিডেন্সিয়াল হোটেল
- পৃথিবী হোটেল
- হোটেল বৈশাখী রেসিডেন্সিয়াল
কোথায় খাবেন?
জয়পুরহাটে ভালো মানের বাংলা ও চাইনিজ খাবারের জন্য কিছু জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট হলো:
- ক্যাফে অরেঞ্জ চাইনিজ রেস্টুরেন্ট
- বিসমিল্লাহ হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট
- রুচিটা রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড চাইনিজ
- মিনা রেস্টুরেন্ট
- প্রিন্স রেস্টুরেন্ট
নান্দাইল দিঘী প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ইতিহাস ও অতিথি পাখির সমারোহের জন্য জয়পুরহাটের অন্যতম দর্শনীয় স্থান। তাই প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য এটি হতে পারে একটি চমৎকার গন্তব্য!
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!