নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের সুমিলপাড়ায় অবস্থিত আদমজী জুট মিল (Adamjee Jute Mills) একসময় ছিল পূর্ব পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাটকল। এটির খ্যাতি ছিল "প্রাচ্যের ডান্ডি" হিসেবে। ১৯৫০ সালে, তৎকালীন পাকিস্তানের ধনাঢ্য আদমজী পরিবার থেকে তিন ভাই মিলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ২৯৭ একর জমির ওপর আদমজী জুট মিল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫১ সালের ১২ ডিসেম্বর এই মিল বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে ১৭০০ হেসিয়ান ও ১০০০ সেকিং লুম দিয়ে। পরে, আদমজী জুট মিলস লিমিটেড শেয়ার ছেড়ে দিলে এখানে প্রায় ৩,৩০০টি তাঁতকল স্থাপিত হয়।
১৯৭০ সালে পাটজাত পণ্য যেমন চট ও কার্পেটের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার ফলে আদমজী পাটকলের স্বর্ণযুগ শুরু হয়। সেই সময়ে, এই মিলের উৎপাদন থেকে প্রতি বছর ৬০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হত। স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালে এটি জাতীয়করণ করা হয়। আদমজী পাট মিলে উৎপাদিত পাটজাত দ্রব্য, বিশেষ করে চট ও কার্পেট, দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি হত।
কিন্তু নানা কারণে ২০০২ সালে ৩০ জুন আদমজী পাটকলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০০৬ সালের ৬ মার্চ, আদমজী পাটকলের ১নং ও ২নং ইউনিটে আদমজী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল বা আদমজী ইপিজেড গড়ে তোলা হয়। বর্তমানে, এখানে পানি শোধনাগার, বিদ্যুতের জন্য নিজস্ব পাওয়ার প্লান্ট এবং একটি ১১ কেভির সাব স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। আদমজী ইপিজেডের আশেপাশে শীতলক্ষ্যার দুই পাড়ে সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর ও সোনারগাঁয়ে বড় একটি জনগণ গড়ে উঠেছে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে নারায়ণগঞ্জে যাওয়া যায়। গুলিস্তান থেকে দোয়েল, স্বদেশ বা বোরাকের বাসে নারায়ণগঞ্জের ইপিজেড বাস স্ট্যান্ডে নামলেই পায়ে হেঁটে আদমজী এলাকায় পৌঁছাতে পারবেন।
কোথায় খাবেন
আদমজী এলাকার কাছাকাছি সাথি হোটেল, রেসিপি চাইনিজ, প্রিতুলস ফুড জোন এবং বিসমিল্লাহ্ বিরিয়ানি হাউজে খাওয়া যায়।
নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
নারায়ণগঞ্জে অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে পানাম নগর, জিন্দা পার্ক, মুড়াপারা জমিদার বাড়ি, মেরি এন্ডারসন, ফুলের গ্রাম সাবদি, সোনাকান্দা দুর্গ, লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, কাইকারটেক হাট, মায়া দ্বীপ, বাংলার তাজমহল ও গোয়ালদি মসজিদ উল্লেখযোগ্য।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!