সন্দ্বীপ বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে চট্টগ্রাম জেলার মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত একটি দ্বীপ উপজেলা। প্রায় ৪ লাখ জনসংখ্যার এই দ্বীপটি ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৫-১৫ কিলোমিটার প্রশস্ত। সবুজ মাঠ, নদীর বুকে জেগে ওঠা চর এবং সহজ-সরল মানুষের সংস্পর্শ—সব মিলিয়ে এই দ্বীপ অনন্য সৌন্দর্যে ভরা। সন্দ্বীপে ঐতিহ্যবাহী অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। সাগর-নদী পরিবেষ্টিত এই দ্বীপে ভ্রমণ একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা। বিশেষত শীতের সময় ক্যাম্পিংয়ের জন্য সন্দ্বীপের পশ্চিম প্রান্তে (রহমতপুর) নদীর পাড় আদর্শ জায়গা। এখানকার পরিবেশ যেকোনো ভ্রমণপ্রেমীকে মুগ্ধ করবে।
কিভাবে যাবেন সন্দ্বীপ
ঢাকা থেকে কুমিরা
ঢাকার ফকিরাপুল থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো বাসে করে ছোট কুমিরা পর্যন্ত ভাড়া পড়বে ৬৮০ টাকা। বাস সুপারভাইজারকে বলুন সন্দ্বীপ ফেরিঘাটের রাস্তার মাথায় নামিয়ে দিতে। সেখান থেকে ১০-২০ টাকায় টমটম বা রিকশায় কুমিরা-সন্দ্বীপ ফেরিঘাট পৌঁছানো যাবে।
চট্টগ্রাম থেকে কুমিরা
চট্টগ্রামের অলংকার বা এ কে খান মোড় থেকে সেফ লাইন সার্ভিসে ৩০-৩৫ টাকায় কুমিরা ঘাটঘর রোডে পৌঁছানো যায়। আবার নিউ মার্কেট থেকে ৭ নম্বর মেট্রো সার্ভিসে ২৭ টাকায় একই জায়গায় যাওয়া সম্ভব। কুমিরা ঘাটঘর রোড থেকে ১০-২০ টাকায় টমটম বা রিকশায় কুমিরা-সন্দ্বীপ ফেরিঘাট পৌঁছানো যাবে।
কুমিরা ঘাট থেকে সন্দ্বীপ
কুমিরা সন্দ্বীপ ফেরিঘাট থেকে স্পিডবোট বা ছোট লঞ্চে সন্দ্বীপ যাওয়া যায়। স্পিডবোট ভাড়া জনপ্রতি ৩০০ টাকা, এবং গুপ্তছড়া ঘাট (সন্দ্বীপ) পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ৩০ মিনিট। হোটেলে থাকতে চাইলে গুপ্তছড়া ঘাট থেকে সিএনজিতে টাউন কমপ্লেক্সে পৌঁছে যান। ক্যাম্পিংয়ের জন্য রহমতপুরের নদীর পাড়ে যাওয়া সবচেয়ে উপযুক্ত। সন্দ্বীপ ঘাট থেকে সিএনজি ভাড়া ২৫০-৩০০ টাকায় রহমতপুর পৌঁছানো যাবে।
সন্দ্বীপে থাকার ব্যবস্থা
সন্দ্বীপের মূল শহর এলাকা এনাম-নাহার মোড়ে কয়েকটি সাধারণ মানের হোটেল রয়েছে। সেনেরহাট এলাকায় উন্নত মানের একটি হোটেল আছে। পূর্ব অনুমতি নিলে উপজেলা পরিষদের ডাকবাংলোতেও থাকা সম্ভব। তবে ক্যাম্পিং করতে চাইলে সরাসরি রহমতপুরের পশ্চিম প্রান্তে চলে যাওয়া ভালো।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- সন্দ্বীপের বিখ্যাত মিষ্টি অবশ্যই খেয়ে দেখুন। তবে এটি পেতে আপনাকে দ্বীপের দক্ষিণে শিবের হাট যেতে হবে।
- সাইকেল ভাড়া নিয়ে আশপাশ ঘুরে দেখতে পারেন। স্বল্পসময়ে এলাকা ঘুরে দেখার জন্য এটি দারুণ।
- রিকশা বা অন্যান্য বাহনের ভাড়া বেশি মনে হতে পারে, দরদাম করে নেবেন।
- শীতকালে তাজা খেজুরের রসের স্বাদ নেয়ার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। গাছ থেকে সদ্য সংগ্রহ করা রস একদম আলাদা।
- খেজুরের রসের ফিন্নি বা পায়েস খাওয়ার সুযোগ পেলে মিস করবেন না।
- ঘন খেজুরের মিঠাই, নারিকেল, এবং খোলাজা পিঠার স্বাদও নিতে ভুলবেন না।
পরামর্শ
পরিবেশের ক্ষতি করে এমন কাজ থেকে বিরত থাকুন। স্থানীয়দের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করুন। ক্যাম্পিংয়ের পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন এবং আবর্জনা একত্রে ফেলে দিন।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!