ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার নাওগাঁও ইউনিয়নে অবস্থিত সন্তোষপুর রাবার বাগান। বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে এখানে প্রাকৃতিক উপায়ে গাছের কষ সংগ্রহ করে রাবার উৎপাদন করা হয়, যা দেশীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি করা হয়। প্রায় ১০৬ একর পাহাড়ি এলাকায় বিস্তৃত এই রাবার বাগান শুধু রাবার উৎপাদনের জন্যই নয়, বরং অনন্য প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্যও পর্যটকদের আকর্ষণ করে। বাগানে শাল, গজারি সহ নানা প্রজাতির বৃক্ষের পাশাপাশি বিরল প্রজাতির প্রায় পাঁচ শতাধিক বানর দেখা যায়, যারা বনের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তোলে।
যাত্রাপথে দর্শনীয় স্থান
সন্তোষপুর রাবার বাগানে যাওয়ার পথে আপনি ঘুরে আসতে পারেন দুলমা গ্রামের দিপ্তি অর্কিডস্ বাগান থেকে। ২৬ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই বাগান সারা বছরই পাখির কলতানে মুখর থাকে। সময় থাকলে কাছাকাছি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার গুপ্তবৃন্দাবন গ্রামে অবস্থিত শতবর্ষী তমাল গাছটিও দেখে আসতে পারেন।
যেভাবে যাবেন
সন্তোষপুর রাবার বাগানে যেতে সবচেয়ে সুবিধাজনক হলো নিজস্ব গাড়ি বা রেন্ট-এ-কার ব্যবহার করা। তবে বাসে যেতে চাইলে ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে ময়মনসিংহগামী বাসে চড়ে জনপ্রতি ৩২০ টাকা ভাড়ায় ফুলবাড়ীয়া বাসস্ট্যান্ডে নামতে হবে। সেখান থেকে অটো বা সিএনজি নিয়ে অর্কিড বাগান কিংবা সরাসরি রাবার বাগানে পৌঁছানো যাবে। সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ৭০-১০০ টাকা হতে পারে।
কোথায় থাকবেন
সাধারণত দিনের বেলায় সন্তোষপুর রাবার বাগান ঘুরে ঢাকায় ফিরে যাওয়া যায়। তবে রাত্রিযাপনের প্রয়োজন হলে ময়মনসিংহ শহরে বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে। হোটেল আমির ইন্টারন্যাশনাল বা হোটেল মুস্তাফিজে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারেন।
কোথায় খাবেন
ভ্রমণের সময় হালকা নাস্তা সাথে নিয়ে গেলে সুবিধা হবে। স্থানীয় দোকান বা খাবার হোটেল থেকেও খেতে পারেন। ময়মনসিংহ শহরে প্রেসক্লাব ক্যান্টিনের মোরগ পোলাও বেশ জনপ্রিয়। এছাড়া হোটেল ধানসিঁড়ি ও হোটেল সারিন্দার খাবারেরও ভালো সুনাম আছে।
ভ্রমণ পরামর্শ
সন্তোষপুর রাবার বাগানে প্রচুর বানর রয়েছে। তারা সাধারণত নিরীহ, তাই ভয় না পেয়ে বরং তাদের জন্য কিছু খাবার রাখতে পারেন। বানরগুলো কখনো কোলে বা কাঁধে উঠে পড়লেও ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
কাছাকাছি আরও যেসব জায়গা ঘুরতে পারেন
- মুক্তাগাছা রাজবাড়ি
- শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন পার্ক
- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বোটানিক্যাল গার্ডেন
সন্তোষপুর রাবার বাগান শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, বরং শান্ত পরিবেশে প্রকৃতির সান্নিধ্য পাওয়ার আদর্শ স্থান। ব্যস্ত জীবনে একটুখানি প্রশান্তি খুঁজে পেতে এই মনোমুগ্ধকর জায়গা ঘুরে আসতে পারেন।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!