রাজা সীতারামের রাজপ্রাসাদ মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলায় অবস্থিত, যা শহর থেকে প্রায় ১০ মাইল দূরে। একসময় এই এলাকাটি ছিল রাজা সীতারামের শাসনকেন্দ্র। তিনি ১৬৫৮ সালে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং উত্তর রাঢ় অঞ্চলের কায়স্থ বংশে জন্ম নেওয়া এই রাজা ছিলেন একজন দক্ষ ও প্রভাবশালী শাসক।
তার পিতা উদয় নারায়ণ তৎকালীন ভূষণা পরগণায় তহশিলদারের দায়িত্ব পালন করতেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি তার কর্তৃত্ব বিস্তার করে রাজসিংহাসনে আসীন হন। আজও মহম্মদপুরে তার সময়কালের নানা স্থাপত্য নিদর্শন দেখা যায়।
রাজপ্রাসাদ এলাকায় এখনো দেখা মেলে বহু ঐতিহাসিক নিদর্শনের—যেমন প্রাচীন দুর্গের ধ্বংসাবশেষ, তিনটি বড় দীঘি (সুখ সাগর, কৃষ্ণ সাগর ও রাম সাগর), দোল মঞ্চ, রাজভবনের ভগ্নাবশেষ, মালখানা, সিংহদরজা, দশভুজা মন্দির, তোষাখানা, কৃষ্ণজীর মন্দির এবং লক্ষ্মী-নারায়ণের অষ্টকোণ মন্দির। অতীতে প্রাসাদের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হতো মধুমতি নদীর শাখা। রাজা সীতারামের বিখ্যাত দুটি কামানের নাম ছিল—কালে খাঁ এবং ঝুম ঝুম খাঁ।
বিশাল আয়তনের রাম সাগর দীঘি প্রায় ১৫০০ ফুট লম্বা ও ৬০০ ফুট চওড়া, যেখানে এখনো নির্মল পানি দেখা যায়। আর কৃষ্ণ সাগর দীঘি অবস্থিত দুর্গের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে, কানাই নগর গ্রামে। ১৮৩৬ সালে এক মহামারীর প্রভাবে প্রাসাদের অনেকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কিভাবে যাবেন?
রাজা সীতারামের রাজপ্রাসাদে পৌঁছাতে হলে প্রথমে আসতে হবে মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার রাজাবাড়ী এলাকায়। ঢাকা থেকে সরাসরি মাগুরার উদ্দেশে সোহাগ, হানিফ, দ্রুতি, ঈগল পরিবহনের এসি/নন-এসি বাসে যাত্রা করতে পারেন, যেখানে ভাড়া পরবে আনুমানিক ৫৮০ থেকে ১৩০০ টাকা পর্যন্ত।
মাগুরা পৌঁছে মহম্মদপুর বাস স্ট্যান্ডে নামতে হবে। সেখান থেকে অল্প দূরত্ব—শুধু আধা কিলোমিটার। এই পথ আপনি রিকশা, ভ্যান অথবা হেঁটে অতিক্রম করতে পারেন।
কোথায় থাকবেন?
মাগুরা শহরে আবাসিক হোটেলের সংখ্যা খুব বেশি নয়। তবে হোটেল চলনতিকা এবং ছায়া বিথী কিছুটা সাশ্রয়ী ও পরিচ্ছন্ন থাকার ব্যবস্থা প্রদান করে। তাছাড়া, জেলা পরিষদের ডাকবাংলো এবং সার্কিট হাউসেও পূর্ব অনুমতি সাপেক্ষে থাকার ব্যবস্থা করা যায়।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!