সীতাকুণ্ড উপজেলা, চট্টগ্রাম যেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের আধার। পাহাড়, লেক, ঝর্ণা, সমুদ্র সৈকত, এবং প্রাচীন স্থাপনাসহ নানা বৈচিত্র্যে ভরা এই স্থান। এর মধ্যে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত (Bashbaria Sea Beach) এক বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে পর্যটকদের মনে জায়গা করে নিয়েছে। ঝাউগাছের সারি, খোলামেলা পরিবেশ, সবুজ ঘাসে ঢাকা চর, এবং পিকনিক স্পট—সব মিলিয়ে বাঁশবাড়িয়া সৈকত একটি অনন্য সৌন্দর্যের স্থান।
কখন যাবেন?
বাঁশবাড়িয়া সৈকতের মূল আকর্ষণ সূর্যাস্ত। তাই দুপুরের পর সেখানে যাওয়া সবচেয়ে ভালো। সৈকতে একটি লোহার ব্রিজ রয়েছে, যেটি দিয়ে সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যেতে পারবেন। এটি পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে প্রিয়। এছাড়াও স্পিডবোটে করে আশপাশ ঘুরে দেখার সুযোগ রয়েছে। শীতের সকালে গেলে তাজা খেজুর রস খেতে পারবেন। প্রতি লিটার রসের দাম মাত্র ২০ টাকা। তবে সন্ধ্যার পরই ফিরে আসা উচিত, কারণ তখন সিএনজি পেতে সমস্যা হতে পারে। যাওয়ার আগে সিএনজি চলাচলের সময়সূচি জেনে নেওয়া ভালো।
কিভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে বাসে: চট্টগ্রামগামী যেকোনো বাসে উঠে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া বাজারে নামতে হবে। বাসের সুপারভাইজারকে আগে জানিয়ে রাখুন।
ঢাকা থেকে ট্রেনে: ট্রেনে ফেনী নেমে, ফেনীর মহিপাল থেকে বাসে (ভাড়া ৬০-৭০ টাকা, সময় ১ ঘণ্টা) সীতাকুণ্ড যেতে হবে। সেখান থেকে লোকাল সিএনজিতে জনপ্রতি ২০-২৫ টাকায় বাঁশবাড়িয়া পৌঁছানো যাবে।
চট্টগ্রাম শহর থেকে: অলংকার বা এ কে খান থেকে সীতাকুণ্ডের যেকোনো বাস বা টেম্পুতে বাঁশবাড়িয়া বাজারে নামুন। বাস ভাড়া ৩০-৪০ টাকা। বাজার থেকে বাঁশবাড়িয়া ঘাটে সিএনজিতে জনপ্রতি ২০ টাকায় যাওয়া যায়। সিএনজি রিজার্ভ করতে চাইলে ৩০০ টাকা খরচ হবে।
থাকা ও খাওয়া
সীতাকুণ্ডে সাধারণ মানের কিছু হোটেল আছে।
- হোটেল সাইমুন: ৩০০-৭০০ টাকায় রুম।
- হোটেল সৌদিয়া: ডি টি রোডে নতুন চালু হয়েছে। ৮০০-১৬০০ টাকায় রুম পাওয়া যায়। বুকিং: 01991-787979, 01816-518119।
চট্টগ্রামে ভালো মানের থাকার জন্য বিভিন্ন অপশন রয়েছে।
খাবারের জন্য সীতাকুণ্ড বাজারের আল আমীন হোটেল একটি ভালো অপশন। আর চট্টগ্রামে গেলে সব ধরনের খাবারের রেস্টুরেন্ট পাবেন।
ভ্রমণ পরিকল্পনা
সীতাকুণ্ডে দেখার মতো অনেক জায়গা আছে। এর মধ্যে গুলিয়াখালি সী বিচ, সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক, মহামায়া লেক, চন্দ্রনাথ মন্দির, কুমিরা ঘাট, কমলদহ ঝর্ণা, ঝরঝরি ঝর্ণা উল্লেখযোগ্য। সীতাকুণ্ডের পাশের মিরসরাই এবং ভাটিয়ারিতেও দর্শনীয় স্থান রয়েছে। বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত ঘোরার পর আপনার হাতে সময় থাকলে অন্যান্য জায়গাগুলোর ট্যুর প্ল্যান সাজিয়ে নিতে পারেন।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!