ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুরে অবস্থিত ঐতিহাসিক শমসের গাজীর সুড়ঙ্গ পথ। এটি শমসের গাজীর রাজকীয় বাগান বাড়ির পাশেই অবস্থিত। প্রায় ৩৫০ বছর আগে, ত্রিপুরা রাজ্যের রাজা ও ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী নেতা শমসের গাজী এই সুড়ঙ্গ পথ নির্মাণ করেন। তিনি ছিলেন রোশনাবাদ পরগণার কৃষক বিদ্রোহের দূরদর্শী নেতা, যিনি স্থানীয় কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
শমসের গাজীর সংগ্রাম ও অবদান
১৮৪০ সালের দিকে, শমসের গাজী দক্ষিণ কুমিল্লা ও উত্তর নোয়াখালী অঞ্চলে পরাক্রমশালী শাসক হিসেবে পরিচিতি পান। ব্রিটিশদের শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে তিনি গর্জে ওঠেন। দরিদ্র কৃষকদের খাজনা মওকুফ করা থেকে শুরু করে, অনেককে তিনি বিনামূল্যে জমি দান করেন। রাজ্যের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য তিনি ৪.৩৬ একর জমির ওপর দীঘি ও সুড়ঙ্গ পথ তৈরি করেন। বর্তমানে, এই সুড়ঙ্গ পথটি শমসের গাজীর সংগ্রামী জীবনের স্মারক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে শ্যামলী, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন, এস আলম, কেয়া ও সৌদিয়া পরিবহনের বাসে সরাসরি ফেনী যেতে পারেন। এছাড়া মহানগর গোধূলি ও তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনে ফেনী স্টেশনে নামতে পারেন। ফেনী শহর থেকে ছাগলনাইয়া উপজেলার স্থানীয় পরিবহণে সহজেই শমসের গাজীর দীঘির সুড়ঙ্গ পথে পৌঁছানো যায়।
কোথায় থাকবেন
ফেনী শহরে বেশ কয়েকটি মানসম্মত হোটেল রয়েছে, যেমন:
- হোটেল বিলাস
- হোটেল আল করিম
- হোটেল গাজী
- হোটেল মিড নাইট
কোথায় খাবেন
শমসের গাজীর দীঘির আশেপাশে চম্পক বাজারে ছোটখাটো চা-নাস্তার দোকান রয়েছে। তবে, আরও ভালো মানের খাবারের জন্য ফেনী শহরের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় যেতে পারেন।
ফেনীর আরও দর্শনীয় স্থান
শুধু শমসের গাজীর সুড়ঙ্গ পথই নয়, ফেনী জেলায় আরও বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে:
- শমসের গাজীর দীঘি
- শমসের গাজীর বাঁশের কেল্লা
- কৈয়ারা দীঘি
- রাজাঝির দীঘি
- প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি
- আব্দুস সালাম স্মৃতি জাদুঘর
- ফেনী জগন্নাথ মন্দির
ইতিহাস, সংগ্রাম ও স্থাপত্যের মেলবন্ধনে সমৃদ্ধ ফেনী জেলার এই ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো ভ্রমণপিপাসুদের জন্য অনন্য অভিজ্ঞতা এনে দেবে। আপনি যদি ইতিহাসের সাথে প্রকৃতির মায়া অনুভব করতে চান, তাহলে শমসের গাজীর দীঘির সুড়ঙ্গ পথ আপনার জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য হতে পারে!
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!